যশোর প্রতিনিধিঃ যশোরের শার্শা উপজেলার বেলতলা আম বাজার এখন জমে উঠেছে। প্রতি বছরের ন্যায় চলতি মৌসুমে আমের ব্যাপক বেচাকেনা হলেও প্রতিটা আমের গোডাউনে রাসায়নিক (ভারতীয় স্প্রে) দিয়ে আম পাকানোর মহোৎসব চলছে। কৃত্রিম উপায়ে আমের গায়ে পাকা রং তৈরি করা হচ্ছে। আর এসব রাসায়নিক দিয়ে পাকানো আম খেয়ে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে সাধারণ ভোক্তারা।
এক শ্রেণির অসাধু আম ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় কৃত্রিম উপায়ে আম পাকিয়ে বাজারজাত করছে। এতেকরে আমের প্রকৃত স্বাদ এবং মান নষ্ট হচ্ছে। একই সাথে ভোক্তারা ব্যাপকভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। কেমিক্যাল স্প্রে দিয়ে পাকানো আম খেয়ে প্রকৃত আমের স্বাদ ভুলে গেছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, যশোর বা দক্ষিণাঞ্চলের বাগআঁচড়া বেলতলা বাজারে আমের সুনাম রয়েছে দেশ এবং বিদেশে। কিন্তু কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানোর মহোৎসবের কারণে সেই সুনাম আজ নষ্ট হতে চলেছে। বিদেশে আম রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার এই খাত থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে থাকে। এতে অর্থনৈতিকভাবে দেশ লাভবান হয়। এ বছর বিশমুক্ত আম সরেজমিনে দেখা যায়, জিনারুল বেপারী, জালাল বেপারী ও কিরণ বেপারীসহ অন্যান্য ব্যাপারীরা রাসায়নিক স্প্রে করে আম পাকাচ্ছেন। দুপুরে স্প্রেরে করলেই সকাল হওয়ার সাথে সাথে সেসব আমের গায়ের রং চড়ে পাকা আমে পরিণত হচ্ছে।
এসব অনিয়মের বিষয়ে বেপারী মো. জিনারুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা তো স্প্রে করার জন্যে প্রশাসনকে টাকা দিয়েছি। আর বেপারী জালাল উদ্দিন জানান, সব ঘরেই তো স্প্রে দিয়ে আম পাকাচ্ছে। সবাই যেভাবে পাকাচ্ছে আমিও সেইভাবে আম পাকাচ্ছি।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর (আরএমও) লক্ষিণদার বলেন, আম পাকানোর জন্যে সরকার নির্ধারিত স্প্রেরে ছাড়া অন্য যেসব কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানো হলে তা অবশ্যই মানব দেহের জন্যে চরম ঝুঁকিপূর্ণ।
শার্শা উপজেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টর শেফালী খাতুন বলেন ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন কোন বিষয় সামনে আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ মন্ডল জানান, আমরা সার্বিক বিষয়ে বাজার মনিটরিং করছি। অসাধু ব্যবসায়ীরা যদি বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানোর চেষ্টা করেন তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণ চন্দ্র পাল জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আম বাজারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন অনিয়ম তদারকি করছে। কোনরকম চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দেয়া হবে না। পাশাপাশি কোন অসাধু ব্যবসায়ী যদি আমে বিষাক্ত কেমিক্যাল স্প্রে করে তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.