এক চিলতে খালের পাশেই
অনেক পুরনো একটা তেঁতুল গাছ
কালের সাক্ষী হয়ে আজো দাঁড়িয়ে আছে,
ক্লান্ত পথিক, কাঠ ফাটা রোদে মাঠের মুজুর আর মমতাজ মিয়ার মতো শেষ বয়সী রিক্সা ওয়ালারা তার ছায়ায় বসে প্রতিদিন বিশ্রাম নেয়,
তারই গা ঘেসে আক্কাসের চা দোকান
অভাবী সংসারের একমাত্র অবলম্বন।
সুপারি গাছ দিয়ে নিপুন হাতে বানানো বসার জায়গাটা সত্যিই বড়ো পরিপাটি ও আরামদায়কই নয়
বরং
অজপাড়াগাঁয়ের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার ও বটে,
সকাল সন্ধ্যা বলে কোনো কথা নেই
রাতবিরাতে ঝড় বৃষ্টিতে আক্কাসের উনুনে চায়ের কেটলি গরম থাকবেই,
আর কোথাও চা না মিললেও এখানে বিমুখ হওয়ার কোনো কারণ নেই,
ভেঁপসা গরমে চাঁদি রাতে গল্পের আসর জমে গল্প হয় দেশ ভাগ, নোয়াখালীর রায়ট, ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণআন্দোলন, আরো কতোকি নিয়ে।
আক্কাস মিয়ার চায়ের দোকান অনেকটা মধুর কেন্টিনের মতো
আলাপচারিতা আর গল্পে উদয়াস্ত প্রাণবন্ত হয়ে থাকে,
আক্কাসের চায়ের দোকান
সে এক জীবন্ত পাঠশালা,
নিয়মকানুনের বালাই নেই
লুঙ্গির কাঁচায় কিংবা গামছায় কয়েকটা টাকা গুঁজে নিয়ে সব বয়সি পড়ুয়ারা চলে আসে প্রতিদিন,
গল্প করে, রাজনীতি করে আরো কতোকি,
এই সব পাঠ নিয়ে মেতে থাকে
এই নিয়মের ব্যত্যয় হতে দেখিনি কোনোদিন।
(আগরতলা ০৯/০৩/২৩)