উৎপল ঘোষ, যশোর প্রতিনিধি : যশোর অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিন অব্যবস্থাপনার আখড়ায় পরিনত হয়ে উঠেছে।পাশে ডর্জনমত ক্লিনিকের ব্যবসা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে যা দেখার কেউ নেই।অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এ-র আশপাশের এলাকায়।
এ সকল অনিয়ম নিয়ে একাধিক বার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় অনিয়মের বিষয় তুলে ধরা হলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে ক্রমশ বেড়েই চলেছে এর মাত্রা। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। ডাক্তার নার্স স্টাফ ও বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়োগকৃত দালালদের দৌরত্বে সেবা কেন্দ্রের নামে ব্যবসা কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে হাসপাতালটি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সঠিক সময়ে কর্মস্থলে যোগ দেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।এখানকার অধিকাংশ ডাক্তারেরা সকরারি চাকুরী করা সত্ত্বেও তারা ব্যস্ত সময় পার করেন প্রাইভেট ক্লিনিক ও বিভিন্ন ডায়গনষ্টিক ও তাদের ব্যক্তিগত চেম্বারে। যেটুকু সময় হাসপাতালে কর্মরত থাকেন সেটুকু সময় মন থাকে টেস্ট বাণিজ্য নিয়ে।অভিযোগ আছে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিকের সাথে ডাক্তারদের রয়েছে গোপন চুক্তি। চুক্তি অনুযায়ী টেস্টের ৩৫-৫০% টাকা আসে ডাক্তারের পকেটে।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের খাবার নিয়েও অনিয়মের শেষ নেই। টেন্ডার অনুযায়ী পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করেননা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এদিকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে হাসপাতাল চত্বর দখল করে রীতিমতো স্ট্যান্ড বানিয়ে ফেলেছে এ্যাম্বুলেন্স ভ্যান ও ইজিবাইক চালকেরা। এসকল অনিয়ম দূরীকরণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষ একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালের ডাক্তাররা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে জড়িত, তাদের কাছে চিকিৎসা সেবা নয় বরং ব্যবসাটাই মূখ্য। যে কারনে আজ হাসপাতালের সেবার মানের এ অবস্থা।
হাসপাতালে সেরা নিতে আসা একাধিক রোগী জানান, হাসপাতালে টিকিট কেটে চিকিৎসা সেবা নিতে আসলে ডাক্তার ঔষধের চেয়ে বেশি টেস্ট দেয়। যেসব টেস্ট রোগের সাথে সম্পৃক্ত না। এতে করে গুনতে হয় লাগামহীন মূল্য।
নির্ভযোগ্য সুত্র থেকে আরো জানা যায়, এক একজন ডাক্তার এক একটি নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে বিভিন্ন টেষ্ট আল্ট্রাসনোগ্রাম, এক্সো, ইসিজি সহ বিভিন্ন টেষ্ট করাতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে, নির্দিষ্ট ঐ জায়গা থেকে না করলে চিকিৎসা দিতে বিভিন্ন অজুহাত দেখানো হয় বলে জানা গেছে। এগুলোর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় ঐ সকল প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডাক্তারদের রয়েছে কমিশন বাণিজ্য। এছাড়াও কিছু ডাক্তার নিজেরাই খুলে বসেছেন প্রাইভেট হাসপাতাল,ল্যাব,ডায়গোনেষ্টিক সেন্টার এতে করে প্রকাশ্যে বলি হতে হয় সাধারণ অসহায় রোগীদের।
এছাড়াও হাসপাতালে ভর্তি একাধিক রোগী খাবার ও চিকিৎসা সেবা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, এ হাসপাতালের খাবার ও চিকিৎসার মান ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। বরাদ্দকৃত খাবার পাচ্ছেন না হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা।সচেতন মহল বলেছেন,হাতুড়ে ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন ক্লিনিকের ব্যবসা ও টেষ্ঠের নামে অধিক অর্থ লোপাট করাসহ কোন সরকারি চাকুরীজীবি কর্তব্য ডাক্তার বাইরে রোগী দেখার নামে ৫০০ -৮০০ টাকা ফি এগুলো বন্ধ করতে পারলেই উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান ফিরে আসবে।
দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করে চিকিৎসার মান সুনিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে বিজ্ঞজনেদের অভিমত।