২৯ অগাস্ট সন্ধ্যায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা ও ওশেনিয়া বিভাগের প্রধান ইয়াং থাও মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভানের চীন সফর নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিং আয়োজন করেন।
ইয়াং থাও বলেন, মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত, জ্যাক সালিভান চীন সফর করেছেন। এসময় নতুন দফা চীন-মার্কিন কৌশলগত বিনিময় আয়োজন করা হয়েছে। এটি হল মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার আট বছর পর পুণরায় চীন সফর এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে সালিভানের প্রথম চীন সফর। যা চীন-মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধানদের মতৈক্য বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও উপদেষ্টা সালিভান সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন যে, প্রথমত, দুটি প্রধান দেশ, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক মোকাবিলা করার সময়, প্রথম অগ্রাধিকার হল, একটি সঠিক কৌশলগত বোঝাপড়া স্থাপন করা যা চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী নাকি অংশীদার’- এই সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। চীনের বৈদেশিক নীতি উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ, এটি উচ্চ মাত্রার ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। চীন নিজের নিজস্ব উন্নয়ন সাধনের সময় শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথ অনুসরণ করে, চীন অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে একত্রে উন্নয়ন করতে এবং মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তুলতে একসঙ্গে কাজ করতে চায়।
দ্বিতীয়ত, দুটি প্রধান দেশ হিসেবে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস, তাদের জনগণ এবং বিশ্বের প্রতি দায়বদ্ধ হওয়া উচিত এবং বিশ্ব শান্তির একটি স্থিতিশীল উৎস এবং অভিন্ন উন্নয়নের চালক হওয়া উচিত।
তৃতীয়ত, আশা করা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে কাজ করবে, চীন ও চীনের উন্নয়নকে ইতিবাচক এবং যুক্তিসঙ্গতভাবে দেখবে, একে অপরের উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জের পরিবর্তে সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করবে। পৃথিবীতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ভিন্ন সভ্যতা, ভিন্ন ব্যবস্থা এবং ভিন্ন পথের দুটি দেশ হিসেবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সাধারণ উন্নয়নের উপায় অন্বেষণে কাজ করবে।
তার আগে মঙ্গলবার ও বুধবার, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই উপদেষ্টা সালিভানের সাথে কৌশলগত বিনিময় করেছেন। দুই পক্ষ যথাক্রমে ছয় দফায় ১১ ঘন্টা সময় দিয়ে চীন-মার্কিন সম্পর্ক, স্পর্শকাতর বিষয় এবং গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে আলোচনা করেছে।
মুখপাত্র ইয়াং থাও আরো বলেন, এই কৌশলগত যোগাযোগের সময়, উভয় পক্ষ সান ফ্রান্সিসকো বৈঠকের পর থেকে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য বাস্তবায়নে অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছে এবং একে এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষ কিছু নির্দিষ্ট ঐকমত্যেও পৌঁছেছে, যার মধ্যে রয়েছে: সব পর্যায়ে উচ্চ-স্তরের আদান-প্রদান এবং যোগাযোগ বজায় রাখা, মাদক নিয়ন্ত্রণ, আইন প্রয়োগ, অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাবাসন, এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা এবং সেনাবাহিনীর নেতাদের সাথে ভিডিও কল করা।
চীন-মার্কিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা করা, মধ্যপ্রাচ্য, ইউক্রেন ও কোরীয় উপদ্বীপের মতো আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ইস্যুতে যোগাযোগ বজায় রাখা। এই নতুন অর্জনগুলো হস্তক্ষেপ দূর করা, "সান ফ্রান্সিসকো ভিশনের" বাধাগুলো কাটিয়ে ওঠা এবং যৌথভাবে চীন-মার্কিন সম্পর্কের স্থিতিশীল, স্বাস্থ্যকর ও টেকসই উন্নয়নের জন্য উভয় পক্ষকে একসাথে কাজ করতে সহায়তা করবে।
সূত্র: শুয়েই ফেই ফেই, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2024 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.