মোহাম্মদ ছানা উল্যাহ, নোয়াখালী
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ২নং চরবাটা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ চরমজিদ গ্রামের আব্দুল হাই খোকন বেপারি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে দাপন করার ২মাস পর আদালতের আদেশে গৃহবধূ শাহেনা আক্তার (৩৪) এর লাশ উত্তোলন করেছে সিআইডি।
শনিবার(১৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে সুবর্ণচর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অশোক বিক্রম চাকমার উপস্থিতে চরজব্বর থানা পুলিশের সহযোগীতায় গৃহবধূর স্বামীর বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়।
জানা যায়, মৃত গৃহবধূ শাহেনা আক্তার এর পিতা আবুল হাসেম তার মেয়ের মৃত্যুকে অসাভাবিক মৃত্যুর জন্য দায়ী করে শাহেনার স্বামী বেলাল হোসেন(৩২) দেবর মাঈন উদ্দিন(১৯), মনোয়ারা বেগম(৩৫),আজাদ হোসেন(৩৮) ও শাশুড়ি মোকছেদা খাতুন(৬০) এদের বিরুদ্ধে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -২ এর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে আদালত লাশ উত্তোলন করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলায় বাদী আবুল হোসেন জানায়, ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাত ৩টার সময় আমার মেয়ে শাহেনা আক্তার (৩৭) স্বামীর বাড়িতে মারা যাওয়ার সংবাদ পেয়ে আমরা ছুটে যায়। পরে মেয়ের লাশ তার স্বামীর বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাপন করা হয়। এ মৃত্যু আমাদের কাছে স্বাভাবিক মনে হয়নি বলে অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে সত্য উদঘাটনের জন্য মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও শাহেনার শশুরবাড়ীর লোকজনের বিরুদ্ধে, যৌতুক, চিকিৎসায় অবহেলা ও পারিবারিক অশান্তির বিষয়ে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
গৃহবধূর স্বামী বেলাল হোসেন জানান, ২০১৯সালে আমার সাথে শাহেনার আক্তার এর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আমরা সুখী ছিলাম। আমার প্রথম ছেলে শিশুটি মারা যায়, দ্বিতীয় কন্যা শিশুর বয়স ৪ বছর। বিয়ের পর থেকে মারা যাওয়া আগপর্যন্ত কোন অশান্তি ছিলো না আমাদের সংসারে। আমরা ভালোবাসা করে বিয়ে করেছি। সাংসারিক জীবনে কখনো আমাদের নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-ঝাটি ও সমস্যা হয়নি। মৃত্যুর পূর্বে আমার স্ত্রী ৯ মাসের গর্ভবতী ছিল। হঠাৎ ১৫ ডিসেম্বর রাতে সে বুকে ব্যথা অনুভব করে। পরে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। তার অবস্থা অবনতির দিকে গেলে তার মা-বাবাকে খবর দেওয়া হয়। তাদের উপস্থিতিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল নেওয়ার প্রস্তুতিকালে সে মৃত্যুবরন করে। মৃত্যুর পর উভয় পরিবার একত্রিত হয়ে তার দাপন কাজ সম্পন্ন হয়। তখন আমার শশুরপক্ষ কোন অভিযোগ করেনি।
এছাড়াও উভয় পরিবার একসাথ হয়ে পারিবারিক দোয়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রীর পূর্বের স্বামীর দেওয়া জমির দখল ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে কিছু দিন যাবৎ আমার শশুর পক্ষ জামলা করছে। জমির ভাগভাটোয়াকে কেন্দ্র করে আমাকে ও আমার পরিবারকে হয়রানি করতে এ মামলা করেছে আমার শশুর।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে তাদের ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসী একটি মানববন্ধন করেন।
ঘনটায় তদন্তকারী কর্মকর্তা, নোয়াখালী সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, মামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে লাশ ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়ে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করলে অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.