ঢাকা ০৩:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে মঈনুদ্দিন আহমদ মসজিদ ও রওজা কমপ্লেক্স নির্মান কাজের উদ্বোধন Logo কমলনগরে হত্যা মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, স্থানীয়দের মিষ্টি বিতরণ Logo অপারেশন ডেভিল হান্টে নোয়াখালীতে চেয়ারম্যানসহ আটক ৭ Logo বাগেরহাটে সাবেক এমপি শেখ হেলাল, তন্ম ও এসপিসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা, আটক -১ Logo কটিয়াদীতে চোর আটক Logo যোগাযোগ, কোয়ালিটি শিক্ষা ও কৃষির উন্নয়নই পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন- পার্বত্য উপদেষ্টা Logo নিউইয়র্কে চতুর্থ রেমিট্যান্স ফেয়ার ২০২৫ উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর Logo ব্রুনেই-কুয়াংসি অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণ বেগবান করার উদ্যোগ Logo চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ মার্কিন ভোক্তাদের খরচ বাড়াবে: মুখপাত্র Logo বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্টের সাথে ব্রুনাইয়ের সুলতানের বৈঠক

সিয়াম ও ইতিবাচক মনোবিজ্ঞান

আল বাকারা আয়াত ১৮৩ এর ব্যাখ্যা
“হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমাদের পূর্ববতী লোকদের ন্যায় তোমাদের উপরও সিয়ামকে অপরিহার্য কর্তব্য রূপে নির্ধারণ করা হল যেন তোমরা সংযমশীল হতে পারো” ২:১৮৩
এই আয়াত নাজিল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সমগ্র মানব জাতির উপর সিয়াম পালনের বাধ্যকতা ছিল। আরোপিত এই বিধান পরবর্তী মানব গোষ্ঠীর উপর অব্যাহত থাকবে। সমগ্র মানব জাতি বলতে কেবলমাত্র কোন একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে বুঝানো হয়নি। রামাদান মাসে সিয়াম পালনের বাধ্যকতা সকল ধর্মীয় অনুসারীদের উপর প্রযোজ্য হবে। সিয়াম পালনের মুল উদ্দেশ্য সংযমশীলতা অর্জন, এটি কতিপয় ইতিবাচক গুণের সামষ্টি, যা কেবলমাত্র মানবজাতির পক্ষে অর্জন সম্ভব।
সুরা আল বাকারা ১৮৩ থেকে ১৮৯ সিয়াম সংশ্লিষ্ট আয়াতের মাধ্যমে সংযমশীল হওয়ার কতিপয় কর্মসূচি ঘোষিত হয়েছে, ঐসমস্ত কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংযমশীল হওয়ার কৌশল রপ্ত করা যায়।
সংযমকে কি? এই বিষয়ে সুস্পষ্ট জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়।
সংযম এর বাংলা অর্থ নিয়ন্ত্রণ, দমন, রোধ, ব্রত ইত্যাদি। সংযম ইতিবাচক মনোবিজ্ঞানের ৬টি গুণের মধ্যে একটি, যার মধ্যে রয়েছে প্রজ্ঞা, সাহস, মানবতা, ন্যায় বিচার এবং আধ্যাত্মিকতা। একে সাধারণত অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং সতীত্ব, বিনয়, নম্রতা, নিয়ন্ত্রণ, আতিথেয়তা, সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা এবং ক্ষমার মত বৈশিষ্ট্য গুলোর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে কিছু না কিছু বাড়তি আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে সংযম দরকার। যেমন যৌনাকাঙ্ক্ষা, অহংকার অথবা রাগ।(সুত্র: সংযমের সংজ্ঞা বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত)।
সংযম প্রতিষ্ঠার বাস্তব উদাহরণ সিয়াম।
সূরা আল বাকারা ১৮৪ আয়াতের মূল বিষয়বস্তু মানবিকতা, আতিথেয়তা ও নিয়ন্ত্রণ।
“ওটা নির্দিষ্ট কয়েক দিন। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেহ পীড়িত কিংবা প্রবাসী হয় তার জন্য অপর কোন দিন হতে গণনা করবে, আর যারা ওতে অক্ষম তারা তৎপরিবর্তে একজন দরিদ্রকে আহার্য দান করবে। অতএব যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎ কাজ করে তার জন্য কল্যাণ এবং তোমরা যদি বুঝে থাক তাহলে সিয়াম পালনই তোমাদের জন্য কল্যাণকর” ২: ১৮৪
ক) মানবিকতা:- পীড়িত ও সফরকারী ব্যাক্তির জন্য সিয়াম পালনে শিথিলতা মানবিকতার বা ক্ষমার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
খ) আতিথেয়তা:- সিয়াম পালনে অক্ষম ব্যক্তি একজন মিসকীনকে খাদ্য দানের মাধ্যমে আতিথেয়তার প্রকাশ পায়।
গ) নিয়ন্ত্রণ: সিয়াম পালনে শারীরিক কল্যাণ সাধিত হয়, কোষের অটোফেজি প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। সমস্ত কঠিন রোগ সমূহ যেমন হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও ক্যান্সার রোগের মতো মরণব্যাধি রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখে। উল্লেখ্য যে অটোফেজি হল একটি জৈব কোষীয় ক্রিয়া-কলাপ, যা কেবলমাত্র উপোস থাকার মাধ্যমে অর্জিত হয়। সাম্প্রতিককালে বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয় এবং এ গবেষণার উপর নোবেল পুরস্কার লাভ করে। শরীরের সেই গোপন কলাকৌশল আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৬ সালে চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জাপানি বিজ্ঞানী ইওশিনোরি ওশুমি।
সিয়াম পালনে অক্ষম ব্যক্তি একজন মিসকীনকে খাদ্য দান, এটি আর্থিক জরিমানার বিধান, এর মুল উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রণ।

লেখক:
মো: ওবায়েদ উল্লাহ।
সহকারী ফিচার সম্পাদক
দৈনিক মুক্তির লড়াই।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে মঈনুদ্দিন আহমদ মসজিদ ও রওজা কমপ্লেক্স নির্মান কাজের উদ্বোধন

SBN

SBN

সিয়াম ও ইতিবাচক মনোবিজ্ঞান

আপডেট সময় ০৫:১৮:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

আল বাকারা আয়াত ১৮৩ এর ব্যাখ্যা
“হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমাদের পূর্ববতী লোকদের ন্যায় তোমাদের উপরও সিয়ামকে অপরিহার্য কর্তব্য রূপে নির্ধারণ করা হল যেন তোমরা সংযমশীল হতে পারো” ২:১৮৩
এই আয়াত নাজিল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সমগ্র মানব জাতির উপর সিয়াম পালনের বাধ্যকতা ছিল। আরোপিত এই বিধান পরবর্তী মানব গোষ্ঠীর উপর অব্যাহত থাকবে। সমগ্র মানব জাতি বলতে কেবলমাত্র কোন একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে বুঝানো হয়নি। রামাদান মাসে সিয়াম পালনের বাধ্যকতা সকল ধর্মীয় অনুসারীদের উপর প্রযোজ্য হবে। সিয়াম পালনের মুল উদ্দেশ্য সংযমশীলতা অর্জন, এটি কতিপয় ইতিবাচক গুণের সামষ্টি, যা কেবলমাত্র মানবজাতির পক্ষে অর্জন সম্ভব।
সুরা আল বাকারা ১৮৩ থেকে ১৮৯ সিয়াম সংশ্লিষ্ট আয়াতের মাধ্যমে সংযমশীল হওয়ার কতিপয় কর্মসূচি ঘোষিত হয়েছে, ঐসমস্ত কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংযমশীল হওয়ার কৌশল রপ্ত করা যায়।
সংযমকে কি? এই বিষয়ে সুস্পষ্ট জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়।
সংযম এর বাংলা অর্থ নিয়ন্ত্রণ, দমন, রোধ, ব্রত ইত্যাদি। সংযম ইতিবাচক মনোবিজ্ঞানের ৬টি গুণের মধ্যে একটি, যার মধ্যে রয়েছে প্রজ্ঞা, সাহস, মানবতা, ন্যায় বিচার এবং আধ্যাত্মিকতা। একে সাধারণত অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং সতীত্ব, বিনয়, নম্রতা, নিয়ন্ত্রণ, আতিথেয়তা, সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা এবং ক্ষমার মত বৈশিষ্ট্য গুলোর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে কিছু না কিছু বাড়তি আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে সংযম দরকার। যেমন যৌনাকাঙ্ক্ষা, অহংকার অথবা রাগ।(সুত্র: সংযমের সংজ্ঞা বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত)।
সংযম প্রতিষ্ঠার বাস্তব উদাহরণ সিয়াম।
সূরা আল বাকারা ১৮৪ আয়াতের মূল বিষয়বস্তু মানবিকতা, আতিথেয়তা ও নিয়ন্ত্রণ।
“ওটা নির্দিষ্ট কয়েক দিন। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেহ পীড়িত কিংবা প্রবাসী হয় তার জন্য অপর কোন দিন হতে গণনা করবে, আর যারা ওতে অক্ষম তারা তৎপরিবর্তে একজন দরিদ্রকে আহার্য দান করবে। অতএব যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎ কাজ করে তার জন্য কল্যাণ এবং তোমরা যদি বুঝে থাক তাহলে সিয়াম পালনই তোমাদের জন্য কল্যাণকর” ২: ১৮৪
ক) মানবিকতা:- পীড়িত ও সফরকারী ব্যাক্তির জন্য সিয়াম পালনে শিথিলতা মানবিকতার বা ক্ষমার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
খ) আতিথেয়তা:- সিয়াম পালনে অক্ষম ব্যক্তি একজন মিসকীনকে খাদ্য দানের মাধ্যমে আতিথেয়তার প্রকাশ পায়।
গ) নিয়ন্ত্রণ: সিয়াম পালনে শারীরিক কল্যাণ সাধিত হয়, কোষের অটোফেজি প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। সমস্ত কঠিন রোগ সমূহ যেমন হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও ক্যান্সার রোগের মতো মরণব্যাধি রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখে। উল্লেখ্য যে অটোফেজি হল একটি জৈব কোষীয় ক্রিয়া-কলাপ, যা কেবলমাত্র উপোস থাকার মাধ্যমে অর্জিত হয়। সাম্প্রতিককালে বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয় এবং এ গবেষণার উপর নোবেল পুরস্কার লাভ করে। শরীরের সেই গোপন কলাকৌশল আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৬ সালে চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জাপানি বিজ্ঞানী ইওশিনোরি ওশুমি।
সিয়াম পালনে অক্ষম ব্যক্তি একজন মিসকীনকে খাদ্য দান, এটি আর্থিক জরিমানার বিধান, এর মুল উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রণ।

লেখক:
মো: ওবায়েদ উল্লাহ।
সহকারী ফিচার সম্পাদক
দৈনিক মুক্তির লড়াই।