ঢাকা ০৫:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo রূপসায় ওয়ার্ড কৃষক দলের আনন্দ মিছিল ও পথসভা Logo লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রেপ্তার, হাতীবান্ধায় আটক-২ Logo রূপসায় রবীন্দ্র স্মৃতি সংগ্রহশালায় দ্বিতীয় দিনে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান Logo আমাদের উচিৎ বন্ধুত্ব লালন করা : যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সি চিন পিং Logo চীনের অভূতপূর্ব সাফল্য বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করেছে :‘ওয়াকিং ইন চায়না’ ইভেন্ট Logo সিএমজি রাশিয়া-চীনের মধ্যে সাংস্কৃতিক সেতু তৈরি করেছে Logo মস্কোর ক্রেমলিনে সি-পুতিন বৈঠক Logo মায়ানমারে পাচারকালে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ ৬ পাচারকারী আটক Logo পলাশবাড়ী এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ Logo কুমিল্লায় জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক সহযোগী সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত

অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ কন্যা সন্তানের

কাসেম-সাথী দম্পতির কষ্টের গল্পে সাহসের যাত্রা

তারিকুল ইসলাম, লালমনিরহাট

অভাবের কাছে ভালোবাসা হার মানেনি কম উচ্চতার সাজেদা বেগম সাথীর সংসারে। স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে দিন কাটছে এ দম্পতির। ভিক্ষাবৃত্তি দিয়ে সংসার চললেও অভাবের এ সংসারে ছোট কন্যা সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত তারা। লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মন্ডলটারী এলাকায় বসবাস করেন কাসেম আলী ও সাজেদা বেগম সাথী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ৩ ফুট ৬৬ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী সাজেদা বেগম আর তার স্বামী কাসেম আলীর উচ্চতা সাড়ে ৩ ফুট। ৬ বছর আগে বিয়ে হয় কাসেম ও সাথী দম্পতির। তারা দুজনেই প্রতিবন্ধী । ওই দম্পতি বেশ কয়েকবছর থেকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্ঠনির আওতায় পাচ্ছেন প্রতিবন্ধী ভাতা। ২ শতক খাস জমিতে অন্য একজন দানশীল ব্যাক্তির সহায়তায় ঘর করে থাকছেন ওই দম্পতি।

ওই দম্পতি শারিরিক অক্ষমতা থাকার কারনে কেউ তাদের চাকুরি কিংবা কোনো কাজ দেননা। তাই তারা করেন ভিক্ষাবৃত্তি। অভাবের কাছে ভালোবাসা হার মানেনি কম উচ্চতার সাথী বেগমের সংসারে। প্রতিবন্ধী কম উচ্চতার ওই দম্পতির ঘরে রয়েছে ৪ বছর বয়সী এক ফুটফুটে কণ্যা সন্তান। ওই দম্পতির কন্যা সন্তানের নাম কেয়া মনি। স্থানীয় একটি স্কুলে শিশু শ্রেনীতে পড়ে। বড় হয়ে ডাক্তার হবে আর বাবা মায়ের চিকিৎসা করবে এমনটাই স্বপ্ন ওই শিশুটির।

৩ বছর থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করলেও সরকারের নজরে আসেনি এই দম্পতি। অথচ প্রতি বছরেই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করছে সরকার।

সাজেদা বেগম সাথী বলেন, আমরা দুজনেই প্রতিবন্ধী। দুজনে মিলে প্রতিদিন ভিক্ষাবৃত্তি করে আয় হয় ৪০০ টাকা। অভাব অনটনের সংসারে এই অর্থ দিয়ে দু’বেলা ডাল ভাতের ব্যাবস্থা করাও কষ্টের। আমাদের সন্তানকে পড়াশুনা করাতে চাই। তাই সমাজের উচ্চবিত্ত ও সরকারের কাছে সহযোগীতা চাই।

কাসেম আলী বলেন,আমি আমার পরিবারকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু আমিতো অক্ষম। কাজ করতে পারি না। আমরা দুজনে ঠিকমতো হাটতে পারি না। মেয়েটার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি চিন্তিত, কিভাবে তার পড়ালোখা করাবো? সরকার এক প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া কিছু দেয়নি।
৬ বছর আগে বিয়ে হয় ৫৭ বছর বয়সী কাসেম আলীর সাথে ২০ বছর বয়সী সাথী বেগমের। বর্তমানে কাসেম আলীর বয়স ৬২ বছর ও সাথী বেগমের বয়স ২৭ বছর।
ওই এলাকার আমিনুর ইসলাম (৫৫) বলেন, ওরা দুজনেই প্রতিবন্ধী। ওরা খুবই কষ্ট করে চলে। সমাজের দানশীল ব্যাক্তি ও সরকারের কাছে ওই পরিবারের জন্য সহযোগীতা চাই।
একই এলাকার রেহানা পারভীন (৪০) বলেন, ওনাদের ঘরে একটা কন্যা সন্তান আছে। মেয়েটার যে কি ভবিষ্যৎ হবে জানিনা। সরকার এদের সহযোগীতা করলে মেয়েটার একটা ভবিষ্যৎ হবে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোছাঃ লায়লা আক্তার বলেন, বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ভিক্ষুক পুনর্বাসনের আওতায় তাদের নিয়ে আসা হবে।

বয়স কিংবা শরিরিক উচ্চতার কাছে হার মানেনি কাসেম ও সাথী দম্পতির ভালোবাসা। সকলের সহযোগীতায় নতুন দ্বার উন্মোচন হবে আর ভবিষ্যৎ উজ্জল হবে তাদের কণ্যা সন্তানের এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপসায় ওয়ার্ড কৃষক দলের আনন্দ মিছিল ও পথসভা

SBN

SBN

অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ কন্যা সন্তানের

কাসেম-সাথী দম্পতির কষ্টের গল্পে সাহসের যাত্রা

আপডেট সময় ১১:১৯:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

তারিকুল ইসলাম, লালমনিরহাট

অভাবের কাছে ভালোবাসা হার মানেনি কম উচ্চতার সাজেদা বেগম সাথীর সংসারে। স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে দিন কাটছে এ দম্পতির। ভিক্ষাবৃত্তি দিয়ে সংসার চললেও অভাবের এ সংসারে ছোট কন্যা সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত তারা। লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মন্ডলটারী এলাকায় বসবাস করেন কাসেম আলী ও সাজেদা বেগম সাথী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ৩ ফুট ৬৬ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী সাজেদা বেগম আর তার স্বামী কাসেম আলীর উচ্চতা সাড়ে ৩ ফুট। ৬ বছর আগে বিয়ে হয় কাসেম ও সাথী দম্পতির। তারা দুজনেই প্রতিবন্ধী । ওই দম্পতি বেশ কয়েকবছর থেকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্ঠনির আওতায় পাচ্ছেন প্রতিবন্ধী ভাতা। ২ শতক খাস জমিতে অন্য একজন দানশীল ব্যাক্তির সহায়তায় ঘর করে থাকছেন ওই দম্পতি।

ওই দম্পতি শারিরিক অক্ষমতা থাকার কারনে কেউ তাদের চাকুরি কিংবা কোনো কাজ দেননা। তাই তারা করেন ভিক্ষাবৃত্তি। অভাবের কাছে ভালোবাসা হার মানেনি কম উচ্চতার সাথী বেগমের সংসারে। প্রতিবন্ধী কম উচ্চতার ওই দম্পতির ঘরে রয়েছে ৪ বছর বয়সী এক ফুটফুটে কণ্যা সন্তান। ওই দম্পতির কন্যা সন্তানের নাম কেয়া মনি। স্থানীয় একটি স্কুলে শিশু শ্রেনীতে পড়ে। বড় হয়ে ডাক্তার হবে আর বাবা মায়ের চিকিৎসা করবে এমনটাই স্বপ্ন ওই শিশুটির।

৩ বছর থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করলেও সরকারের নজরে আসেনি এই দম্পতি। অথচ প্রতি বছরেই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করছে সরকার।

সাজেদা বেগম সাথী বলেন, আমরা দুজনেই প্রতিবন্ধী। দুজনে মিলে প্রতিদিন ভিক্ষাবৃত্তি করে আয় হয় ৪০০ টাকা। অভাব অনটনের সংসারে এই অর্থ দিয়ে দু’বেলা ডাল ভাতের ব্যাবস্থা করাও কষ্টের। আমাদের সন্তানকে পড়াশুনা করাতে চাই। তাই সমাজের উচ্চবিত্ত ও সরকারের কাছে সহযোগীতা চাই।

কাসেম আলী বলেন,আমি আমার পরিবারকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু আমিতো অক্ষম। কাজ করতে পারি না। আমরা দুজনে ঠিকমতো হাটতে পারি না। মেয়েটার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি চিন্তিত, কিভাবে তার পড়ালোখা করাবো? সরকার এক প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া কিছু দেয়নি।
৬ বছর আগে বিয়ে হয় ৫৭ বছর বয়সী কাসেম আলীর সাথে ২০ বছর বয়সী সাথী বেগমের। বর্তমানে কাসেম আলীর বয়স ৬২ বছর ও সাথী বেগমের বয়স ২৭ বছর।
ওই এলাকার আমিনুর ইসলাম (৫৫) বলেন, ওরা দুজনেই প্রতিবন্ধী। ওরা খুবই কষ্ট করে চলে। সমাজের দানশীল ব্যাক্তি ও সরকারের কাছে ওই পরিবারের জন্য সহযোগীতা চাই।
একই এলাকার রেহানা পারভীন (৪০) বলেন, ওনাদের ঘরে একটা কন্যা সন্তান আছে। মেয়েটার যে কি ভবিষ্যৎ হবে জানিনা। সরকার এদের সহযোগীতা করলে মেয়েটার একটা ভবিষ্যৎ হবে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোছাঃ লায়লা আক্তার বলেন, বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ভিক্ষুক পুনর্বাসনের আওতায় তাদের নিয়ে আসা হবে।

বয়স কিংবা শরিরিক উচ্চতার কাছে হার মানেনি কাসেম ও সাথী দম্পতির ভালোবাসা। সকলের সহযোগীতায় নতুন দ্বার উন্মোচন হবে আর ভবিষ্যৎ উজ্জল হবে তাদের কণ্যা সন্তানের এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।