
বিশেষ প্রতিবেদক
রুপালি জগতের নায়িকা হিসেবে অভিনয়, তারকা খ্যাতি এবং সেই খ্যাতির স্বর্গ থেকে ভূমির ধুলায় লুটিয়ে পড়া, হারিয়ে যাওয়া এরপর ন্যূনতম মানুষের মতো বেঁচে থাকার লড়াই—এমন চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আসা একসময়কার নায়িকা বনশ্রী। শহুরে জীবনের নানা চড়াই-উতরাই শেষে মাদারীপুর শিবচরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের জীবন যাপন করা নব্বইয়ের দশকের চিত্রনায়িকা বনশ্রী মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যবরণ করেন। নায়িকার পারিবারিক সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
চিত্রনায়িকা বনশ্রী বেশকিছু অসুখে ভুগছিলেন। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে গত পাঁচদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার হৃদরোগ, কিডনির সমস্যাসহ একাধিক ব্যাধি ছিল।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিবচরের মাদবরের চর ইউনিয়নের মেয়ে বনশ্রী। ইউনিয়নের শিকদারকান্দি গ্রামে জন্ম তার। বাবা মজিবুর রহমান মজনু শিকদার ও মা সবুরজান রিনার দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বনশ্রী বড়। সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে রাজধানী ঢাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন তিনি। ১৯৯৪ সালে সোহরাব-রুস্তম সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে বনশ্রীর। নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে ছবিটি ব্যবসা সফল হয়। পরিচিতি পান বনশ্রী। এরপর আরও গোটা দশেক সিনেমায় অভিনয় করেন।
নায়ক মান্না, আমিন খান, রুবেলের বিপরীতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন বনশ্রী। রুপালি পর্দার মতো জীবনও হয়ে ওঠে আলো ঝলমল। শহুরে জীবনের নানা চড়াই-উতরাই শেষে তিনি ফিরে যান নিজ এলাকা মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায়। অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী হয় তার। এক সময় শাহবাগে ফুলও বিক্রি করেছেন এই চিত্রনায়িকা। পরে বিগত সরকারের আমলে ২০ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছিলেন। আর্থিক কষ্টে করোনাকালে ঢাকা ছেড়ে নিজ উপজেলায় শিবচর ফিরে গিয়েছিলেন বনশ্রী। প্রথমে ভাড়া ছিলেন। নানান জায়গায় ঘুরে ঠাঁই মিলেছিল শিবচর উপজেলার মাদবরের চর ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৯ নম্বর ঘরে। ছেলে মেহেদী হাসানকে নিয়ে আশ্রয় প্রকল্পে থাকতেন তিনি।