ঢাকা ০১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo খুলনায় পুত্রের হাতে পিতা খুন Logo দশম শ্রেণির ছাত্রীকে নিয়ে শিক্ষক উদাও Logo অনলাইন ছুটি সিস্টেম এবং লোকেশন ট্র্যাকিং চালু প্রয়োজন Logo ব্রাহ্মণপাড়ায় বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব Logo পলাশবাড়ীতে ইয়াবাসহ যুবক গ্রেফতার Logo মহেশখালীতে ২ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ ৩ কুখ্যাত সন্ত্রাসী আটক Logo বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে পাচারের উদ্দেশ্যে বন্দি থাকা নারী ও শিশুসহ ২১ জন উদ্ধার Logo মানবাধিকার পরিষদে ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে চীন Logo চীন প্রতিষ্ঠার বার্ষিকীতে প্রেসিডেন্টের শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা Logo জাতিসংঘভিত্তিক শান্তি ও উন্নয়ন স্বপ্ন বাস্তবায়নে বেইজিংয়ের প্রতিশ্রুতি

অনলাইন ছুটি সিস্টেম এবং লোকেশন ট্র্যাকিং চালু প্রয়োজন

মোঃ সোহেল আমান, রাজশাহী ব্যুরো

সরকারি দপ্তরগুলোতে ছুটির নামে জনভোগান্তি, আর্থিক অনিয়ম ও সরকারি টাকা আত্মসাত রোধে অনলাইন ছুটি আবেদন পদ্ধতি ও লোকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম চালুর দাবি উঠেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দপ্তরগুলোতে বেশিরভাগ সময় ছুটির হিসাব গোপন রাখা হয় বা কাগজপত্রে হেরফের করে একই তারিখে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা ধারাবাহিকভাবে এক জনের পর আরেকজন ছুটির অনুমোদন পান। আবার কেউ মৌখিকভাবে ছুটি নেন, কিন্তু তা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ হয় না। অনেক ক্ষেত্রে লিখিত দরখাস্ত দাখিল করা হলেও তা উপর দপ্তরে পাঠানো হয় না; বরং ছুটি কাটানোর পর দরখাস্তটি ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। ফলে মাস শেষে দেখা যায়, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ছুটি কাটাননি, অথচ সবাই সম্পূর্ণ বেতন পাচ্ছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অনেক সময় অফিস প্রধান নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকেন। এতে সরকারি কোটি কোটি টাকা বিনা পারিশ্রমিকে বিতরণ করা হচ্ছে। এ অবস্থায় অভিযোগ করার মতো পরিবেশও থাকে না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রতিটি সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের iBAS++ (Integrated Budget and Accounting System Plus) অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অনলাইন ছুটি আবেদন বাধ্যতামূলক করা উচিত। এই প্ল্যাটফর্মে ছুটি অনুমোদনের পর তা কোনোভাবেই মুছে ফেলা বা ডিলিট করা যায় না। ডিলিট করলেও তা ডাটাবেজে থাকবে। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নৈমিত্তিক ছুটি অনুমোদনের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ থাকবে এবং অনিয়মের সুযোগ কমে আসবে।

একইসঙ্গে তারা বলেন, লোকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করা হলে অফিস চলাকালীন সময়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি ও অবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এতে অনলাইনে ছুটি নেয়ার পাশাপাশি কর্মস্থলে অবস্থানের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। উদাহরণস্বরূপ, অফিসের ভেতরে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেকর্ড থাকবে। ফলে কেউ মৌখিক ছুটি নিয়ে অকারণে অনুপস্থিত থাকতে পারবে না।

ছুটি ও উপস্থিতি ব্যবস্থাপনাকে অনলাইনে নিয়ে আসা হলে একদিকে সরকারি অর্থ সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে অফিস কার্যক্রমে গতি আসবে। পাশাপাশি নাগরিকরাও দ্রুত সেবা পাবেন।

সচেতন মহলের মন্তব্য, সরকারি দপ্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অনলাইন ছুটি ব্যবস্থাপনা এবং লোকেশন ট্র্যাকিং চালু করাই সময়ের দাবি। তবে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যেহেতু নীতি-নির্ধারক দপ্তরের প্রধানরাই তুলনামূলক বেশি ছুটি কাটান এবং বেশি সুবিধা ভোগ করেন, তাই তারাই এ প্রক্রিয়া চালু করতে প্রধান বাধা সৃষ্টি করতে পারেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনায় পুত্রের হাতে পিতা খুন

SBN

SBN

অনলাইন ছুটি সিস্টেম এবং লোকেশন ট্র্যাকিং চালু প্রয়োজন

আপডেট সময় ১২:১৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

মোঃ সোহেল আমান, রাজশাহী ব্যুরো

সরকারি দপ্তরগুলোতে ছুটির নামে জনভোগান্তি, আর্থিক অনিয়ম ও সরকারি টাকা আত্মসাত রোধে অনলাইন ছুটি আবেদন পদ্ধতি ও লোকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম চালুর দাবি উঠেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দপ্তরগুলোতে বেশিরভাগ সময় ছুটির হিসাব গোপন রাখা হয় বা কাগজপত্রে হেরফের করে একই তারিখে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা ধারাবাহিকভাবে এক জনের পর আরেকজন ছুটির অনুমোদন পান। আবার কেউ মৌখিকভাবে ছুটি নেন, কিন্তু তা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ হয় না। অনেক ক্ষেত্রে লিখিত দরখাস্ত দাখিল করা হলেও তা উপর দপ্তরে পাঠানো হয় না; বরং ছুটি কাটানোর পর দরখাস্তটি ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। ফলে মাস শেষে দেখা যায়, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ছুটি কাটাননি, অথচ সবাই সম্পূর্ণ বেতন পাচ্ছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অনেক সময় অফিস প্রধান নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকেন। এতে সরকারি কোটি কোটি টাকা বিনা পারিশ্রমিকে বিতরণ করা হচ্ছে। এ অবস্থায় অভিযোগ করার মতো পরিবেশও থাকে না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রতিটি সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের iBAS++ (Integrated Budget and Accounting System Plus) অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অনলাইন ছুটি আবেদন বাধ্যতামূলক করা উচিত। এই প্ল্যাটফর্মে ছুটি অনুমোদনের পর তা কোনোভাবেই মুছে ফেলা বা ডিলিট করা যায় না। ডিলিট করলেও তা ডাটাবেজে থাকবে। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নৈমিত্তিক ছুটি অনুমোদনের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ থাকবে এবং অনিয়মের সুযোগ কমে আসবে।

একইসঙ্গে তারা বলেন, লোকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করা হলে অফিস চলাকালীন সময়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি ও অবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এতে অনলাইনে ছুটি নেয়ার পাশাপাশি কর্মস্থলে অবস্থানের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। উদাহরণস্বরূপ, অফিসের ভেতরে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেকর্ড থাকবে। ফলে কেউ মৌখিক ছুটি নিয়ে অকারণে অনুপস্থিত থাকতে পারবে না।

ছুটি ও উপস্থিতি ব্যবস্থাপনাকে অনলাইনে নিয়ে আসা হলে একদিকে সরকারি অর্থ সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে অফিস কার্যক্রমে গতি আসবে। পাশাপাশি নাগরিকরাও দ্রুত সেবা পাবেন।

সচেতন মহলের মন্তব্য, সরকারি দপ্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অনলাইন ছুটি ব্যবস্থাপনা এবং লোকেশন ট্র্যাকিং চালু করাই সময়ের দাবি। তবে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যেহেতু নীতি-নির্ধারক দপ্তরের প্রধানরাই তুলনামূলক বেশি ছুটি কাটান এবং বেশি সুবিধা ভোগ করেন, তাই তারাই এ প্রক্রিয়া চালু করতে প্রধান বাধা সৃষ্টি করতে পারেন।