মোঃ মুক্তাদির হোসেন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)
গাজীপুরের কালীগঞ্জে এক সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। নিহতের পরিবারের দাবি মিতু কে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার করছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে পুলিশ নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের কালীগঞ্জের মোক্তারপুর ইউনিয়নের মৈইশার গ্রামের অজিত চন্দ্র দেবনাথ পুত্র রাজীব চন্দ্র দেবনাথ একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী নোয়াপাড়া গ্রমের সুনীল চন্দ্র দেবনাথের মেয়ে মিতু রানী দেবনাথকে ভালোবেসে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন।বিয়েরপর দুই বছর ভালোই চলছিল মিতু ও রাজিবের সংসার। এরই মধ্যে তাদের ঘরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।সন্তান জন্মের পর থেকে বেড়িয়ে আসে রাজীবের আসল চেহারা। রাজীব দেবনাথ মৈশাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিউন পদে চাকুরি করতো এবং স্কুল ছুটির পর প্রায় প্রতি রাতেই এলাকার বখাটে ছেলেদের সাথে নিয়ে স্কুলের ভিতরে নেশা করত। নেশা করার পর বাড়িতে এসে যৌতুকের দাবিতে প্রতিনিয়ত মিতু উপর শারীরিক অত্যাচার নির্যাতন করতো বখাটে রাজিব। নেশার টাকা জোগার করতে যৌতুকের জন্যে মিতুর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। পারিবারিকভাবে একাধিকবার বসে কয়েক দফায় রাজিবকে মিতুর পরিবার দশ লাখ টাকা যৌতুকও দেয়। তাতে কিছু হয়নি রাজিব ও তার পরিবারের। আরো যৌতুকের নেশায় স্বামী রাজিব মিতুকে পিটিয়ে ও গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছেন বলে দাবি করেন মিতুর পরিবার।
নিহত মৃত্যুর বাবা সুনীল দেবনাথ আমাদের সময় কে জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর মিতুর শ্বশুর বাড়ি এলাকার রুহুল আমিন নামের এক ব্যক্তি জরুরী কথা আছে বলে আমার বড় ছেলে অজিতকে ফোনে ডেকে নেয়।সেখানে গিয়ে অজিত দেখে মিতু খাটের উপর অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে।পরে আমাকে ফোন করলে আমি দ্রুত মিতুর শশুর বাড়িতে চলে যাই এবং মিতুকে তার বেডরুমের খাটের উপরে মৃত অবস্থায় দেখে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে মিতু স্বামীর সাথে ঝগড়া করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু মিতুর মুখের নিচে থুতার উপরে এবং শরীলের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখে আমার সন্দেহ হয়। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ওই রাতেই ঘঠনাস্থলে এসে মিতুর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
কালীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাজীব চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে মিতু রানী দেবনাথ স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু আমরা মৃতদেহটি বসতঘরের বিছানা থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে থানায় ইউডি মামলা নেওয়া হয়েছে।প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।