ঢাকা ০৬:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo চান্দিনা পৌরসভার জন্ম নিবন্ধনে প্রায়ই বন্ধ থাকে সার্ভার, ভোগান্তিতে সেবা গ্রহীতারা Logo মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রে ডাকাতের কবলে পড়া ১১ জন জেলে উদ্ধার Logo শাহরাস্তিতে ২ শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক আটক Logo লালমনিরহাটে বৈষম্যমুলক নিয়োগ প্রক্রিয়া ও নিয়োগ পরিক্ষা বাতিল চেয়ে মানববন্ধন Logo বুড়িচংয়ে পরকীয়া প্রেমের জেরে প্রবাসীর কবজি কেটে দিল প্রেমিক ও তার ভাই Logo সুনামগঞ্জে গানে গানে বাউল কামালের ১২৪ তম জন্মবার্ষিকী পালিত Logo মুরাদনগরে বিএনপি’র দোয়া মাহফিল থেকে সাংবাদিকের মোটরসাইকেল চুরি Logo বরুড়ায় ৭ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত দিবস পালিত Logo বেগমগঞ্জে কবর থেকে বস্তাবন্দি একনলা বন্দুক-পাইপগান উদ্ধার Logo আইএসইউর মানবিক উদ্যোগ বরুড়ায় শীতবস্ত্র বিতরণ

ভারতের অভ্যন্তরে মিয়ানমারের বোমা ফেলার অভিযোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্য মিজোরামের অভ্যন্তরে বোমা ফেলার অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। অবশ্য এতে ভারতে আহত বা নিহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

ব্রিটেনের দৈনিক গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে—চারদিন আগে, ১০ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় ভারত-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের চিন রাজ্যে জান্তাবিরোধী সশস্ত্রগোষ্ঠী চিন ন্যাশনাল আর্মির (সিএনএ) সদর দপ্তর ক্যাম্প ভিক্টোরিয়া অঞ্চলে বিমান হামলা চালায় দেশটির বিমানবাহিনী। সদর দপ্তর লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি বোমা ফেলা হয়। সেসবের মধ্যে অন্তত ২টি বোমা সীমান্তের অপর পারে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের ফারকাওয়ান গ্রামেও পড়েছে। তবে এই বোমায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে গার্ডিয়ানকে নিশ্চিত করেছেন ফারকাওয়ানের বাসিন্দারা।

এ প্রসঙ্গে ভারতের সেনাবাহিনী দাপ্তরিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা দ্য গার্ডিয়ানের কাছে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমরা সীমান্ত এলাকার সম্প্রতিক অস্থিরতা সম্পর্কে অবগত এবং বর্তমানে গোটা পরিস্থিতি আমাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছে।’

ফারকাওয়ান গ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য রামা দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দু’টি বোমা পড়ার পর গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। তাদের আশঙ্কা ছিল— রাতে আরও বোমা হামলা হতে পারে।

গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। গত বছর গঠিত পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামের একটি ব্যানারের আওতায় তৎপরতা চালাচ্ছে তারা। চিন ন্যাশনাল আর্মিও পিডিএফের অন্যতম সদস্যসংগঠন।

সিএনএর সদর দপ্তর দপ্তর ও প্রধান প্রশিক্ষণ শিবির চিন রাজ্যের ক্যাম্প ভিক্টোরিয়া এলাকা। সদর দপ্তর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরেই ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত এবং তার অপর পারে মিজোরামের ফারকাওয়ান গ্রাম। টিয়াও নামের একটি নদী পৃথক করেছে দু’দেশের ভূখণ্ডকে।

মিজোরামের সাধারণ জনগণ মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতি সহানুভূতিশীল। ২০২১ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমার থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে মিজোরামের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে ভারতের এই রাজ্যটিতে মিয়ানমারের শরণার্থী শিবিরের সংখ্যা ৬০টি।

সিএনএর কয়েকজন সদস্য ও যোদ্ধা গার্ডিয়ানকে জানান, মঙ্গলবারের সদর দপ্তর ও প্রশিক্ষণ শিবির লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি বোমা ফেলেছে মিয়ানমারের বিমানবাহিনী এবং হামলায় এক নারীযোদ্ধাসহ ৭ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন ২০ জনেরও বেশি মানুষ।

২০২১ সালে সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করার পর দেশজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেন গণতন্ত্রপন্থী জনগণ। এই আন্দোলন দমনে জান্তার অনুগত নিরাপত্তা বাহিনী প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করলে তার প্রতিক্রিয়ায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নৃতাত্ত্বিক সশস্ত্রগোষ্ঠীও, যারা মর্মগতভাবে সামরিক শাসনবিরোধী।

এসব সশস্ত্রগোষ্ঠীকে দমন করতে তাদের বিভিন্ন ঘাঁটি অঞ্চলে গত বছর থেকে প্রায় নিয়মিত বিমান হামলা চালাচ্ছে সামরিক বাহিনী। গত অক্টোবরে থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী কাচিন প্রদেশে এমন এক বিমান হামলায় নিহত হয়েছিলেন অন্তত ৮০ জন মানুষ। তাদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক জনগণ।

তবে ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো ভারতের অভ্যন্তরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হামলার ঘটনা ঘটল।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চান্দিনা পৌরসভার জন্ম নিবন্ধনে প্রায়ই বন্ধ থাকে সার্ভার, ভোগান্তিতে সেবা গ্রহীতারা

SBN

SBN

ভারতের অভ্যন্তরে মিয়ানমারের বোমা ফেলার অভিযোগ

আপডেট সময় ০৪:২৯:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্য মিজোরামের অভ্যন্তরে বোমা ফেলার অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। অবশ্য এতে ভারতে আহত বা নিহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

ব্রিটেনের দৈনিক গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে—চারদিন আগে, ১০ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় ভারত-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের চিন রাজ্যে জান্তাবিরোধী সশস্ত্রগোষ্ঠী চিন ন্যাশনাল আর্মির (সিএনএ) সদর দপ্তর ক্যাম্প ভিক্টোরিয়া অঞ্চলে বিমান হামলা চালায় দেশটির বিমানবাহিনী। সদর দপ্তর লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি বোমা ফেলা হয়। সেসবের মধ্যে অন্তত ২টি বোমা সীমান্তের অপর পারে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের ফারকাওয়ান গ্রামেও পড়েছে। তবে এই বোমায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে গার্ডিয়ানকে নিশ্চিত করেছেন ফারকাওয়ানের বাসিন্দারা।

এ প্রসঙ্গে ভারতের সেনাবাহিনী দাপ্তরিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা দ্য গার্ডিয়ানের কাছে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমরা সীমান্ত এলাকার সম্প্রতিক অস্থিরতা সম্পর্কে অবগত এবং বর্তমানে গোটা পরিস্থিতি আমাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছে।’

ফারকাওয়ান গ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য রামা দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দু’টি বোমা পড়ার পর গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। তাদের আশঙ্কা ছিল— রাতে আরও বোমা হামলা হতে পারে।

গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। গত বছর গঠিত পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামের একটি ব্যানারের আওতায় তৎপরতা চালাচ্ছে তারা। চিন ন্যাশনাল আর্মিও পিডিএফের অন্যতম সদস্যসংগঠন।

সিএনএর সদর দপ্তর দপ্তর ও প্রধান প্রশিক্ষণ শিবির চিন রাজ্যের ক্যাম্প ভিক্টোরিয়া এলাকা। সদর দপ্তর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরেই ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত এবং তার অপর পারে মিজোরামের ফারকাওয়ান গ্রাম। টিয়াও নামের একটি নদী পৃথক করেছে দু’দেশের ভূখণ্ডকে।

মিজোরামের সাধারণ জনগণ মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতি সহানুভূতিশীল। ২০২১ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমার থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে মিজোরামের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে ভারতের এই রাজ্যটিতে মিয়ানমারের শরণার্থী শিবিরের সংখ্যা ৬০টি।

সিএনএর কয়েকজন সদস্য ও যোদ্ধা গার্ডিয়ানকে জানান, মঙ্গলবারের সদর দপ্তর ও প্রশিক্ষণ শিবির লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি বোমা ফেলেছে মিয়ানমারের বিমানবাহিনী এবং হামলায় এক নারীযোদ্ধাসহ ৭ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন ২০ জনেরও বেশি মানুষ।

২০২১ সালে সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করার পর দেশজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেন গণতন্ত্রপন্থী জনগণ। এই আন্দোলন দমনে জান্তার অনুগত নিরাপত্তা বাহিনী প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করলে তার প্রতিক্রিয়ায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নৃতাত্ত্বিক সশস্ত্রগোষ্ঠীও, যারা মর্মগতভাবে সামরিক শাসনবিরোধী।

এসব সশস্ত্রগোষ্ঠীকে দমন করতে তাদের বিভিন্ন ঘাঁটি অঞ্চলে গত বছর থেকে প্রায় নিয়মিত বিমান হামলা চালাচ্ছে সামরিক বাহিনী। গত অক্টোবরে থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী কাচিন প্রদেশে এমন এক বিমান হামলায় নিহত হয়েছিলেন অন্তত ৮০ জন মানুষ। তাদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক জনগণ।

তবে ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো ভারতের অভ্যন্তরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হামলার ঘটনা ঘটল।