
এ জে সোহেল, ষ্টাফ রিপোর্টার
নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর পুলিশ কাজে ফিরলেও তাদের তৎপরতা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করছে ২ মাসেরও বেশি সময়। যে কারণে কুমিল্লা সহ সারাদেশে অনেক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের খবর রয়েছে।
কুমিল্লার সকল উপজেলায় এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে যে কোন অপরাধ প্রতিরোধ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বদা তৎপর থাকতে নির্দেশ দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে পরিস্থিতি ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের সর্বদা সতর্ক থাকার এবং তুলনামূলক অপরাধ চিত্র পর্যালোচনায় যে সকল স্থানে অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে তার নির্দিষ্ট করে উপস্থাপন সহ সকল অপরাধ বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছারের সভাপতিত্বে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটি সভায় তুলে ধরা হয়।
সভায় কুমিল্লায় সেপ্টেম্বর মাসে তুলনায় অপরাধ প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।পশু চুরি, ডাকাতি দস্যুতা, নারী ও শিশু নির্যাতন, আহত, অস্ত্র আইন, চোরাচালান, দ্রুত বিচার, মাদকদ্রব্য মামলা পূর্বের থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির তথ্য মতে, সেপ্টেম্বর মাসে কুমিল্লা জেলা পুলিশের আওতায় ৩৬২ মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ডাকাতি, দস্যুতা, নারী ও শিশু নির্যাতন, পশু চুরি, আহত, অস্ত্র আইন, চোরাচালান, দ্রুত বিচার, মাদকদ্রব্য মামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে আহতের ঘটনা ১২৫টি মামলা, মাদকদ্রব্য আইনে ৬৭ টি মামলা, অস্ত্র আইনে ১০ টি মামলা।
চোরাচালান ৫টি মামলা, পশু চুরি ৩টি ও দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়াও খুনের ঘটনা ঘটেছে ১১টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ২৪টি ধর্ষণ পাঁচটি ধর্ষণ পাঁচটি। দস্যুতা ৬টি, সিঁদেল চুরি ৮টি ও ডাকাতির দুটি ঘটনা ঘটেছে। তুলনামূলকভাবে গত দুই মাসে কুমিল্লায় অপরাধের চিত্র আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে বলে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জানা যায়।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সেপ্টেম্বর মাসে দুটি বিদেশি পিস্তল দুটি এলজি তিনটি পাইপগান, ৭৭টি দেশীয় অস্ত্র ১৪ রাউন্ড গুলি, ১৩৯টি কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া র্যাব ১১ অভিযান পরিচালনা করে একটি বিদেশি পিস্তল ৮ রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে বলে জানা যায়।
গত সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশের অভিযানের ৩৫টি মামলায় ৬০ জন ব্যক্তিকে বিভিন্ন অপরাধে আটক করেছে। বিজিবি ৮৮ মামলায় ৬ জনকে আটক করেছে, র্যাব ১৩টি মামলায় ১৯ জনকে আটক করেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ১৭টি মামলায় ২৪ জনকে আটক করেছে এবং জেলার টাস্ক ফোর্স ৩টি মামলায় তিনজন আটক করেছে।
জেলা পুলিশের তথ্যানুযায়ী গত সেপ্টেম্বর মাসে কুমিল্লা জেলা পুলিশ বিভিন্ন অভিযানে ৩০৩ কেজি ৫৫০ গ্রাম গাজা, ২৪৬ বোতল ফেন্সিডিল, ৩৩০ পিস ইয়াবা, ২০ বোতল বিয়ার ও ৩৫ বোতল হুইস্কি উদ্ধার করেছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ৬৬ কেজি গাঁজা, ৩ বোতল ফেন্সিডিল, ৩২ হাজার ১৪৫ পিস ইয়াবা। বিজিবি ৪৫ কেজি গাজা ১০৪ বোতল ফেন্সিডিল, ২ হাজার ৬৯৪ পিস ইয়াবা, ২ বোতল বিয়ার, ৭টি স্কার্ফ ও দুই বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করেছে। র্যাব ২৯০ কেজি গাজা, ৬৪১ বোতল ফেন্সিডিল, ২৪ বোতল বিয়ার, বিদেশি মদ ৯টি ও ২ হাজার পিস ট্যাপেন্ডাল ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে। তবে কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের অভিযানে গত সেপ্টেম্বর মাসে কোনো গ্রেফতার বা মাদক উদ্ধার নেই বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, ভবিষ্যতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
২১ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটিতে আইনশৃঙ্খলা মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, যারা ভবিষ্যতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করবে, প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে।
মুক্তির লড়াই ডেস্ক : 

























