ঢাকা ০৭:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ (ভিডিও) Logo ঝিনাইগাতীতে ১৩৮৬ বোতল ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ উদ্ধার Logo দুই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা নির্বাচিত Logo সকল মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা Logo রূপসায় রবীন্দ্র স্মৃতি সংগ্রহশালায় সমাপনী দিনে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান Logo কালীগঞ্জে বিশেষ অভিযানে পৌর প্যানেল মেয়রসহ আ’লীগের ১০ নেতাকর্মী আটক Logo কটিয়াদীতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৫ অনুষ্ঠিত Logo খুলনায় সংবাদ সংগ্রহে বাধা ও সাংবাদিকের উপর হামলার অভিযোগ Logo বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবন্ধের দাবিতে বরুড়া মানববন্ধন Logo শেরপুরে মাদ্রাসার ছাত্র অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

বরুড়ার লতি দেশ ছাড়িয়ে এখন বহি বিশ্বে বিক্রি হচ্ছে : চাষীরা হচ্ছেন লাভবান

মোঃ ইলিয়াছ আহমদ, বরুড়া

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার কচুর লতি বাংলাদেশ ছাড়িয়ে এখন বহি বিশ্বে বিক্রি হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ আমেরিকায় এখন বরুড়ার কচুর লতির বাজার জাত হচ্ছে। বছরে ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে কুমিল্লার কচুর লতির মূল্য। এ খবরের কারণে কৃষকরা খুশি মনে কচুর লতির চাষ বৃদ্ধি করছে দিন দিন। এক দিকে নিজেরা লাভবান আরেক দিকে দেশের পণ্য বহি বিশ্বে তুলে ধরা কৃষকের স্বপ্ন।
লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা। এ উপজেলার ভবানীপুর, আগানগর, খোশবাস মহেশপুর ও বরুড়া পৌরসভার কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক হারে কচুর লতি বেশী চাষ হচ্ছে। কুমিল্লা জেলার ৩ শ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয় বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়। এর মাঝে বরুড়া উপজেলায় সিংহ ভাগ জমিতে এ চাষ দেখা যায়। বরুড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় ২৬০ হেক্টর জমিতে বরুড়ার বিভিন্ন গ্রামে কচুর লতি চাষ করা হয়।
কুমিল্লা জেলার আর্দশ সদর, চান্দিনা ও বুড়িচং এ কিছু এলাকায় লতির কচুর উৎপাদন হয়। বরুড়া উপজেলায় প্রতিদিন ৪৫/৪৬ টন কচুর লতি উৎপাদিত হয়। প্রতি হেক্টরে ২৫ মেট্রিকটন কচুর লতি উৎপাদন করা হয়। হিসেব করলে দাঁড়ায় গড়ে সারে সাত হাজার মেট্রিকটন কচুর লতি উৎপাদিত হয়। ভবানীপুর ইউনিয়নের করিয়াগ্রার, এগারগ্রাম, ভৈষখলা, নরিন, বাতাইছড়ি আগানগর ইউনিয়নের শরাফতি, রাজাপুর, বিজয়পুর, মুড়াবাজাল জালগাও গ্রামে ঘুরে দেখা যায় প্রতি বাড়িতে মা, বোনেরা লতি পরিস্কার কাজে সহযোগিতা করছে। যাদের জমি নেই এ ধরন পরিবারের অস্বচ্ছল মেয়েরা কেজিতে ১ টাকা ধরে লতি পরিস্কার করে দিচ্ছে।প্রতিদিন ১ শ থেকে দেড় শো কেজি ১ জন লোক লতি পরিস্কার করে। একাধারে ৭ থেকে ৮ মাস কচুর লতি তোলা যায়। পরক্ষণে কচুর প্রতিটি পুল ১৫/২০ টাকা ধরে বিক্রি করা যায়।
বরুড়ার লতি বরুড়া পৌরসদর বাজার, বাতাইছড়ি নতুন ও পুরাতন বাজার, নরিন জামতলা বাজার শরাফতি বাজার, মুগুজি বাজার,নিশ্চন্তপুর বাজার হরিপুর বাজার আগানগর বাজারে পাইকারি ধরে বিক্রি হয় কচুর লতি। পাইকারী ১ কেজি লতি বিক্রি হয় ৪৫/৫০ টাকা পর্যন্ত। সাপ্তাহে ১/২ দিন লতি তোলা হয়। লগ্গসার মগবাড়ি ও নিমসার বাজার নিয়ে বড় বড় কৃষকরা হাজির হয় কচুর লতির ট্রাক নিয়ে।
কচুর লতির কারনে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়ছে। যার ফলে কৃষকের মাঝে লতি চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজ এলাকাকে তুলে ধরতে এ ধরনের প্রয়াস বলে বলছেন ভবানীপুরের সাবেক চারবারের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউল হক রেজু। তিনি নিজেও কচুর লতি চাষ করেন।
আগানগর ইউনিয়নের শরাফতি গ্রামের মোঃ ইউনুস মিয়া ৩০ শতক জমিতে ১ যোগ ধরে লতির চাষ করে আসছেন। তিনি বলেন সারা বছরে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার লতি তিনি বিক্রি করেন। বছর শেষে প্রতিটি কচুর পুল ১৫/২০ টাকা ধরে বিক্রি করে দেন। তার এই আয় দিয়ে দুজন ছেলেকে প্রবাসে পাঠিয়েছেন। শাখাওয়াত নামের বড় ছেলে কে মালয়েশি মেজো ছেলে জাহিদুল ইসলাম কে সৌদি আরব পাঠান।
বছরের ৬ লক্ষ টাকা আয় হলে ও খরচ হয় ১ লক্ষ টাকার মতোন। তিনি প্রতি সাপ্তাহে ১২/১৫ হাজার টাকার লতি বিক্রি করেন। এখন স্বচ্ছল পরিবারের একজন বলে দাবী করেন তিনি।
ভবানীপুর ইউনিয়ন নাটেহর গ্রামের দুলাল মিয়া, শিকারপুর গ্রামের মোঃ শাহআলম, ছফি উল্লাহ পুর্বপদুয়া গ্রামের নাজিম আলী, বিল্লাল হোসেন, কচুর লতি চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছেন বলে তারা জানান। প্রতিটি কৃষক ৫/৬ গন্ডা জমিতে কচুর লতির চাষ করেন। তাদের দাবী সরকার যদি উদ্যেগ নিয়ে লতি সংরক্ষণের প্রসেসিং করে দিলে আরো ব্যাপক হারে কচুর লতি উৎপাদনে চাষীরা আগ্রহী হতো। আলহামদুলিল্লাহ আমরা কচুর লতি চাষ করে অনেক ভালো আছি ইনশাআল্লাহ।
কচুর লতি চাষ করে বিশেষ করে ভবানীপুর ইউনিয়ন ও আগানগর ইউনিয়নের অনেক চাষীরা আলোর মুখ দেখেছেন। যার ফলে দু’টো ইউনিয়নে কচুর লতি চাষের প্রতিযোগিতা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, কমদান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বরুড়ার কচুর লতি চাষীদের কে সম্মলিত বালাই ব্যবস্হাপনায় প্রশিক্ষণের আওতায় এনেছি। হাতে কলমে তাদের কে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। আমার বিশ্বাস বরুড়া উপজেলার চাষীরা আরো অনেক অনেক ভালো করবে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ (ভিডিও)

SBN

SBN

বরুড়ার লতি দেশ ছাড়িয়ে এখন বহি বিশ্বে বিক্রি হচ্ছে : চাষীরা হচ্ছেন লাভবান

আপডেট সময় ০৯:৩৩:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩

মোঃ ইলিয়াছ আহমদ, বরুড়া

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার কচুর লতি বাংলাদেশ ছাড়িয়ে এখন বহি বিশ্বে বিক্রি হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ আমেরিকায় এখন বরুড়ার কচুর লতির বাজার জাত হচ্ছে। বছরে ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে কুমিল্লার কচুর লতির মূল্য। এ খবরের কারণে কৃষকরা খুশি মনে কচুর লতির চাষ বৃদ্ধি করছে দিন দিন। এক দিকে নিজেরা লাভবান আরেক দিকে দেশের পণ্য বহি বিশ্বে তুলে ধরা কৃষকের স্বপ্ন।
লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা। এ উপজেলার ভবানীপুর, আগানগর, খোশবাস মহেশপুর ও বরুড়া পৌরসভার কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক হারে কচুর লতি বেশী চাষ হচ্ছে। কুমিল্লা জেলার ৩ শ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয় বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়। এর মাঝে বরুড়া উপজেলায় সিংহ ভাগ জমিতে এ চাষ দেখা যায়। বরুড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় ২৬০ হেক্টর জমিতে বরুড়ার বিভিন্ন গ্রামে কচুর লতি চাষ করা হয়।
কুমিল্লা জেলার আর্দশ সদর, চান্দিনা ও বুড়িচং এ কিছু এলাকায় লতির কচুর উৎপাদন হয়। বরুড়া উপজেলায় প্রতিদিন ৪৫/৪৬ টন কচুর লতি উৎপাদিত হয়। প্রতি হেক্টরে ২৫ মেট্রিকটন কচুর লতি উৎপাদন করা হয়। হিসেব করলে দাঁড়ায় গড়ে সারে সাত হাজার মেট্রিকটন কচুর লতি উৎপাদিত হয়। ভবানীপুর ইউনিয়নের করিয়াগ্রার, এগারগ্রাম, ভৈষখলা, নরিন, বাতাইছড়ি আগানগর ইউনিয়নের শরাফতি, রাজাপুর, বিজয়পুর, মুড়াবাজাল জালগাও গ্রামে ঘুরে দেখা যায় প্রতি বাড়িতে মা, বোনেরা লতি পরিস্কার কাজে সহযোগিতা করছে। যাদের জমি নেই এ ধরন পরিবারের অস্বচ্ছল মেয়েরা কেজিতে ১ টাকা ধরে লতি পরিস্কার করে দিচ্ছে।প্রতিদিন ১ শ থেকে দেড় শো কেজি ১ জন লোক লতি পরিস্কার করে। একাধারে ৭ থেকে ৮ মাস কচুর লতি তোলা যায়। পরক্ষণে কচুর প্রতিটি পুল ১৫/২০ টাকা ধরে বিক্রি করা যায়।
বরুড়ার লতি বরুড়া পৌরসদর বাজার, বাতাইছড়ি নতুন ও পুরাতন বাজার, নরিন জামতলা বাজার শরাফতি বাজার, মুগুজি বাজার,নিশ্চন্তপুর বাজার হরিপুর বাজার আগানগর বাজারে পাইকারি ধরে বিক্রি হয় কচুর লতি। পাইকারী ১ কেজি লতি বিক্রি হয় ৪৫/৫০ টাকা পর্যন্ত। সাপ্তাহে ১/২ দিন লতি তোলা হয়। লগ্গসার মগবাড়ি ও নিমসার বাজার নিয়ে বড় বড় কৃষকরা হাজির হয় কচুর লতির ট্রাক নিয়ে।
কচুর লতির কারনে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়ছে। যার ফলে কৃষকের মাঝে লতি চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজ এলাকাকে তুলে ধরতে এ ধরনের প্রয়াস বলে বলছেন ভবানীপুরের সাবেক চারবারের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউল হক রেজু। তিনি নিজেও কচুর লতি চাষ করেন।
আগানগর ইউনিয়নের শরাফতি গ্রামের মোঃ ইউনুস মিয়া ৩০ শতক জমিতে ১ যোগ ধরে লতির চাষ করে আসছেন। তিনি বলেন সারা বছরে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার লতি তিনি বিক্রি করেন। বছর শেষে প্রতিটি কচুর পুল ১৫/২০ টাকা ধরে বিক্রি করে দেন। তার এই আয় দিয়ে দুজন ছেলেকে প্রবাসে পাঠিয়েছেন। শাখাওয়াত নামের বড় ছেলে কে মালয়েশি মেজো ছেলে জাহিদুল ইসলাম কে সৌদি আরব পাঠান।
বছরের ৬ লক্ষ টাকা আয় হলে ও খরচ হয় ১ লক্ষ টাকার মতোন। তিনি প্রতি সাপ্তাহে ১২/১৫ হাজার টাকার লতি বিক্রি করেন। এখন স্বচ্ছল পরিবারের একজন বলে দাবী করেন তিনি।
ভবানীপুর ইউনিয়ন নাটেহর গ্রামের দুলাল মিয়া, শিকারপুর গ্রামের মোঃ শাহআলম, ছফি উল্লাহ পুর্বপদুয়া গ্রামের নাজিম আলী, বিল্লাল হোসেন, কচুর লতি চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছেন বলে তারা জানান। প্রতিটি কৃষক ৫/৬ গন্ডা জমিতে কচুর লতির চাষ করেন। তাদের দাবী সরকার যদি উদ্যেগ নিয়ে লতি সংরক্ষণের প্রসেসিং করে দিলে আরো ব্যাপক হারে কচুর লতি উৎপাদনে চাষীরা আগ্রহী হতো। আলহামদুলিল্লাহ আমরা কচুর লতি চাষ করে অনেক ভালো আছি ইনশাআল্লাহ।
কচুর লতি চাষ করে বিশেষ করে ভবানীপুর ইউনিয়ন ও আগানগর ইউনিয়নের অনেক চাষীরা আলোর মুখ দেখেছেন। যার ফলে দু’টো ইউনিয়নে কচুর লতি চাষের প্রতিযোগিতা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, কমদান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বরুড়ার কচুর লতি চাষীদের কে সম্মলিত বালাই ব্যবস্হাপনায় প্রশিক্ষণের আওতায় এনেছি। হাতে কলমে তাদের কে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। আমার বিশ্বাস বরুড়া উপজেলার চাষীরা আরো অনেক অনেক ভালো করবে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়।


Fatal error: Uncaught wfWAFStorageFileException: Unable to save temporary file for atomic writing. in /home/bestweb/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php:34 Stack trace: #0 /home/bestweb/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php(658): wfWAFStorageFile::atomicFilePutContents('/home/bestweb/p...', '<?php exit('Acc...') #1 [internal function]: wfWAFStorageFile->saveConfig('transient') #2 {main} thrown in /home/bestweb/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php on line 34