সিয়োং আন নতুন এরিয়ার স্টেশনের ওয়েটিং হলে, একটি ব্রোঞ্জের চাকা যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। চাকার নিচে এর নাম খোদাই করা হয়েছে- ‘মিলেনিয়াম সার্কেল বা সহস্রাব্দের চাকা’।
‘সহস্রাব্দের চাকা’ হাজার বছরের স্কেলে পরিমাপ করা হয় এবং শুরুর তারিখ ২০১৭ সালের পহেলা এপ্রিল সেট করা হয়। দিনটি ছিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাষ্ট্রীয় পরিষদের সিয়োংআন নিউ এরিয়ার প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিন।
আজ সিয়োং আন মোট ৭ বছর পার করেছে। হাজার বছরের তুলনায় সাত বছর খুবই অল্প সময় এবং সিয়োং আনের জন্য সাত বছরের মধ্যে সেখানে ভূমি থেকে মানচিত্র পর্যন্ত, তারপর এক শহরে একটি ঐতিহাসিক রূপান্তর হয়েছে।
হ্যবেই সিয়োং আন নিউ এরিয়ার প্রতিষ্ঠা একটি সহস্রাব্দ পরিকল্পনা এবং জাতীয় ঘটনা। সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মোতায়েন করেছেন এবং পদোন্নতি করেছেন, উন্নয়নের পরিকল্পনা করতে তিনবার সিয়োং আনে গিয়েছেন।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সি চিন পিং চোং নানহাই থেকে রওনা দিয়ে গাড়ি করে হ্যবেই প্রদেশের আনসিন জেলায় পরিকল্পিত নতুন এলাকার কেন্দ্রীয় অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন। তখন সিয়োং আন মাত্র কেন্দ্রীয় কমিটির অভ্যন্তরীণ নথিতে একটি নতুন শব্দ ছিলো। পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সাধারণ সম্পাদক সি জোর দিয়ে বলেন যে, সিয়োং আন নিউ এরিয়ার পরিকল্পনা ও নির্মাণ একটি মহান ঐতিহাসিক তাৎপর্যের একটি কৌশলগত বাছাই, এটি বেইজিং, থিয়েনচিন ও হ্যবেইয়ের সমন্বিত উন্নয়নের একটি ঐতিহাসিক প্রকল্প।
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে সাধারণ সম্পাদক দ্বিতীয়বার সিয়োং আন নিউ এরিয়ায় গিয়েছেন। তিনি বলেন, পরিকল্পনা থাকলে সিয়োং আন নকশা থেকে বাস্তব নির্মাণের পর্যায়ে রূপান্তর করা সম্ভব হবে।
তৃতীয়বার ২০২৫ সালের মে মাসে ফুশিং বুলেট ট্রেন দিয়ে ৫০ মিনিট পর সাধারণ সম্পাদক সি বেইজিং থেকে রওনা হয়ে সিয়োং আন নিউ এরিয়ার হাই স্পিড রেল স্টেশন, কমিউনিটি এবং নির্মাণ সাইট পরিদর্শন করেছেন। তাছাড়া, তার সভাপতিত্বে ‘উচ্চ মানদণ্ড ও মান দিয়ে সিয়োং আন নিউ এরিয়ার নির্মাণ কাজ এগিয়ে নেওয়া’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই আত্মবিশ্বাস শক্তিশালী করতে হবে, সংকল্প ধরে রাখতে হবে, অবিচলভাবে কাজ করতে হবে, ভাল করতে হবে এবং বিভিন্ন কাজে ক্রমাগত নতুন অগ্রগতি প্রচার করতে হবে। উচ্চ মানের নগর উন্নয়নের একটি চিত্র থেকে উচ্চ মানের শহরের বাস্তব উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতেই হবে।’
সিয়োং আনের নির্মাণকারীদেরকে সি চিন পিং বলেন, ‘এটি এক শতাব্দীর ঐতিহাসিক সুযোগ। আপনারা গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করছেন, তাই কঠোর পরিশ্রম করুন!’ সিয়োং আনের ক্যাডার ও জনসাধারণকে তিনি বলেন, ‘সিয়োং আন নিউ এরিয়া নির্মাণ একটি সহস্রাব্দের পরিকল্পনা এবং এটি অবশ্যই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা উচিত। আমরা উদ্বিগ্ন হতে পারি না বা বসে থাকতে পারি না। আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
সিনোচেম গ্রুপের সদর দপ্তরের নির্মাণ কাজ আগামী বছরের জুন মাসে শেষ হবে এবং তখন এই ভবনটি সিয়োং আন নিউ এরিয়ার সর্বোচ্চ ল্যান্ডস্কেপ স্থাপত্য হবে। সেখানে এক হাজারেরও বেশি কর্মীর কাজের সুযোগ রয়েছে। অধিক থেকে অধিকতর কেন্দ্রীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সদরদপ্তর এবং তাদের অধীনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর কোম্পানিগুলো সিয়োং আনে প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেখানকার শিল্প আরো ভালো দিকে উন্নত করা সম্ভব হবে।
সাধারণ সম্পাদক সি বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য শুধু একটি সুন্দর ও নতুন শহর নির্মাণ করা নয়, বরং- নতুন শহর নির্মাণের উদ্দেশ্য হলো জনগণকে সুন্দর জীবন দেওয়া।’
সিয়োং আন নিউ এরিয়ার ক্যাডার ও জনগণের স্বার্থজড়িত নানা সমস্যার সমাধান করা এবং তাদেরকে নিউ এরিয়ার উন্নয়ন থেকে বাস্তব কল্যাণ ও সুখ দেওয়া উচিৎ। এটিও আমাদের প্রজন্মের চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেওয়া ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার বলে মনে করেন সাধারণ সম্পাদক জনাব সি।
সূত্র : চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.