ঢাকা ০৪:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কুমিল্লায় বিজয় দিবসে রেলী আলোচনা করেছেন এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন Logo বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসে ঢাকার জাতীয় স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা Logo আদালতের রায় পক্ষে থাকার পরও ৩.৮৪ একর জমিতে চাষ করতে পারছেন না কৃষক ইসমাইল Logo কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বিজয় মেলা নাকি বাণিজ্য মেলা Logo আজ ১৬ ডিসেম্বর: মহাবিজয়ের আলোয় উদ্ভাসিত একাত্তরের রণক্ষেত্রের চূড়ান্ত ইতিহাস Logo নলছিটিতে ৪০টি টিউবওয়েল বিতরণ Logo অবৈধ ড্রেজারে ধ্বংসের মুখে বারেশ্বর বিলের তিন ফসলি জমি Logo কালীগঞ্জে ভাটা উচ্ছেদে এসে শ্রমিকদের বাধায় ফিরে গেলেন পরিবেশ অধিপ্তর Logo সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ৫১ শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তির্ন Logo ১৬ই ডিসেম্বর: মুক্তির লড়াই, গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা

ন্যায়বিচারের আশায় জেলা প্রশাসকের দ্বারস্থ

আদালতের রায় পক্ষে থাকার পরও ৩.৮৪ একর জমিতে চাষ করতে পারছেন না কৃষক ইসমাইল

শাহিন আলম আশিক

​পঞ্চগড়: আদালতের রায় ও ডিক্রি পাওয়ার পরেও নিজ পৈতৃক জমিতে চাষাবাদ করতে না পারার এক চরম সংকটে পড়েছেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার ২নং হাফিজাবাদ ইউনিয়ন টোকাপাড়া গ্রামের অসহায় কৃষক ইসমাইল হোসেন। মাত্র ৩০ শতক বিরোধপূর্ণ জমির মামলার রায় তাঁর পক্ষে এলেও, প্রতিপক্ষের অবৈধ জবরদখল ও হুমকির মুখে তিনি তাঁর মোট ৩.৮৪ একর কৃষি জমিতেই চাষাবাদ করতে পারছেন না। ন্যায়বিচার এবং জমির দখল ফিরে পেতে তিনি গত ২৩/১১/২০২৫ ইং তারিখে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

​৩০ শতক নিয়ে বিরোধ, জিম্মি ৩.৮৪ একর জমি আবেদনে কৃষক ইসমাইল হোসেন উল্লেখ করেন, তাঁর পৈতৃক ও ক্রয় সূত্রে প্রাপ্ত মোট ৩.৮৪ একর কৃষি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধ মূলত ৩০ শতক জমি নিয়ে। এই জমি নিয়ে বিবাদীদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হলে তিনি পঞ্চগড় অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এম আর মামলা নং – ৪২০/২৪ (ধারা – ফৌঃকাঃবিঃ ১৪৪/১৪৫) দায়ের করেন।

​আদালতের রায় সত্ত্বেও থামেনি হয়রানি
​আদালত সকল কাগজপত্র যাচাই ও তদন্ত শেষে গত ০১/০৭/২০২৫ ইং তারিখে ইসমাইল হোসেনের পক্ষে রায় প্রদান করেন। আদালতের সুস্পষ্ট রায় প্রাপ্তির পরেও বিবাদীগণ আদেশ অমান্য করে তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে এবং এই রায়ের বিরোধিতার জের ধরে তাঁর সম্পূর্ণ ৩.৮৪ একর জমিতেই চাষাবাদ বন্ধ করে দেয়।

​ধান রোপণ করতে গিয়ে বাবা-ছেলে আহত
​পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয় গত ০৪/০৮/২০২৫ ইং তারিখে। দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় ইসমাইল হোসেন এবং তাঁর পুত্র মো. জাকির হোসেন (৩১) তফসিল বর্ণিত জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে গেলে বিবাদী মো. সুলতান আলী (৪০), মো. ছলেমান আলী (৩৫), মো. রিয়াজুল ইসলাম (৫০), মো. আবু তাহের (৩৫), মো. কবির হোসেন (৩৫), মো. শাহাদাৎ আলী (৩৫), মো. দেলোয়ার (৩৮), মো. ফারুক হোসেন সহ আরও কয়েকজন জোটবদ্ধ হয়ে জমিতে আসে। তারা চাষাবাদে বাধা প্রদান করে এবং লাঠি, রড, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আকস্মিকভাবে বাবা ও ছেলেকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।

​গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁরা জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পঞ্চগড় সদর থানার কর্তব্যরত অফিসার ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।

​’গায়ের জোরে জমি জবরদখল’
​আবেদনে কৃষক ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করেন, তাঁর জমির যাবতীয় কাগজপত্র সঠিক থাকা সত্ত্বেও বিবাদীগণ এলাকার কুচক্রী মহলের ছত্রছায়ায় অন্যায় ও অবৈধ সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র গায়ের জোরে বিরোধপূর্ণ জমির রায়ের বিরোধিতা করে তাঁর সম্পূর্ণ ৩.৮৪ একর কৃষি জমি অবৈধভাবে জবরদখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে এবং তাঁকে কোনো রকম চাষাবাদ বা ভোগ দখল করিতে দিচ্ছে না। এমনকি তারা হত্যার হুমকিও দিচ্ছে।

​এরূপ কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি আর্থিকভাবে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে আছেন। অসহায় এই কৃষক দ্রুত জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে আদালতের রায় বাস্তবায়িত হয় এবং তিনি তাঁর সম্পূর্ণ জমিতে নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করে পরিবার নিয়ে নিরাপদে থাকতে পারেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কুমিল্লায় বিজয় দিবসে রেলী আলোচনা করেছেন এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন

SBN

SBN

ন্যায়বিচারের আশায় জেলা প্রশাসকের দ্বারস্থ

আদালতের রায় পক্ষে থাকার পরও ৩.৮৪ একর জমিতে চাষ করতে পারছেন না কৃষক ইসমাইল

আপডেট সময় ১১:৩৩:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

শাহিন আলম আশিক

​পঞ্চগড়: আদালতের রায় ও ডিক্রি পাওয়ার পরেও নিজ পৈতৃক জমিতে চাষাবাদ করতে না পারার এক চরম সংকটে পড়েছেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার ২নং হাফিজাবাদ ইউনিয়ন টোকাপাড়া গ্রামের অসহায় কৃষক ইসমাইল হোসেন। মাত্র ৩০ শতক বিরোধপূর্ণ জমির মামলার রায় তাঁর পক্ষে এলেও, প্রতিপক্ষের অবৈধ জবরদখল ও হুমকির মুখে তিনি তাঁর মোট ৩.৮৪ একর কৃষি জমিতেই চাষাবাদ করতে পারছেন না। ন্যায়বিচার এবং জমির দখল ফিরে পেতে তিনি গত ২৩/১১/২০২৫ ইং তারিখে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

​৩০ শতক নিয়ে বিরোধ, জিম্মি ৩.৮৪ একর জমি আবেদনে কৃষক ইসমাইল হোসেন উল্লেখ করেন, তাঁর পৈতৃক ও ক্রয় সূত্রে প্রাপ্ত মোট ৩.৮৪ একর কৃষি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধ মূলত ৩০ শতক জমি নিয়ে। এই জমি নিয়ে বিবাদীদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হলে তিনি পঞ্চগড় অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এম আর মামলা নং – ৪২০/২৪ (ধারা – ফৌঃকাঃবিঃ ১৪৪/১৪৫) দায়ের করেন।

​আদালতের রায় সত্ত্বেও থামেনি হয়রানি
​আদালত সকল কাগজপত্র যাচাই ও তদন্ত শেষে গত ০১/০৭/২০২৫ ইং তারিখে ইসমাইল হোসেনের পক্ষে রায় প্রদান করেন। আদালতের সুস্পষ্ট রায় প্রাপ্তির পরেও বিবাদীগণ আদেশ অমান্য করে তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে এবং এই রায়ের বিরোধিতার জের ধরে তাঁর সম্পূর্ণ ৩.৮৪ একর জমিতেই চাষাবাদ বন্ধ করে দেয়।

​ধান রোপণ করতে গিয়ে বাবা-ছেলে আহত
​পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয় গত ০৪/০৮/২০২৫ ইং তারিখে। দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় ইসমাইল হোসেন এবং তাঁর পুত্র মো. জাকির হোসেন (৩১) তফসিল বর্ণিত জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে গেলে বিবাদী মো. সুলতান আলী (৪০), মো. ছলেমান আলী (৩৫), মো. রিয়াজুল ইসলাম (৫০), মো. আবু তাহের (৩৫), মো. কবির হোসেন (৩৫), মো. শাহাদাৎ আলী (৩৫), মো. দেলোয়ার (৩৮), মো. ফারুক হোসেন সহ আরও কয়েকজন জোটবদ্ধ হয়ে জমিতে আসে। তারা চাষাবাদে বাধা প্রদান করে এবং লাঠি, রড, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আকস্মিকভাবে বাবা ও ছেলেকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।

​গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁরা জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পঞ্চগড় সদর থানার কর্তব্যরত অফিসার ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।

​’গায়ের জোরে জমি জবরদখল’
​আবেদনে কৃষক ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করেন, তাঁর জমির যাবতীয় কাগজপত্র সঠিক থাকা সত্ত্বেও বিবাদীগণ এলাকার কুচক্রী মহলের ছত্রছায়ায় অন্যায় ও অবৈধ সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র গায়ের জোরে বিরোধপূর্ণ জমির রায়ের বিরোধিতা করে তাঁর সম্পূর্ণ ৩.৮৪ একর কৃষি জমি অবৈধভাবে জবরদখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে এবং তাঁকে কোনো রকম চাষাবাদ বা ভোগ দখল করিতে দিচ্ছে না। এমনকি তারা হত্যার হুমকিও দিচ্ছে।

​এরূপ কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি আর্থিকভাবে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে আছেন। অসহায় এই কৃষক দ্রুত জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে আদালতের রায় বাস্তবায়িত হয় এবং তিনি তাঁর সম্পূর্ণ জমিতে নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করে পরিবার নিয়ে নিরাপদে থাকতে পারেন।