ঢাকা ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo রূপসা সেতুর নিচ থেকে সাংবাদিক বুলু’র মরদেহ উদ্ধার Logo বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হলেও শঙ্কা মুক্ত হয়নি রূপসায় আজিজুল বারী হেলাল Logo বুড়িচংয়ে বিদুৎএর তারে জড়িয়ে এক কৃষকের মৃত্যু Logo বুড়িচংয়ে নানার বাড়ি ভেড়াতে এসে পানিতে ডুবে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু Logo নকলায় অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ৩ জনকে জরিমানা Logo নালিতাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত ভবন এখন মাদকের আখড়া Logo নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে শেরপুরে মধ্যরাতের লাঠি মিছিল Logo সুবর্ণচরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অটো রিক্সা চালককে হত্যা, আটক ২ Logo খুলনায় র‍্যাবের হাতে চাঁদনী হত্যা মামলার প্রধান পলাতক আসামি গ্রেফতার Logo মুরাদনগরে জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

কুমিল্লায় বাণিজ্য মেলা যখন লটারি নামক জুয়ার জমজমাট আসর (ভিডিও)

এ জে সোহেল, স্টাফ রিপোর্টার

গত ২৪ এপ্রিল ২৫ ইং তারিখ হতে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কুমিল্লা কুটির শিল্প ও বাণিজ্য মেলা চলছে, কুমিল্লার অন্যতম ব্যস্ত হিসেবে পরিচিত কুমিল্লার জাঙ্গালিয়া বাস স্ট্যান্ড পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডিওএইচএইচ মাঠে পরিচালিত হচ্ছে এই মেলা কার্যক্রম শুরুতে সার্কাস, শিশুদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন রাইড ও মোটরসাইকেল ঘুরানোর মত কিছু আইটেম থাকলেও বর্তমানে তা ২০ টাকার টিকেট এর কাছে হার মেনেছে, মেলার অভ্যন্তরে বাচ্চাদের বিনোদনের রাইড গুলিতে ৬০/১০০ টাকা করে নির্ধারণ করা হলেও তেমন একটি বিক্রি নেই বললেই চলে। আশেপাশে কিছু স্টল গুলিতে রকমারি কসমেটিক আইটেম, কিচেন সামগ্রী ও বাচ্চা বড়দের কাপড়চোপড় থাকলেও তা বিক্রি কতটুকু এ বিষয়ে সন্ধিহান। শুরুতে দিনব্যাপী কুমিল্লার জনসাধারণের উপস্থিতি লক্ষ করা গেলেও বর্তমানে বিকাল থেকে মেলায় উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে খবর নিয়ে জানা যায় প্রতিদিন ১০ লক্ষ টিকেট বিক্রির জন্য রাখা হয়। যার যত সামান্যই পুরস্কারের জন্য দেয়া হয় বা খরচ করা হয়। একটা সময় কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার হাটবাজারে ড্রামে করে টিকেট বিক্রির খেলা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের লেখালেখির ফলে তা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

কুমিল্লাতে বরাবরের মতো মেলা হয়ে ওঠে বিভিন্ন সামগ্রির ক্রয় বিক্রয় পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরাঘুরি ও বাচ্চাদের একটি বিনোদনের মাধ্যম। বর্তমানে এই মেলার লটারির টিকেট ক্রয়ের জন্য ঋণ করে টিকেট ক্রয়ের নেশায় আসক্ত দিন দিন বাড়ছে।

মেলা মাঠে ঢুকতে হলে এন্ট্রি ফি ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং টিকেটে লটারির জন্য নাম ও মোবাইল নাম্বার দেয়ার প্রচলন করা হয় দিনভর এন্ট্রি টিকিটের মধ্যে পুরস্কার দেয়ার প্রচলন শুরু করে ৬১টি পুরস্কারের মধ্যে মোটরসাইকেল সিএনজি অটোরিকশা স্বর্ণ বাইসাইকেল সহ বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার প্রতিদিনই দেয়া হয়।

মেলার এ ধরনের কার্যক্রমের ফলে উঠতি বয়স থেকে বয়োবৃদ্ধ পর্যন্ত এই টিকেট ক্রয়ের প্রতিযোগিতায় নেমে যাচ্ছে এতে করে সামাজিক অবক্ষয়তার প্রবণতা পাচ্ছে বলে একটি বিশেষ মহলের মতামত।

বর্তমান অবস্থায় এমন হয়েছে যে, পাঁচজন দশজন মিলে ২০ থেকে ৫০ হাজার ১ লক্ষ টাকার টিকেট ক্রয় করছে। এরই মাঝে গত ২৫ শে জুন রাতে ছয় ভরি স্বর্ণ দেবার ঘোষণা করলে রাত আটটার মধ্যে১০ লক্ষ টিকেট বিক্রি হয়ে যায়। মেলার প্রবেশ গেটের সামনে ও ভিতরে এমন ভাবে বুথ করা হয়েছে প্রথম দেখায় মনে হবে শৈশবের অঙ্কন প্রতিযোগিতা চলছে।

এম ডি সুজন মেলা কার্যক্রমে লটারি পরিচালনা করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি পেজ রয়েছে এই পেজেই সচেতন মহল বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, হাবিবুর রহমান নামে একজন লেখেন এ জুয়া বন্ধ করা হোক, সার্বিকভাবে কুমিল্লাকে ধ্বংস করা হচ্ছে, অটো সি এন জির অরাজকতা দিন দিন বাড়ছে। আইনুদ্দিন রানা নামে একজন লিখেন এসব লটারির নাম করে অনেক টাকা পাচ্ছে এই লটারিওয়ালারা, সকলেই মেলাতে যায় এই লটারির জন্যই মোটরসাইকেলের জন্য কিন্তু কিছু পায় না এতে করে পরিবারের মধ্যে ঝগড়া অসন্তুোষ সৃষ্টি হচ্ছে এবং এই ধরনের আয়োজন বন্ধ করার জন্য তিনি পুলিশ বাহিনীকে আহ্বান জানান। জিয়াউল গনি জিয়াউল নামে একজন লিখেন এই পর্যন্ত 85 হাজার টাকার টিকিট কিনেছি কিন্তু কিছুই পাইনি, কুমিল্লার রমজান নামে একজন লিখেন বাণিজ্য মেলায় যা চলছে তা প্রবেশ টিকেটের নামে একটি জুয়া এই নেশায় বহু মানুষ খুব শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ধরনের আরও অনেক অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই মেলা জুয়ায় রূপান্তরের বিষয়ে খোলাখুলি মতামত জানান। একজন কলেজ শিক্ষক জানান, এটি কোন মেলা নয় কৌশলগত জুয়ার মাধ্যমে একটি শহরের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভারসাম্য নষ্টের পায়তারা মাত্র। এত দীর্ঘ সময় ধরে এই ধরনের মেলা পরিচালনার প্রথম রেকর্ড কুমিল্লাতে ২০২৫ এ সম্ভব হলো ।

কুমিল্লার অন্যতম প্রবেশ পথ এই বিশ্ব রোড টমছমব্রিজের রাস্তাটি, ৮টি উপজেলা সহ বিভিন্ন জেলার লোক বিকাল হতে রাত দশটা এগারোটা পর্যন্ত মেলার সম্মুখ রাস্তায় প্রচন্ড যানজট থাকে এ সময়ে অ্যাম্বুলেন্স ও ঘন্টা ধরে অপেক্ষায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এই সময়ের যানজটের প্রভাব জাঙ্গালিয়া বাস স্ট্যান্ড, নওগাঁ চৌমুহনী, টমছমব্রিজ হয়ে সালাউদ্দিন মোড় ও কান্দিরপাড় পর্যন্ত এর বিস্তৃতি হয়ে যায়। এতে করে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছে বিভিন্ন যাত্রী, রোগী ও পেশাজীবী যাত্রী মহল।

আপাত মস্তকে দেখা যাচ্ছে অতীতের মেলার মতো বর্তমানে এই কুমিল্লাতে শিল্প ও কুটির শিল্প মেলাটি পরিচালিত হচ্ছে বলে মনে হয় না প্রবেশ টিকেটের ক্রয়ের নেশায় জুয়ায় বিভিন্ন মহল কে ধাবিত করা হচ্ছে নাতো নিশ্চয়ই কুমিল্লার প্রশাসন ও সচেতন নীতি নির্ধারকরা এ বিষয়ে নজর দিবেন, এমনটাই আশা করে কুমিল্লা সচেতন মহল।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপসা সেতুর নিচ থেকে সাংবাদিক বুলু’র মরদেহ উদ্ধার

SBN

SBN

কুমিল্লায় বাণিজ্য মেলা যখন লটারি নামক জুয়ার জমজমাট আসর (ভিডিও)

আপডেট সময় ০২:৪৫:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

এ জে সোহেল, স্টাফ রিপোর্টার

গত ২৪ এপ্রিল ২৫ ইং তারিখ হতে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কুমিল্লা কুটির শিল্প ও বাণিজ্য মেলা চলছে, কুমিল্লার অন্যতম ব্যস্ত হিসেবে পরিচিত কুমিল্লার জাঙ্গালিয়া বাস স্ট্যান্ড পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডিওএইচএইচ মাঠে পরিচালিত হচ্ছে এই মেলা কার্যক্রম শুরুতে সার্কাস, শিশুদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন রাইড ও মোটরসাইকেল ঘুরানোর মত কিছু আইটেম থাকলেও বর্তমানে তা ২০ টাকার টিকেট এর কাছে হার মেনেছে, মেলার অভ্যন্তরে বাচ্চাদের বিনোদনের রাইড গুলিতে ৬০/১০০ টাকা করে নির্ধারণ করা হলেও তেমন একটি বিক্রি নেই বললেই চলে। আশেপাশে কিছু স্টল গুলিতে রকমারি কসমেটিক আইটেম, কিচেন সামগ্রী ও বাচ্চা বড়দের কাপড়চোপড় থাকলেও তা বিক্রি কতটুকু এ বিষয়ে সন্ধিহান। শুরুতে দিনব্যাপী কুমিল্লার জনসাধারণের উপস্থিতি লক্ষ করা গেলেও বর্তমানে বিকাল থেকে মেলায় উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে খবর নিয়ে জানা যায় প্রতিদিন ১০ লক্ষ টিকেট বিক্রির জন্য রাখা হয়। যার যত সামান্যই পুরস্কারের জন্য দেয়া হয় বা খরচ করা হয়। একটা সময় কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার হাটবাজারে ড্রামে করে টিকেট বিক্রির খেলা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের লেখালেখির ফলে তা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

কুমিল্লাতে বরাবরের মতো মেলা হয়ে ওঠে বিভিন্ন সামগ্রির ক্রয় বিক্রয় পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরাঘুরি ও বাচ্চাদের একটি বিনোদনের মাধ্যম। বর্তমানে এই মেলার লটারির টিকেট ক্রয়ের জন্য ঋণ করে টিকেট ক্রয়ের নেশায় আসক্ত দিন দিন বাড়ছে।

মেলা মাঠে ঢুকতে হলে এন্ট্রি ফি ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং টিকেটে লটারির জন্য নাম ও মোবাইল নাম্বার দেয়ার প্রচলন করা হয় দিনভর এন্ট্রি টিকিটের মধ্যে পুরস্কার দেয়ার প্রচলন শুরু করে ৬১টি পুরস্কারের মধ্যে মোটরসাইকেল সিএনজি অটোরিকশা স্বর্ণ বাইসাইকেল সহ বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার প্রতিদিনই দেয়া হয়।

মেলার এ ধরনের কার্যক্রমের ফলে উঠতি বয়স থেকে বয়োবৃদ্ধ পর্যন্ত এই টিকেট ক্রয়ের প্রতিযোগিতায় নেমে যাচ্ছে এতে করে সামাজিক অবক্ষয়তার প্রবণতা পাচ্ছে বলে একটি বিশেষ মহলের মতামত।

বর্তমান অবস্থায় এমন হয়েছে যে, পাঁচজন দশজন মিলে ২০ থেকে ৫০ হাজার ১ লক্ষ টাকার টিকেট ক্রয় করছে। এরই মাঝে গত ২৫ শে জুন রাতে ছয় ভরি স্বর্ণ দেবার ঘোষণা করলে রাত আটটার মধ্যে১০ লক্ষ টিকেট বিক্রি হয়ে যায়। মেলার প্রবেশ গেটের সামনে ও ভিতরে এমন ভাবে বুথ করা হয়েছে প্রথম দেখায় মনে হবে শৈশবের অঙ্কন প্রতিযোগিতা চলছে।

এম ডি সুজন মেলা কার্যক্রমে লটারি পরিচালনা করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি পেজ রয়েছে এই পেজেই সচেতন মহল বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, হাবিবুর রহমান নামে একজন লেখেন এ জুয়া বন্ধ করা হোক, সার্বিকভাবে কুমিল্লাকে ধ্বংস করা হচ্ছে, অটো সি এন জির অরাজকতা দিন দিন বাড়ছে। আইনুদ্দিন রানা নামে একজন লিখেন এসব লটারির নাম করে অনেক টাকা পাচ্ছে এই লটারিওয়ালারা, সকলেই মেলাতে যায় এই লটারির জন্যই মোটরসাইকেলের জন্য কিন্তু কিছু পায় না এতে করে পরিবারের মধ্যে ঝগড়া অসন্তুোষ সৃষ্টি হচ্ছে এবং এই ধরনের আয়োজন বন্ধ করার জন্য তিনি পুলিশ বাহিনীকে আহ্বান জানান। জিয়াউল গনি জিয়াউল নামে একজন লিখেন এই পর্যন্ত 85 হাজার টাকার টিকিট কিনেছি কিন্তু কিছুই পাইনি, কুমিল্লার রমজান নামে একজন লিখেন বাণিজ্য মেলায় যা চলছে তা প্রবেশ টিকেটের নামে একটি জুয়া এই নেশায় বহু মানুষ খুব শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ধরনের আরও অনেক অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই মেলা জুয়ায় রূপান্তরের বিষয়ে খোলাখুলি মতামত জানান। একজন কলেজ শিক্ষক জানান, এটি কোন মেলা নয় কৌশলগত জুয়ার মাধ্যমে একটি শহরের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভারসাম্য নষ্টের পায়তারা মাত্র। এত দীর্ঘ সময় ধরে এই ধরনের মেলা পরিচালনার প্রথম রেকর্ড কুমিল্লাতে ২০২৫ এ সম্ভব হলো ।

কুমিল্লার অন্যতম প্রবেশ পথ এই বিশ্ব রোড টমছমব্রিজের রাস্তাটি, ৮টি উপজেলা সহ বিভিন্ন জেলার লোক বিকাল হতে রাত দশটা এগারোটা পর্যন্ত মেলার সম্মুখ রাস্তায় প্রচন্ড যানজট থাকে এ সময়ে অ্যাম্বুলেন্স ও ঘন্টা ধরে অপেক্ষায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এই সময়ের যানজটের প্রভাব জাঙ্গালিয়া বাস স্ট্যান্ড, নওগাঁ চৌমুহনী, টমছমব্রিজ হয়ে সালাউদ্দিন মোড় ও কান্দিরপাড় পর্যন্ত এর বিস্তৃতি হয়ে যায়। এতে করে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছে বিভিন্ন যাত্রী, রোগী ও পেশাজীবী যাত্রী মহল।

আপাত মস্তকে দেখা যাচ্ছে অতীতের মেলার মতো বর্তমানে এই কুমিল্লাতে শিল্প ও কুটির শিল্প মেলাটি পরিচালিত হচ্ছে বলে মনে হয় না প্রবেশ টিকেটের ক্রয়ের নেশায় জুয়ায় বিভিন্ন মহল কে ধাবিত করা হচ্ছে নাতো নিশ্চয়ই কুমিল্লার প্রশাসন ও সচেতন নীতি নির্ধারকরা এ বিষয়ে নজর দিবেন, এমনটাই আশা করে কুমিল্লা সচেতন মহল।