
কুমিল্লার বরুড়ায় খলিলুর রহমান নামের এক ইউপি চেয়ারম্যানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন দু’জন। আকাশী রংয়ের শার্ট আর বাদামী রংয়ের প্যান্টের ফরমাল পোশাকের কোমর বন্ধনীতে রাখা একটি পিস্তল। অপরিচিতদের বুঝার কোনো জো নেই তিনি কি ইউপি চেয়ারম্যান না কি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ। এমন একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বেশ কয়েকটি সোশ্যাল সাইটে। যা নিয়ে চলছে জোর সমালোচনা।
কোমরে পিস্তলের ছবি ভাইরাল হওয়া খলিলুর রহমান জেলার বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান।
ভাইরাল ওই ছবিতে দুজন ব্যক্তির হাত থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করতে দেখা গেছে চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানকে। এসময় প্রকাশ্যে কোমরের ডানপাশে প্রদর্শন করে রাখা হয়েছে পিস্তল। যদিও ওই ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি পিস্তলটি লাইসেন্স করা। তবুও লাইসেন্স করা হলেও এভাবে প্রদর্শন করা নিয়ে জনমনে নেতিবাচক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬ এর ২৫ নম্বরের ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি স্বীয় লাইসেন্স এন্ট্রিকৃত অস্ত্র আত্মরক্ষার নিজে বহন/ ব্যবহার করতে পারবেন। তবে অন্যের ভীতি/ বিরক্তি উদ্রেক করতে পারে এরূপভাবে প্রদর্শন করতে পারবেন না।
আইনানুযায়ী তিনি তার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র নিজের কাছে রাখতে পারলেও অন্যের ভীতি/ বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে এরূপভাবে প্রদর্শন করতে পারবেন না। ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান যেভাবে তার অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন তাতে জনমনে আতংক সৃষ্টি হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক। সাধারণ জনগণের মনে যা ভীতির সঞ্চার করবে সন্দেহাতীত।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমার এ অস্ত্রের লাইসেন্স আছে। জেলা প্রশাসন থেকে লাইসেন্স পাওয়া অস্ত্র আমার সাথে রাখতে পারব, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখুন।
এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর কুমিল্লার সাবেক সভাপতি আলমগীর খান বলেন, ছবিটি আমি দেখেছি। তিনি যেভাবে কোমরে পিস্তলটি রেখেছেন যেকোনো মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টি হবে। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো, ওই চেয়ারম্যানের লাইসেন্স যদি থেকেই থাকে তবে সেই লাইসেন্স বাতিল করে যত দ্রুত সম্ভব তার কাছ থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হোক। ছবিটা দেখে বুঝাই যাচ্ছে তিনি নিজেকে জাহের করার উদ্দেশ্যে এভাবে পিস্তলটি প্রদর্শন করতে কোমরে রেখেছেন।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকতারা বলেছেন, বিষয়টি পুলিশের নজরে এসেছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, ওই চেয়ারম্যানের অস্ত্রের ধরণ, কীভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন, সবকিছু একটা তদন্তের বিষয়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তদন্তের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।