মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার, কুমিল্লা
সাংবাদিক দম্পতি সাগর রুনি হত্যা মামলাসহ দেশে সংঘটিত সকল সাংবাদিক হত্যার দ্রুত বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ২১ দফা দাবিতে কুমিল্লায় সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১নভেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের ব্যানারে বিভিন্ন পত্রিকা ও গণমাধ্যমে কর্মরত শতাধিক সাংবাদিকগণ সমবেত হন।
সমাবেশে বক্তারা সবচেয়ে জোরালোভাবে কথা বলেন সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ড এখনও অমীমাংসিত।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৩ বছর ধরে বার বার সময় নেওয়া হয়েছে, তদন্তের নামে প্রহসন হয়েছে। একটি রাষ্ট্রে সাংবাদিকেরা যদি ন্যায়বিচার না পান, তাহলে সাধারণ মানুষ নিরাপদ থাকবে কীভাবে?।
কুমিল্লা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহীন মির্জার সভাপতিত্বে এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও একাত্তর টিভির নিজস্ব সংবাদদাতা কাজী এনামুল হক ফারুক, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও মানব জমিন পত্রিকার ষ্টাফ রিপোর্টার জাহিদ হাসান, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইয়িদ মাহামুদ পারভেজ, দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার ষ্টাফ রিপোর্টার সাদিক মামুন, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক আজকের কুমিল্লার সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ জিতু, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়সের সদস্য শাহআলম সফি, কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক যায়য়ায় দিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আবদুল জলিল, ও সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ, কুমিল্লার সভাপতি ও সিটিভি নিউজ২৪ এর সম্পাদক ওমর ফারুকী তাপস।
বক্তারা আরও বলেন, শুধু সাগর-রুনি নয় মুকুল, দিপক, শিমুল, হুমায়ুন কবীর বাবু থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় নিহত অনেক সাংবাদিকের হত্যা মামলা এখনও বিচারহীন। তাই সাংবাদিক সমাজ বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভাঙতে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা বলেন, দেশে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা হলেও অধিকাংশ গণমাধ্যম মালিক তা বাস্তবায়ন করছে না।মাঠে মাঠে আমরা ঝুঁকি নিই, গুলি-লাঠির সামনে দাঁড়াই, কিন্তু মাস শেষে ন্যায্য বেতন পাই না। ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন হলে সাংবাদিকদের পেশাগত মর্যাদা ও জীবনমান উন্নত হবে। এ ছাড়া দ্রুত দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবি উঠে সমাবেশে। বক্তাদের মতে, ডিজিটাল যুগে সংবাদপেশা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে, কিন্তু সমানতালে বাড়ছে না সুবিধা-সংরক্ষণ।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে নানা গণমাধ্যমে কর্মরত অনেক সাংবাদিককে অযৌক্তিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে আসে।
নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের এক সদস্য বলেন, অনেক মিডিয়া হাউস কাভারেজ বা রাজনৈতিক চাপে সাংবাদিকদের বরখাস্ত করে। এটি শুধু শ্রম অধিকার লঙ্ঘন নয়, এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপরও আঘাত।
তারা বলেন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল এবং সাংবাদিকদের চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।
বক্তারা বলেন, ২১ দফার দাবিগুলো আজ শুধু সাংবাদিক সমাজের দাবি নয়, এটি গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার লড়াই।
বিক্ষোভ সমাবেশে শহরের প্রবীণ সাংবাদিক থেকে শুরু করে তরুণ সাংবাদিক একসঙ্গে দাঁড়ান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.