প্রেস বিজ্ঞপ্তি
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে শিশুদের রাজনৈতিক অপব্যবহার রোধ এবং পথশিশুদের সুরক্ষায় চার দফা নির্বাচনী অঙ্গীকার সব রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছে লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (লিডো), হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (এইচআরডিসি) এবং ঢাকা সেন্টার ফর ডায়ালগ (ডিসিডি)।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত আলোচনাসভায় সংগঠনগুলো জানান— ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় শিশু অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে দৃঢ় নীতিগত অবস্থান নেওয়া জরুরি।
চার দফা দাবি:
•কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি, মিছিল বা প্রচারণায় শিশুদের অংশগ্রহণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা
•নির্বাচনকালীন সময় রাস্তার ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া
•শিশু অধিকার সুরক্ষার অঙ্গীকার সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা
•শিশুদের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধে দলগুলোর প্রকাশ্য প্রতিশ্রুতিপত্রে স্বাক্ষর গ্রহণ
সভায় বক্তারা বলেন, “ভোট দেয় না বলে শিশুরা যেন ভোটের সময়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে না পড়েন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কোনো নির্বাচনই অর্থবহ নয়। আমরা চাই, ২০২৬ সালের নির্বাচন হোক একটি শিশু–বান্ধব নির্বাচন।”
সভাপতির বক্তব্যে লিডোর নির্বাহী পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা জনাব ফরহাদ হোসেন বলেন
আমরা অতীতে বারবার দেখেছি, যারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগে শিশুদের কল্যাণে অসংখ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন—ক্ষমতার আসনে বসেই তারা সেই প্রতিশ্রুতিগুলো ভুলে গেছেন। নির্বাচনের পর শিশুদের জন্য কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আমরা দেখতে পাইনি। এটি শুধু একটি ব্যর্থতা নয়—এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি অন্যায়।
আমরা আশা করি, আগামীতে যারা এই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন, তারা যেন শিশুদের কল্যাণকে মুখের কথা বা ইশতেহারের পাতায় সীমাবদ্ধ না রাখেন। প্রতিটি প্রতিশ্রুতি যেন বাস্তব রূপ পায়—শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, বাসস্থান থেকে শুরু করে একটি সম্মানজনক জীবনের সব অধিকার নিশ্চিত হোক প্রতিটি শিশুর জন্য।
কারণ এই শিশুরাই আমাদের আগামী দিনের বাংলাদেশ। এই শিশুরা শুধু ছিন্নমূল শিশু নয়—এরা আমার, আপনার, আমাদের সবার সন্তান। তাদের জন্য কাজ করা মানে দেশের ভবিষ্যৎকে নিরাপদ করা। আমরা চাই, রাষ্ট্র ও সমাজ মিলেই এমন একটি পরিবেশ তৈরি হোক যেখানে কোনো শিশু অবহেলার শিকার হবে না এবং প্রতিটি শিশু তার স্বপ্ন দেখার ও সেই স্বপ্ন পূরণের অধিকার পাবে।”
৫ম শ্রেণির ছাত্রী ছিন্নমূল শিশু মাহফুজা সুলতানা মুন্নী বলেন, “নির্বাচন এলেই আমাদের দিয়ে ব্যানার ধরা, মিছিল করানো হয়। খাবার–টাকার লোভ দেখানো হয়। দুই পক্ষের মারামারিতে অনেক সময় আমরা পড়ে যাই। আর কোনো শিশুকে যেন এভাবে ব্যবহার করা না হয়।”
পথশিশুসহ দেশের সকল শিশুর নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও আইনি সুরক্ষা রাষ্ট্র–সমাজ–সরকারের যৌথ দায়িত্ব।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে শিশুদের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধে একটি শক্তিশালী অঙ্গীকারই পারে একটি মানবিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এমন টাই প্রত্যাশা করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.