ঢাকা ০৮:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বুড়িচংয়ে বাস থেকে ১৬ কেজি গাঁজাসহ কথিত স্বামী-স্ত্রী আটক Logo জাকারিয়া তাহের সুমনকে বরুড়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ফুলের শুভেচ্ছা Logo মুরাদনগরে গরম পানিতে বৃদ্ধার শরীর ঝলসে দিল প্রতিবেশি Logo বাগেরহাট ৪’টি সংসদীয় আসনের জামায়াত ইসলামীর মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষনা Logo হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর দুই বাড়ি ও ১১নৌযানে আগুন Logo কচুয়া-সাচার সড়কে ডাকাতির চেস্টাকালে পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়ে ডাকাতের মৃত্যু Logo চীন কিরগিজস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে ইচ্ছুক: সি চিন পিং Logo বসন্ত উৎসবে দেশে-বিদেশে মুক্তি পাওয়া চীনা চলচ্চিত্রের জয়জয়কার Logo ২০২৫ সালে বসন্ত উৎসবে সিনেমা দর্শকের সংখ্যা ১৮৭ মিলিয়ন Logo চীন-পাকিস্তান পরস্পরের বন্ধু ও সর্বকালের কৌশলগত অংশীদার :সি চিন পিং

শেরপুরে সূর্যমুখী বাগানে সেলফি তুলতে দর্শনার্থীদের ভিড়

মো: বেলায়েত হোসেন,শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরে সূর্যমুখী ফুলের বাগানে ৫০ টাকার টিকিটে সেলফি তুলতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। শেরীব্রিজ সংলগ্ন মৃগী নদীর অববাহিকায় দিগন্তজোড়া বিস্তৃত সূর্যমুখী ফুলের বাগানে সেলফি তুলতে প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় জমাচ্ছে দর্শনার্থীরা।

সদর উপজেলার লছনমন ইউনিয়নের কান্দাশেরী এলাকায় তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রকল্পের আওতায় জেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ৯ জন উদ্যোক্তা মিলে সাড়ে চার একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।

মনোমুগ্ধকর এই পরিবেশে একটু সময় কাটানো ও সূর্যমুখী ফুলের হাসির ঝিলিক দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক জনতা ৫০ টাকার টিকিটে তাদের এই বাগানটি দেখতে, ছবি ও সেলফি তুলার জন্য প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে। সূর্যমুখী বাগানের সৌন্দর্য মন্ডিত দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এর আকর্ষণ আরো বৃদ্ধি পায় যার ফলে বাগান দেখতে শত শত ফুল প্রেমীরা ভিড় করছে।

শুধু শেরপুর নয় জেলার বাইরে থেকেও বাগান দেখতে এবং সেলফি তুলতে ছুটে আসছেন লোকজন। তবে ফুল প্রেমীদের কাছে পছন্দের জায়গা এটি। তাই প্রতিদিন সূর্যমুখীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঢল নামে দর্শনার্থীদের। বাগানটিতে প্রবেশ করতে ৫০ টাকার টিকিট নির্ধারণ করেছে বাগান মালিক কতৃপক্ষ।

সূর্যমুখী বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী শিখা বলেন, বিশাল বড় সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখে আমার অনেক ভালো লাগছে। ৫০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ঢুকেছি। বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করলাম আর অনেকগুলো ছবি তুললাম সব মিলিয়ে অনেক ভালোই লাগছে।

কবিতা আক্তার বলেন, সূর্যমুখী ফুল আমার অনেক পছন্দ, তাই আমি সূর্যমুখীর সাথে সেলফি তোলার জন্য এসেছি। টিকিটের দাম ৫০ টাকা হলেও টাকাটা বড় কত কথা না, এতো বড় বাগান দেখে মনটা আনন্দে ভরে গেছে।

মিলন বলেন, ফেসবুকে সূর্যমুখী ফুলের ছবি দেখে এখানে ঘুরতে এসেছি, আমার কাছে পরিবেশটা অনেক ভালো লাগছে, বাগানের দৃশ্যটা খুবই চমৎকার আর তাই এমন সুন্দর মনোমুগ্ধকর পরিবেশে সূর্যমুখীর সাথে সেলফি তুললাম।

শেরপুরের মাটি সূর্যমুখী চাষে বেশ উপযোগী। গত বছর সূর্যমুখী ফুলের চাষ কম হলেও এবছর চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় এটি একটি কৃষি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠেছে।

বাগান মালিক হায়দার আলী বলেন, আমরা নয়জন কৃষক মিলে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সাড়ে চার একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। সূর্যমুখী ফুল দেখতে প্রতিদিন অনেক লোকজন আসে। বাগানে ঘুরতে এসে ছবি তুলতে গিয়ে অনেকে ফুল ছিড়ে আবার কেউ কেউ গাছ ভেঙে ফেলে, এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। বাগানের ফুল আর গাছ রক্ষা করার জন্য বাগানের ভিতরে কয়েকজন লোক রেখেছি। তাদের বেতন দিতে আর আর ক্ষতি পোষাতে টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি আমরা লাভবান হবো।

বাগান মালিক মেহেদী হাসান বলেন, আমরা গত বছর ৫০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করে আমাদের অনেক লাভ হয়েছিলো। এবছর আমরা নয়জন উদ্যোক্তা মিলে সাড়ে চার একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। আর আমাদের বাগানে সূর্যমুখী ফুলের সাথে সেলফি তুলতে অনেক লোকজন ছুটে আসছেন। আমরা এবছরও অনেক লাভবান হবো বলে আশা করছি।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শেরপুরের মাটি সূর্যমুখী চাষের জন্য বেশ উপযোগী, সূর্যমুখী ফুল এটি একটি তেল জাতীয় ফসল। এ বিষয়ে আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ সহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছি। এবছর সূর্যমুখী চাষে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো তিন হেক্টর। আর আবাদ হয়েছে ৭ হেক্টর জমিতে। সদর উপজেলার শেরীব্রিজ সংলগ্ন আমাদের সূর্যমুখীর মাঠ এখন পর্যটনে পরিণত হয়েছে। বাগান দেখতে অনেক দর্শনার্থী ভিড় করছে। সূর্যমুখী ফুল আমাদের তেলের চাহিদা পূরণ করবে, অন্যদিকে সয়াবিন তেলের আমদানি হ্রাস পাবে। এই তেল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যেও খুবই উপকারী বলেও জানালেন জেলার এই শীর্ষ কৃষি কর্মকর্তা।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বুড়িচংয়ে বাস থেকে ১৬ কেজি গাঁজাসহ কথিত স্বামী-স্ত্রী আটক

SBN

SBN

শেরপুরে সূর্যমুখী বাগানে সেলফি তুলতে দর্শনার্থীদের ভিড়

আপডেট সময় ০৪:৪৮:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মো: বেলায়েত হোসেন,শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরে সূর্যমুখী ফুলের বাগানে ৫০ টাকার টিকিটে সেলফি তুলতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। শেরীব্রিজ সংলগ্ন মৃগী নদীর অববাহিকায় দিগন্তজোড়া বিস্তৃত সূর্যমুখী ফুলের বাগানে সেলফি তুলতে প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় জমাচ্ছে দর্শনার্থীরা।

সদর উপজেলার লছনমন ইউনিয়নের কান্দাশেরী এলাকায় তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রকল্পের আওতায় জেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ৯ জন উদ্যোক্তা মিলে সাড়ে চার একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।

মনোমুগ্ধকর এই পরিবেশে একটু সময় কাটানো ও সূর্যমুখী ফুলের হাসির ঝিলিক দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক জনতা ৫০ টাকার টিকিটে তাদের এই বাগানটি দেখতে, ছবি ও সেলফি তুলার জন্য প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে। সূর্যমুখী বাগানের সৌন্দর্য মন্ডিত দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এর আকর্ষণ আরো বৃদ্ধি পায় যার ফলে বাগান দেখতে শত শত ফুল প্রেমীরা ভিড় করছে।

শুধু শেরপুর নয় জেলার বাইরে থেকেও বাগান দেখতে এবং সেলফি তুলতে ছুটে আসছেন লোকজন। তবে ফুল প্রেমীদের কাছে পছন্দের জায়গা এটি। তাই প্রতিদিন সূর্যমুখীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঢল নামে দর্শনার্থীদের। বাগানটিতে প্রবেশ করতে ৫০ টাকার টিকিট নির্ধারণ করেছে বাগান মালিক কতৃপক্ষ।

সূর্যমুখী বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী শিখা বলেন, বিশাল বড় সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখে আমার অনেক ভালো লাগছে। ৫০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ঢুকেছি। বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করলাম আর অনেকগুলো ছবি তুললাম সব মিলিয়ে অনেক ভালোই লাগছে।

কবিতা আক্তার বলেন, সূর্যমুখী ফুল আমার অনেক পছন্দ, তাই আমি সূর্যমুখীর সাথে সেলফি তোলার জন্য এসেছি। টিকিটের দাম ৫০ টাকা হলেও টাকাটা বড় কত কথা না, এতো বড় বাগান দেখে মনটা আনন্দে ভরে গেছে।

মিলন বলেন, ফেসবুকে সূর্যমুখী ফুলের ছবি দেখে এখানে ঘুরতে এসেছি, আমার কাছে পরিবেশটা অনেক ভালো লাগছে, বাগানের দৃশ্যটা খুবই চমৎকার আর তাই এমন সুন্দর মনোমুগ্ধকর পরিবেশে সূর্যমুখীর সাথে সেলফি তুললাম।

শেরপুরের মাটি সূর্যমুখী চাষে বেশ উপযোগী। গত বছর সূর্যমুখী ফুলের চাষ কম হলেও এবছর চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় এটি একটি কৃষি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠেছে।

বাগান মালিক হায়দার আলী বলেন, আমরা নয়জন কৃষক মিলে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সাড়ে চার একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। সূর্যমুখী ফুল দেখতে প্রতিদিন অনেক লোকজন আসে। বাগানে ঘুরতে এসে ছবি তুলতে গিয়ে অনেকে ফুল ছিড়ে আবার কেউ কেউ গাছ ভেঙে ফেলে, এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। বাগানের ফুল আর গাছ রক্ষা করার জন্য বাগানের ভিতরে কয়েকজন লোক রেখেছি। তাদের বেতন দিতে আর আর ক্ষতি পোষাতে টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি আমরা লাভবান হবো।

বাগান মালিক মেহেদী হাসান বলেন, আমরা গত বছর ৫০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করে আমাদের অনেক লাভ হয়েছিলো। এবছর আমরা নয়জন উদ্যোক্তা মিলে সাড়ে চার একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। আর আমাদের বাগানে সূর্যমুখী ফুলের সাথে সেলফি তুলতে অনেক লোকজন ছুটে আসছেন। আমরা এবছরও অনেক লাভবান হবো বলে আশা করছি।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শেরপুরের মাটি সূর্যমুখী চাষের জন্য বেশ উপযোগী, সূর্যমুখী ফুল এটি একটি তেল জাতীয় ফসল। এ বিষয়ে আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ সহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছি। এবছর সূর্যমুখী চাষে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো তিন হেক্টর। আর আবাদ হয়েছে ৭ হেক্টর জমিতে। সদর উপজেলার শেরীব্রিজ সংলগ্ন আমাদের সূর্যমুখীর মাঠ এখন পর্যটনে পরিণত হয়েছে। বাগান দেখতে অনেক দর্শনার্থী ভিড় করছে। সূর্যমুখী ফুল আমাদের তেলের চাহিদা পূরণ করবে, অন্যদিকে সয়াবিন তেলের আমদানি হ্রাস পাবে। এই তেল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যেও খুবই উপকারী বলেও জানালেন জেলার এই শীর্ষ কৃষি কর্মকর্তা।