মোঃ রফিকুল ইসলাম রাফিক, গাইবান্ধা
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক ধমক ও তাড়া খেয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে না পেরে অবশেষে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব হাতিয়া গ্রামে। এই গ্রামের হায়দার আলীর অনার্স পাশ প্রেমিক কর্তৃক ধর্ষিতা কন্যা হোসনে আরা আক্তার নিজের ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
অভিযোগে প্রকাশ, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব হাতিয়া গ্রামের মোঃ হায়দার আলীর কন্যা সম্প্রতি অনার্স প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্রী তিন বছর থেকে একই ইউনিয়নের পশ্চিম রাজিবপুর গ্রামের প্রাক্তন মেম্বার মফিজল হকের পুত্র হাসান মাহমুদ সিদ্দিক ওরফে নয়ন মিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সুবাদে নয়ন মিয়া প্রায় প্রায়ই ছল ছুতোয় হোসনে আরার সাথে সাক্ষাত করে আসছিল।
এমতাবস্থায় নয়ন মিয়া হোসনে আরাকে বিভিন্ন সময়ে আবাসিক হোটেল সহ বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যায় এবং বিয়ের প্রলোভন দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। শুধু তাই নয়, নয়ন মিয়া বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তার নরম শরীর উপভোগ করে আসার এক পর্যায়ে পুনরায় গত ১১/১০/২০২৪ ইং তারিখে দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে হোসনে আরার বাড়িতে আসে।
এ সময় হোসনে আরার পিতা-মাতার অনুপস্থিতির সুযোগে প্রেমালাপের এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। তবে হোসনে আরা বিয়ের ব্যাপারে কথা বললে খুব শীঘ্রই সে বিয়ে করবে এবং নয়ন মিয়া বিয়ে হোসনে আরাকেই বিয়ে করবে বলে আশ্বস্ত করতে থাকে।
এদিকে, সহজ সরল হোসনে আরা তার চাতুরিপনা বুঝতে না পেরে পুনরায় গত ৩/১১/২০২৪ ইং তারিখে দুপুর আনুমানিক ১২ টার দিকে নয়ন মিয়া তার বাড়িতে এসে একই কায়দায় ধর্ষণ করে। কিন্তু নয়ন মিয়া পুনরায় একই কায়দায় খুব শীঘ্রই বিয়ে করবে বলে কৌশলে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় হোসনে আরা তার চালাকি বুঝতে পেরে ডাক চিৎকার দিলে আলেকজান, মঞ্জুয়ারা, আমজাদ, রুহুল আমিন ও আলমগীর সহ নিজের বাড়ির সহ আসপাশের লোকজন এসে ঘটনা প্রত্যক্ষ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে নয়ন মিয়ার বাড়ির লোকজন এসে হোসনে আরার সাথে বিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে কৌশলে নয়ন মিয়াকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
নির্ভরশীল সুত্র জানায়, নয়ন মিয়ার বাড়ির লোকজন তাল বাহানা করে সময় ক্ষেপণ করতে থাকলে অবশেষে নিরুপায় হয়ে হোসনে আরা বাদি হয়ে প্রতারক নয়ন মিয়া ও তার সহযোগী শাকিল, আশরাফুল ও রানু মিয়াকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করার জন্য অভিযোগ দাখিল করেন। বিষয়টি সুন্দরগঞ্জ থানায় কর্মরত এসআই রেজাউল করিম সরেজমিনে তদন্ত করে মামলা দায়ের না করে রহস্যজনক কারণে নীরবতা পালন করতে থাকেন। অবশেষে হোসনে আরা তার মামা আলমগীর সহ ৫/৬ জন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাথে সাক্ষাত করেন। এ সময় সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা দায়ের না করে তাদেরকে পুলিশী কায়দায় ধমক দিয়ে থানা থেকে তাড়িয়ে দেন।
এদিকে, হোসনে আরা স্থানীয় সহ বিভিন্ন মিয়া মাতব্বরদের কাছে ধর্না দিয়েও মামলা দায়ের না হওয়ায় ও বিয়ের পিঁড়িতে বসতে না পেরে তার অর্ধ পাগল পিতার সংসার থেকে চির বিদায় নিতে অদ্য ২৮/১১/২০২৪ ইং সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে নিজ শয়ন ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে বিকাল ৩টার দিকে মোবাইলে কথা হয়। তিনি জানান, তার দেয়া অভিযোগটি এসআই রেজাউল করিম তদন্ত করেন। বিষয়টি প্রেম ঘটিত হওয়ায় মামলা দায়ের করিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.