ঢাকা ১১:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ইচ্ছে পূরণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo বিএনপি নেতা ফেরদৌস আলম মৃধা নিজস্ব অর্থায়নের বলদী গ্রামের বেহাল রাস্তা গুলো পূর্ণ সংস্কারের কাজ শুরু করেন Logo সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণ করে সিআইপি অ্যাওয়ার্ড পাওয়া জসিম উদ্দিনকে সংবর্ধনা Logo মুরাদনগরে খামারগ্রাম প্রবাসী সংগঠনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দোয়া মাহফিল Logo বুড়িচং বাকশীমূল স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত Logo খুলনায় যুবককে গুলি করে হত্যার চেষ্টা Logo সিলেট জেলা যুবদলের নেতা আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ Logo ফুলবাড়ীতে প্রি-পেইড মিটার বন্ধের দাবি Logo বরুড়ার দলুয়া তুলাগাও দাখিল মাদ্রাসার ৫৪ তম বার্ষিক বড় খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত Logo ফুলবাড়ীতে কানাহার ডাঙ্গা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

বটিয়াঘাটায় সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেলো মায়ের

নাহিদ জামান,
খুলনা প্রতিনিধিঃ

শিশু সন্তানকে মারপিটের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে ভাসুর ও তার স্ত্রী সন্তানদের মারপিটে সালমা (৩২) নামে ৪ সন্তানের জননীর মৃত্যু হয়েছে। বটিয়াঘাটা উপজেলার ভান্ডারকোট গ্রামে শনিবার হামলার শিকার হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ নভেম্বর বেলা ১১ টায় তার মৃত্যু ঘটে। ৪ নভেম্বর নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে পৌঁছালে স্বামী সন্তনসহ নিকট আত্মীয়দের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
নিহতের মেঝো কন্যা ফাতেমাতুজ্জোহরা মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী লামিয়া জানায় গত ২৬ অক্টোবর শনিবার দুপুরে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে আসলে তার মেঝ চাচা হেমায়েতের কন্যা ফাতেমা তাকে মারপিট করতে থাকে। এ সময় লামিয়ার ডাক চিৎকারে তার মা সালমা খাতুন ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে হেমায়েতের নির্দেশে তার স্ত্রী কোহিনুর, কণ্যা ফাতেমা, আসমা, লিছমা ও ছেলে ইমরান সালমা খাতুনকে বেধড়ক মারপিট করে। সালমার স্বামী হুমায়ুন কবির ব্যবসায়িক কাজে বাইরে থাকায় সে সন্তানদের সহযোগিতায় গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করায়। এরপর এ ব্যাপারে সুষ্ঠু বিচারের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উবায়দুল শেখের দারস্ত হয় সালমার পরিবার। ওবায়দুল শেখ নিজে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নিয়ে সালমার উপর হামলাকারী হেমায়েতের স্ত্রীর আপর ভাই আলী সরদারকে বিচারের দায়িত্ব দেয়। পরবর্তীতে আলী সরদার বিচারের নামে তালবাহানা করতে থাকে। এমত অবস্থায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা বিচার না পেলে মামলা দায়ে করবে বলে জানালে আলী সরদার তাদের হুমকি-ধামকি দেয়। এদিকে সালমার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হলে ৩ নভেম্বর সকালে তাকে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বেলা ১১ টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের বড় কন্যা ইতি জানাই আমার মায়ের উপর ওরা আগেও অত্যাচার করেছে। আমার আব্বা ব্যবসার কাজে বাইরে থাকার সুযোগে তারা প্রতিনিয়ত এই অত্যাচার করতো। আমরা এর বিচার চাই।
সালমার স্বামী হুমায়ুন কবির বলেন, আমার ভাই হেমায়েত ও তার স্ত্রী সন্তানেরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওবায়দুল সেখের একান্ত সহচর হল আমার ভাইয়ের শ্যালক আলী সরদার। তার দাপটে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। শেষ পর্যন্ত ওরা আমার স্ত্রীকেও বাঁচতে দিল না। আমার চারটি সন্তানকে ওরা মা হারা করেছে। আমার দুই বছরের শিশু কন্যাটি আজ মা-মা করে কাঁদছে। তাকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা আমাদের নেই। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এব্যাপারে বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়ে ইন্সপেক্টর তদন্ত বলেন, গত ২৪ অক্টোবর ওদের নিজেদের মধ্যে গোলমাল হয়। এতে সালমা মারপিটের শিকার হলেও থানায় কোন অভিযোগ করেনি। বরং সালমার মৃত্যুর পর তার স্বজনরা ডাক্তারকে জানায় তার ডায়বেটিস ছিলো। এসব নানা কথা বলে ময়না তদন্ত না করে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে। আমরা খবর পেয়ে ৪ নভেম্বর সকালে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করি। মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থানায় থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আনগত ব্যবস্থ্যা নেয়া হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইচ্ছে পূরণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

SBN

SBN

বটিয়াঘাটায় সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেলো মায়ের

আপডেট সময় ১০:২৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩

নাহিদ জামান,
খুলনা প্রতিনিধিঃ

শিশু সন্তানকে মারপিটের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে ভাসুর ও তার স্ত্রী সন্তানদের মারপিটে সালমা (৩২) নামে ৪ সন্তানের জননীর মৃত্যু হয়েছে। বটিয়াঘাটা উপজেলার ভান্ডারকোট গ্রামে শনিবার হামলার শিকার হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ নভেম্বর বেলা ১১ টায় তার মৃত্যু ঘটে। ৪ নভেম্বর নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে পৌঁছালে স্বামী সন্তনসহ নিকট আত্মীয়দের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
নিহতের মেঝো কন্যা ফাতেমাতুজ্জোহরা মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী লামিয়া জানায় গত ২৬ অক্টোবর শনিবার দুপুরে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে আসলে তার মেঝ চাচা হেমায়েতের কন্যা ফাতেমা তাকে মারপিট করতে থাকে। এ সময় লামিয়ার ডাক চিৎকারে তার মা সালমা খাতুন ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে হেমায়েতের নির্দেশে তার স্ত্রী কোহিনুর, কণ্যা ফাতেমা, আসমা, লিছমা ও ছেলে ইমরান সালমা খাতুনকে বেধড়ক মারপিট করে। সালমার স্বামী হুমায়ুন কবির ব্যবসায়িক কাজে বাইরে থাকায় সে সন্তানদের সহযোগিতায় গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করায়। এরপর এ ব্যাপারে সুষ্ঠু বিচারের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উবায়দুল শেখের দারস্ত হয় সালমার পরিবার। ওবায়দুল শেখ নিজে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নিয়ে সালমার উপর হামলাকারী হেমায়েতের স্ত্রীর আপর ভাই আলী সরদারকে বিচারের দায়িত্ব দেয়। পরবর্তীতে আলী সরদার বিচারের নামে তালবাহানা করতে থাকে। এমত অবস্থায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা বিচার না পেলে মামলা দায়ে করবে বলে জানালে আলী সরদার তাদের হুমকি-ধামকি দেয়। এদিকে সালমার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হলে ৩ নভেম্বর সকালে তাকে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বেলা ১১ টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের বড় কন্যা ইতি জানাই আমার মায়ের উপর ওরা আগেও অত্যাচার করেছে। আমার আব্বা ব্যবসার কাজে বাইরে থাকার সুযোগে তারা প্রতিনিয়ত এই অত্যাচার করতো। আমরা এর বিচার চাই।
সালমার স্বামী হুমায়ুন কবির বলেন, আমার ভাই হেমায়েত ও তার স্ত্রী সন্তানেরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওবায়দুল সেখের একান্ত সহচর হল আমার ভাইয়ের শ্যালক আলী সরদার। তার দাপটে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। শেষ পর্যন্ত ওরা আমার স্ত্রীকেও বাঁচতে দিল না। আমার চারটি সন্তানকে ওরা মা হারা করেছে। আমার দুই বছরের শিশু কন্যাটি আজ মা-মা করে কাঁদছে। তাকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা আমাদের নেই। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এব্যাপারে বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়ে ইন্সপেক্টর তদন্ত বলেন, গত ২৪ অক্টোবর ওদের নিজেদের মধ্যে গোলমাল হয়। এতে সালমা মারপিটের শিকার হলেও থানায় কোন অভিযোগ করেনি। বরং সালমার মৃত্যুর পর তার স্বজনরা ডাক্তারকে জানায় তার ডায়বেটিস ছিলো। এসব নানা কথা বলে ময়না তদন্ত না করে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে। আমরা খবর পেয়ে ৪ নভেম্বর সকালে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করি। মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থানায় থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আনগত ব্যবস্থ্যা নেয়া হবে।