ঢাকা ০১:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরাইলের শাহজাদাপুর ইউনিয়ন

উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট কারোরই দেখা মিলে না

দীপক কুমার দেব নাথ, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহজাদাপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট কারোরই দেখা মিলে না।। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে সোমবার সকাল ১১টায় তালা ঝুলতে দেখা যায়। তখনও কোন চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট বা স্বাস্থ্য সহকারী কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় নি। স্থানীয় অসহায় রোগীরা তখনো ঘুরছেন সেবার আশায়।

সোমবার (১২ জুন) শাহজাদাপুর ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটি ঘুরে এমন অনিয়ম চোখে পড়ে। সাথে সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শোকজ করেছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী প্রাণেষ চক্রবর্তীক। আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তাকে শোকজের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সরজমিনে স্থানীয় লোকজন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে এখানে চিকিৎসক, ফার্মাসিষ্ট, সাকমো, প্রহরী সহ গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলোতে কোন জনবল নেই। শুধুমাত্র প্রণেষ কুমার চক্রবর্তী নামের একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী দিয়েই চলছে উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। ফলে চিকিৎসা নিতে ব্যাঘাত ঘটছে গ্রামের লোকজনের । এই কেন্দ্রে বসেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একজন এফ ডব্লিউ ভি (ভিজিটর) । তাকেও তখন পাওয়া যায় নি কর্মস্থলে। সপ্তাহের অধিকাংশ সময় কেন্দ্রটি বন্ধ থাকার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা। মাঝে মধ্যে দেখা মিলে প্রণেষ কুমার চক্রবর্তী নামের এক ব্যক্তির। তিনি আসলেও ২/১ ঘন্টা বসে আবার চলে যান। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন পুরো সপ্তাহের। ঔষধ বিতরণেও অনিয়মের কথা শুনা যায়, খাতায় ভূঁয়া লিপিবদ্ধ করেন । রোগীদের ঔষধ না দিয়েই খাতায় লিপিবদ্ধ করেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তারা অনেকেই বলছিলেন সরকার ঔষধ দিলে কি হবে? আমরা তো আর ঠিকমত পাই না।

লোকবল শুন্য এই কেন্দ্রে প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর সরকারি ঔষধের বরাদ্ধ আসছে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানতে চান, নিয়মিত বন্ধ থাকা ওই কেন্দ্রের জন্য বরাদ্ধকৃত প্যারাসিটামল, এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, আয়রণ, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, কৃমিনাশক সিরাপ, কৃমিনাশক ট্রাবলেট ও বিভিন্ন অয়েনমেন্ট গুলো কোথায় বিতরণ হয়? এই ঔষধ যায় কোথায়?

শাহজাদাপুর গ্রামের বাসিন্দা জহরলাল ভৌমিক ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আজহার মিয়া বলেন, এক বছরেরও অধিক সময় ধরে এই কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা নেই। প্রাণেষ নামের এক লোক মাঝেমধ্যে আসেন। বেশীর ভাগ সময় বন্ধই থাকে। এভাবে একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র চলতে পারে না। চিকিৎসক না দিলে কর্তৃপক্ষ এটিকে ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দিলেই পারে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাণেষ চক্রবর্তী বলেন, সকল অভিযোগ সত্য নয়। কেন্দ্রটির দরজা জানালা ভাঙ্গা। ভেতরের অবস্থা ভাল না। এখানে চিকিৎসকসহ লোকবল নেই। আমি একা সামলাতে পারি না। এ গুলো বলতে ১২টার দিকে সরাইল হাসপাতালে এসেছি। প্রতি তিন মাস পরে কত ঔষধ দেয় তালিকা দেখলেই বুঝতে পারবেন।

সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মো. নোমান মিয়া বলেন, বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তাকে সঙ্গে সঙ্গে শোকজ করেছি। আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আর ওখানে চিকিৎসকের বিষয়টি তিনি এরিয়ে জান।

জনপ্রিয় সংবাদ

সরাইলের শাহজাদাপুর ইউনিয়ন

উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট কারোরই দেখা মিলে না

আপডেট সময় ০৮:৪৭:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুন ২০২৩

দীপক কুমার দেব নাথ, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহজাদাপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট কারোরই দেখা মিলে না।। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে সোমবার সকাল ১১টায় তালা ঝুলতে দেখা যায়। তখনও কোন চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট বা স্বাস্থ্য সহকারী কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় নি। স্থানীয় অসহায় রোগীরা তখনো ঘুরছেন সেবার আশায়।

সোমবার (১২ জুন) শাহজাদাপুর ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটি ঘুরে এমন অনিয়ম চোখে পড়ে। সাথে সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শোকজ করেছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী প্রাণেষ চক্রবর্তীক। আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তাকে শোকজের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সরজমিনে স্থানীয় লোকজন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে এখানে চিকিৎসক, ফার্মাসিষ্ট, সাকমো, প্রহরী সহ গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলোতে কোন জনবল নেই। শুধুমাত্র প্রণেষ কুমার চক্রবর্তী নামের একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী দিয়েই চলছে উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। ফলে চিকিৎসা নিতে ব্যাঘাত ঘটছে গ্রামের লোকজনের । এই কেন্দ্রে বসেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একজন এফ ডব্লিউ ভি (ভিজিটর) । তাকেও তখন পাওয়া যায় নি কর্মস্থলে। সপ্তাহের অধিকাংশ সময় কেন্দ্রটি বন্ধ থাকার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা। মাঝে মধ্যে দেখা মিলে প্রণেষ কুমার চক্রবর্তী নামের এক ব্যক্তির। তিনি আসলেও ২/১ ঘন্টা বসে আবার চলে যান। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন পুরো সপ্তাহের। ঔষধ বিতরণেও অনিয়মের কথা শুনা যায়, খাতায় ভূঁয়া লিপিবদ্ধ করেন । রোগীদের ঔষধ না দিয়েই খাতায় লিপিবদ্ধ করেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তারা অনেকেই বলছিলেন সরকার ঔষধ দিলে কি হবে? আমরা তো আর ঠিকমত পাই না।

লোকবল শুন্য এই কেন্দ্রে প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর সরকারি ঔষধের বরাদ্ধ আসছে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানতে চান, নিয়মিত বন্ধ থাকা ওই কেন্দ্রের জন্য বরাদ্ধকৃত প্যারাসিটামল, এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, আয়রণ, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, কৃমিনাশক সিরাপ, কৃমিনাশক ট্রাবলেট ও বিভিন্ন অয়েনমেন্ট গুলো কোথায় বিতরণ হয়? এই ঔষধ যায় কোথায়?

শাহজাদাপুর গ্রামের বাসিন্দা জহরলাল ভৌমিক ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আজহার মিয়া বলেন, এক বছরেরও অধিক সময় ধরে এই কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা নেই। প্রাণেষ নামের এক লোক মাঝেমধ্যে আসেন। বেশীর ভাগ সময় বন্ধই থাকে। এভাবে একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র চলতে পারে না। চিকিৎসক না দিলে কর্তৃপক্ষ এটিকে ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দিলেই পারে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাণেষ চক্রবর্তী বলেন, সকল অভিযোগ সত্য নয়। কেন্দ্রটির দরজা জানালা ভাঙ্গা। ভেতরের অবস্থা ভাল না। এখানে চিকিৎসকসহ লোকবল নেই। আমি একা সামলাতে পারি না। এ গুলো বলতে ১২টার দিকে সরাইল হাসপাতালে এসেছি। প্রতি তিন মাস পরে কত ঔষধ দেয় তালিকা দেখলেই বুঝতে পারবেন।

সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মো. নোমান মিয়া বলেন, বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তাকে সঙ্গে সঙ্গে শোকজ করেছি। আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আর ওখানে চিকিৎসকের বিষয়টি তিনি এরিয়ে জান।