স্টাফ রিপোর্টার
সাংবাদিকতা নিয়ে পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী এবং ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম শনিবার (২২ জুন) এক যৌথ বিবৃতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার লুটপাট নিয়ে দৈনিক মানবজমিন, প্রথম আলোসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ‘অতিরঞ্জিত রিপোর্ট’- আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন। গত শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি। প্রতিবাদের ভাষা দেখলে মনে হচ্ছে, স্বাধীন গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে হুমকি দিয়েছে পুলিশ। পেশাজীবী সাংবাদিকদের অস্তিত্বের স্বার্থে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন- বিএফইউজেসহ সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
তারা বলেন, সাংবাদিকদের দায়িত্ব হচ্ছে ঘটনা তুলে ধরার পাশাপাশি এর পেছনের কারণ অনুসন্ধান করে প্রাপ্ত তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরা। সংবাদপত্র প্রকাশের শুরু থেকেই অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ভয়ভীতিহীনভাবে এ কাজটি করে আসছেন সাংবাদিকগণ। আমরা বিশ্বাস করি, সাংবাদিকরা প্রাপ্ত তথ্য ও গ্রহণযোগ্য প্রমাণ যাছাইবাছাই করে রাষ্ট্রের ক্ষমতাশীল ব্যক্তিবর্গের সম্পদের বিবরণ সম্বলিত প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত এসব প্রতিবেদনের সঙ্গে দ্বিমত থাকলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিবর্গ বা সংগঠনের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশেরও রীতি রয়েছে। তাতেও সন্তুষ্ট না হতে পারলে সংক্ষুব্ধরা প্রেস কাউন্সিলে দ্বারস্থ হওয়ার বিধিবদ্ধ আইন রয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কিন্তু সেই পন্থা অনুসরণ না করে পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন সাংগঠনিকভাবে এবং কোনো কোনো নেতা সংবাদ সম্মেলন করে যেভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, তা স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হুমকী বলে আমরা মনে করি। আমরা পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এ বিবৃতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।
বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতারা মনে করেন, কোনো কর্মকর্তা দুর্নীতি করে থাকলে তা তার ব্যক্তিগত বিষয়। এটা মোটেও কোনো বাহিনীর হতে পারে না।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, সাংবাদিকরা বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে সংবাদ তৈরি করে না। যা ঘটেছে তা অনুসন্ধানের মাধ্যমে বের করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই সংবাদ রচনা করে। বিএফইউজে ও ডিইউজে স্পষ্টভাবে জানাতে চায়, পূর্বসুরীদের মতো শত হুমকি ও ধমকের মুখেও সাংবাদিক সমাজ তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবেন।
নেতারা আশা প্রকাশ করে বলেন, বিএফইউজে ও ডিইউজে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ বিঘ্নিত হয় এমন বিবৃতি ও বক্তব্য দেওয়া থেকে সংশ্লিষ্ট মহল বিরত থাকবেন সেই প্রত্যাশা করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.