অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থানে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় আওয়ামী লীগ সরকাররে মসনদ। ৩৬ দিন স্থায়ী গণআন্দোলনরে শেষ মুর্হূতগুলো ছলি নাটকীয় আর ঘটনাবহুল। হাসিনার পতনরে পর শুধু আওয়ামী লীগ সরকার নয়, হারিয়ে গেছে আওয়ামীলীগের মন্ত্রী-এমপিরাও। ৫ আগস্ট দুপুররে পর সরকার পতনের ঘোষণা আসার আগ মুর্হূত র্পযন্ত সরকারি নিয়ন্ত্রন ছিল র্সবত্র।
পদত্যাগ করে দশে ছাড়তে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা সময় পেয়েছিলেন মাত্র ৪৫ মিনিট। এই সময়ের মধ্যেই তাকে তৈরি হয়ে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর র্পযন্ত যেতে হয়। শেখ হাসিনাকে নিয়ে সামরিক বিমান যখন যখন যাত্রা করে তখন সেখান থেকে কয়েক শ গজ দূরে আগারগাঁওয়ে লাখো মানুষরে স্রোত। কিছু সময়রে মধ্যেই গণভবন, সংসদ ভবন এলাকা দখলে নেয় আন্দোলনে বিজয়ী জনতা।
এরপর থেকে লাপাত্তা চৌদ্দগ্রামের বহু অপকর্মের মূলহোতা সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হক।
এমন কোন অত্যাচার নেই যা মুজিবুল হক বা তার বাহিনী করেনি।
জায়গা দখল, বাড়ি দখল, সরকারি জমি দখল, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আধ্যিপত্য বিস্তার, নীরিহ জনগণকে মামলা-হামলাসহ একচেটিয়া জিম্মি করে চৌদ্দগ্রামবাসীকে।
মুজিবুল হক- কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। চারবারের এ সংসদ সদস্য ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।
বর্তমানে মুজিবুল হক কোথায় আছেন-এমন তথ্য কারো কাছেই নেই।
নিজেকে কৃষকের সন্তান পরিচয়দানকারী মোঃ মুজিবুল হক এমন কোন অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। শূন্য থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এই মুজিবুল হক মুজিবের সম্পদের বিবরণ শুনলে যে কারোও চোখ কপালে উঠবে।
তার সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদকে একাধিক অভিযোগ হলেও মুজিবুল হকের প্রভাব ও ক্ষমতার কারণে আলোর মুখ দেখেনি এসকল তদন্ত।
চৌদ্দগ্রামে এমন কোন অপকর্ম নেই যা তিনি করেনি। তার হামলা-মামলার অত্যাচার থেকে রক্ষা পায়নি নিজ দলের নেতা-কর্মীরাও।
অনুসন্ধানে জানা যায়- তার আত্নীয়-স্বজন যারা দিনে এনে দিনে খেত তারাও এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। গ্রামের বাড়ি চৌদ্দগ্রামের বসুয়ারাতে সকলের এখন তিন তলা বাড়ি। কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেঞ্চ।
মুজিবুল হক এমপির ভাতিজা তোফায়েল আহাম্মেদ নিজেকে চৌদ্দগ্রামের অঘোষিত এমপি দাবি করেন। তার প্রভাব এতো বেশি যে- অনেক সময় তিনি দলের ত্যাগী নেতাদের পাকিস্থান পাঠানোর হুমকি দিতেন।
চৌদ্দগ্রামের বড় বড় প্রকল্পের যত কাজ সবকিছুই তোফায়েল নিয়ন্ত্রন করতেন। সরকারি পরিত্যক্ত বিভিন্ন স্থাপনা, মানুষের জায়গা দখলসহ হুমকি-ধমকি, মামলার আসামি করাসহ একটি দানবীয় জলুম চালিয়েছেন সাধারণ মানুষের উপর।
এদের আয়ের উৎস কি? জানা নেই কারোও।
মুজিবুল হকের কুমিল্লা নজরুল এভিনিউতে ডুপ্লেক্স বাড়ি, বাণিজ্যিক ভবন, গ্রামে আলিশান বাড়ি এবং কুমিল্লায় রয়েছে বেশকিছু ফ্ল্যাট।
ঢাকায় রয়েছে বেশকিছু বাড়ি ও অসংখ্য ফ্ল্যাট। যে বাসায় মুজিবুল হক থাকতেন সেটাও প্রায় ৮০০০ স্কয়ার ফিটের।
চান্দিনায় শ্বশুর বাড়ির এলাকায় ক্রয় করেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
তার স্ত্রী হনুফা আক্তার রিক্তার নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। বড় কোম্পানির ডিরেক্টরশীপ এ যেন আলাদিনের প্রদীপকেও হার মানায়। মেঘনা এলাকায় রয়েছে বিঘা বিঘা জায়গা, সিএনজি ফিলিং ষ্টেশনসহ রয়েছে দেশ বিদেশে শত কোটি টাকার ব্যবসা বাণিজ্য।
এ মহুত্¦ে মুজিবুল ও তার স্ত্রী হনুফা আক্তার রিক্তার ঢাকায় আত্নগোপনে রয়েছে বলে জানা যায়। তার মোবাইলে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
একসময় মুজিবুল হক ছিলেন আয়কর আইনজীবি। তাই চুরি কিভাবে করতে হয় তা তিনি ভালো ভাবেই জানতেন!
রেলপথমন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর রেলের খালাসী পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠে মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে।
ডেমো ট্রেন ক্রয়ে রয়েছে তার বিরুদ্ধে বিশাল অভিযোগ। এসকল বিষয় তৎকালীন জাতীয় পত্র-পত্রিকায় ব্যাপক আকারে প্রকাশিত হয়।
পূর্বাচলে রয়েছে তার ১০কাঠা জমি। গড়ে তোলেছেন বাংলো বাড়ি।
কুমিল্লায় রয়েছে ‘আইরিশ হিল’ নামক অনেক বড় রেষ্টুরেন্ট। মিঞাবাজারে রয়েছে কাকড়ি টাওয়ার।
যারা তার এই সকল বিষয়ে যারাই মুখ খুলেছেন তারাই হামলা মামলা জেল-জলুমের শিকার হয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক আকতার হোসেন সাদ্দামসহ ৪সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ২টি চাঁদাবাজি, মার্ডার মামলা ও রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার আসামি করা হয়। কারা নির্যাতিত করা হয় সাংবাদিক আক্তার হোসেন সাদ্দামকে। এ বিষয়ে সাংবাদিক আক্তার হোসেন সাদ্দামের কথা বলেলে তিনি এ প্রতিবেদকে বলেন- রেলওয়ে দুর্নীতি ও মুজিবুল হকের দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তিনি তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি লোকমান হোসেন রুবেল ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌফিকুল ইসলামকে সবুজকে বাদী করে দুই থানায় দুটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। যার পরিমাণ ৭০লাখ টাকা।
কুমিল্লা বাসে পেট্রোল বোমা হামলা অর্থ্যাৎ ৮ মার্ডার মামলায় আসামী করেন। রাষ্ট্রদ্রোহীসহ সর্বমোট ১১টি মামলায় আমাকে আসামী করা হয়েছে।
আইনগত প্রতিকার চান কিনা এমন প্রশ্নে আক্তার হোসেন সাদ্দাম বলেন- জি অবশ্যই চাই। আমি আমার আইনজীবির সাথে কথা বলছি। শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.