ঢাকা ০৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কুমিল্লা- সিলেট মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে রেখেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা Logo ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা’র সহধর্মীনি এডভোকেট সিগমা হুদার ইন্তেকাল Logo আমতলীতে ২য় শ্রেণির মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণ, ধর্ষক আটক Logo বাঘাইছড়িতে ছাত্রলীগের প্রতিবাদ মিছিল Logo সরাইলে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ Logo ভাঙ্গায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত-৩ আহত ৪০ Logo রূপসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন Logo শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ Logo সদরপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া Logo যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাসিম এর মুত‍্যু বার্ষিকী পালিত

চুরির অপবাদে মায়ের সামনেই মেয়েকে পেটালেন কাপড় ব্যবসায়ী

মৌসুমি আক্তার (২৩) ও শাপলা আক্তার (২০) দুই বোন। তারা দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার পুটিমারা ইউনিয়নে অবস্থিত একটি হেয়ার কোম্পানিতে নিয়মিত কাজ করেন। দুই মাসের বেতন একসাথে পেয়ে অনেকটা খুশিই ছিলেন তারা। এমনকি সেই খুশিতে তারা তাদের মাকে সাথে নিয়ে গিয়েছিল পার্শ্ববর্তী ভাদুরিয়া বাজারে কেনাকাটা করতে। ওই বাজারের বজলু (৪০) নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীর দোকানে দু’টি থ্রি-পিচ পছন্দ করেন ওই দুই বোন। পছন্দকৃত দু’টি থ্রি-পিচের মূল্য ১৬০০ টাকা নির্ধারণ করে দেন দোকানের কর্মচারীরা। কর্মচারীদের কথা অনুযায়ী দোকান মালিক বজলুর নিকট ২ টি ১০০০ টাকার নোট (মোট ২০০০ টাকা) প্রদান করেন মৌসুমি। নির্ধারিত টাকা কেটে নিয়ে ৪০০ টাকা ফেরত চাওয়ায় মা ও ছোট বোনের সামনেই মৌসুমীকে মারধর করতে থাকেন দোকান মালিক বজলু। ঘটনাস্থলে লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি হতে থাকলে দোকান মালিক বজলু তার নিজের অপরাধের দায় থেকে বাঁচতে মৌসুমি ও তার মা-বোনকে এক পর্যায়ে কাপড় চোর হিসেবে চালিয়ে দিতে অপচেষ্টা চালান। দোকান মালিক বজলু তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির অভিযোগ এনে মারাত্মক রকমের অপপ্রচার চালিয়েছেন। আর এতে মৌসুমির সংসার ভাঙতে বসেছে বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী মৌসুমি ও তার পরিবার।

মৌসুমির বাবা মহিদুল ইসলামের ভাষ্য অনুযায়ী, এ ব্যাপারে তার ভুক্তভোগী মেয়ে মৌসুমি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের পর থেকে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে অভিযোগ তুলে নিতে দফায় দফায় চাপ দেন অভিযুক্ত বজলু ও তার লোকজন।

ভুক্তভোগী মৌসুমি বলেন, পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ঘটনাটি অবগত করেছি। পরে থানার একজন এএসআই মোবাইল ফোনে আমাকে কয়েকবার যোগাযোগ করেন। আগামীকাল সোমবার ২ টার সময় আমাকে থানায় ডেকেছেন তিনি। শুনেছি থানায় দুই পক্ষকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করে দেওয়া হবে। তবে আমি চাই আমার উপর হামলাকারী কাপড় ব্যবসায়ী বজলুর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলার ভাদুরিয়া বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী বজলুর দোকানে মৌসুমি দুটি থ্রি-পিস পছন্দ করেন, যার মূল্য ১৬০০ টাকা নির্ধারণ করে দেন ওই দোকানের কর্মচারীরা। কর্মচারীদের কথা অনুযায়ী মৌসুমী ২ টি ১০০০ টাকার নোট ওই দোকানের মালিক বজলুর নিকট প্রদান করে ৪০০ টাকা ফেরত চান। কিন্তু বজলু তার কর্মচারীদের নির্ধারণ করে দেওয়া ১৬০০ টাকা মূল্যে থ্রি-পিস দুটি বিক্রি করতে ও অতিরিক্ত ৪০০ টাকা মৌসুমিকে ফেরত দিতে একেবারেই নারাজ। বজলুর দাবি ওই দুটি থ্রি-পিসের মূল্য ২০০০ টাকাই। কোন টাকা ফেরত দেওয়া যাবেনা বলে বজলু মৌসুমিকে জানিয়ে দেন। তখন মৌসুমি বজলুকে জানিয়ে দেন থ্রি-পিচ দু’টি তার কাছ থেকে ক্রয় করবেনা বলে। উল্লেখিত থ্রি-পিস দুটি তাৎক্ষনিক বজলুকে ফেরত দিয়ে ২০০০ টাকা ফেরত চান মৌসুমী। এ সময় বজলু মৌসুমিকে টাকা ফেরত না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। গালিগালাজ এর কারন জানতে চাইলে মৌসুমির উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বজলু। এক পর্যায়ে মৌসুমির শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়িভাবে চড়-থাপ্পড় কিল-ঘুষি মেরে ছিলা ফুলা জখম করে। মৌসুমির চিৎকার শুনতে পেয়ে অদূরে থাকা লোকজন ওই দোকানে ছুটে আসেন। মৌসুমি ঘটনার বিষয়টি উপস্থিত সকলকে জানান। ঘটনার এখানেই শেষ নয়, ওই দোকানের মালিক বজলু বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতে মৌসুমি সহ তার মা ও বোনকে তার দোকান থেকে কাপড় চুরির অপবাদ দিতে থাকেন। এ সময় প্রকৃত ঘটনা জানতে মৌসুমি উপস্থিত লোকজনের অনুরোধ জানান সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করতে। তখন বজলু আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মৌসুমি ও তার মা-বোনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে দৃত ভাদুরিয়া বাজার ত্যাগ করতে বাধ্য করান।

নবাবগঞ্জ থানার এএসআই হেমন্ত জানান, দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তাদের থেকে শোনা হবে। এরপর মেয়েটি চাইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কুমিল্লা- সিলেট মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে রেখেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা

চুরির অপবাদে মায়ের সামনেই মেয়েকে পেটালেন কাপড় ব্যবসায়ী

আপডেট সময় ১২:২১:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

মৌসুমি আক্তার (২৩) ও শাপলা আক্তার (২০) দুই বোন। তারা দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার পুটিমারা ইউনিয়নে অবস্থিত একটি হেয়ার কোম্পানিতে নিয়মিত কাজ করেন। দুই মাসের বেতন একসাথে পেয়ে অনেকটা খুশিই ছিলেন তারা। এমনকি সেই খুশিতে তারা তাদের মাকে সাথে নিয়ে গিয়েছিল পার্শ্ববর্তী ভাদুরিয়া বাজারে কেনাকাটা করতে। ওই বাজারের বজলু (৪০) নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীর দোকানে দু’টি থ্রি-পিচ পছন্দ করেন ওই দুই বোন। পছন্দকৃত দু’টি থ্রি-পিচের মূল্য ১৬০০ টাকা নির্ধারণ করে দেন দোকানের কর্মচারীরা। কর্মচারীদের কথা অনুযায়ী দোকান মালিক বজলুর নিকট ২ টি ১০০০ টাকার নোট (মোট ২০০০ টাকা) প্রদান করেন মৌসুমি। নির্ধারিত টাকা কেটে নিয়ে ৪০০ টাকা ফেরত চাওয়ায় মা ও ছোট বোনের সামনেই মৌসুমীকে মারধর করতে থাকেন দোকান মালিক বজলু। ঘটনাস্থলে লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি হতে থাকলে দোকান মালিক বজলু তার নিজের অপরাধের দায় থেকে বাঁচতে মৌসুমি ও তার মা-বোনকে এক পর্যায়ে কাপড় চোর হিসেবে চালিয়ে দিতে অপচেষ্টা চালান। দোকান মালিক বজলু তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির অভিযোগ এনে মারাত্মক রকমের অপপ্রচার চালিয়েছেন। আর এতে মৌসুমির সংসার ভাঙতে বসেছে বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী মৌসুমি ও তার পরিবার।

মৌসুমির বাবা মহিদুল ইসলামের ভাষ্য অনুযায়ী, এ ব্যাপারে তার ভুক্তভোগী মেয়ে মৌসুমি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের পর থেকে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে অভিযোগ তুলে নিতে দফায় দফায় চাপ দেন অভিযুক্ত বজলু ও তার লোকজন।

ভুক্তভোগী মৌসুমি বলেন, পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ঘটনাটি অবগত করেছি। পরে থানার একজন এএসআই মোবাইল ফোনে আমাকে কয়েকবার যোগাযোগ করেন। আগামীকাল সোমবার ২ টার সময় আমাকে থানায় ডেকেছেন তিনি। শুনেছি থানায় দুই পক্ষকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করে দেওয়া হবে। তবে আমি চাই আমার উপর হামলাকারী কাপড় ব্যবসায়ী বজলুর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলার ভাদুরিয়া বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী বজলুর দোকানে মৌসুমি দুটি থ্রি-পিস পছন্দ করেন, যার মূল্য ১৬০০ টাকা নির্ধারণ করে দেন ওই দোকানের কর্মচারীরা। কর্মচারীদের কথা অনুযায়ী মৌসুমী ২ টি ১০০০ টাকার নোট ওই দোকানের মালিক বজলুর নিকট প্রদান করে ৪০০ টাকা ফেরত চান। কিন্তু বজলু তার কর্মচারীদের নির্ধারণ করে দেওয়া ১৬০০ টাকা মূল্যে থ্রি-পিস দুটি বিক্রি করতে ও অতিরিক্ত ৪০০ টাকা মৌসুমিকে ফেরত দিতে একেবারেই নারাজ। বজলুর দাবি ওই দুটি থ্রি-পিসের মূল্য ২০০০ টাকাই। কোন টাকা ফেরত দেওয়া যাবেনা বলে বজলু মৌসুমিকে জানিয়ে দেন। তখন মৌসুমি বজলুকে জানিয়ে দেন থ্রি-পিচ দু’টি তার কাছ থেকে ক্রয় করবেনা বলে। উল্লেখিত থ্রি-পিস দুটি তাৎক্ষনিক বজলুকে ফেরত দিয়ে ২০০০ টাকা ফেরত চান মৌসুমী। এ সময় বজলু মৌসুমিকে টাকা ফেরত না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। গালিগালাজ এর কারন জানতে চাইলে মৌসুমির উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বজলু। এক পর্যায়ে মৌসুমির শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়িভাবে চড়-থাপ্পড় কিল-ঘুষি মেরে ছিলা ফুলা জখম করে। মৌসুমির চিৎকার শুনতে পেয়ে অদূরে থাকা লোকজন ওই দোকানে ছুটে আসেন। মৌসুমি ঘটনার বিষয়টি উপস্থিত সকলকে জানান। ঘটনার এখানেই শেষ নয়, ওই দোকানের মালিক বজলু বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতে মৌসুমি সহ তার মা ও বোনকে তার দোকান থেকে কাপড় চুরির অপবাদ দিতে থাকেন। এ সময় প্রকৃত ঘটনা জানতে মৌসুমি উপস্থিত লোকজনের অনুরোধ জানান সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করতে। তখন বজলু আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মৌসুমি ও তার মা-বোনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে দৃত ভাদুরিয়া বাজার ত্যাগ করতে বাধ্য করান।

নবাবগঞ্জ থানার এএসআই হেমন্ত জানান, দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তাদের থেকে শোনা হবে। এরপর মেয়েটি চাইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।