মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি: ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ দেশবাসী। দিন যত যাচ্ছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও তত বাড়ছে।
কুমিল্লায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এসব রোগীদের মধ্যে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছে ৪০ জন। বাকী ২৪ জন জেলার চান্দিনা, বরুড়া, দাউদকান্দি, নাঙ্গলকোট উপজেলাসহ মোট ৮ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি।
বুধবার (১২ জুলাই) রাতে
একদিনে ২৬ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (১১ জুলাই) পর্যন্ত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ১৪ জন ডেঙ্গু রোগী। কিন্তু বুধবার একদিনেই বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার্ড হয়ে আরও ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৪০ ডেঙ্গু রোগী কুমেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এর আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত এত রোগী কখনও একদিনে কুমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। এটি আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তিনি।
তবে আতঙ্কিত না হয়ে নিয়ম মেনে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, কারও যদি সামান্য শরীর ব্যথা এবং জ্বরও হয়, অবহেলা না করে একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসক লক্ষ্মণ দেখেই শনাক্ত করতে পারবেন ডেঙ্গু আক্রান্ত কী না। তবে এত ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও এখন পর্যন্ত ১জন রোগীও ডেঙ্গুর কারণে মৃত্যুবরণ করেনি কুমিল্লায়।
তিনি আরও বলেন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ডেঙ্গু ইউনিট খোলা হয়েছে। এ হাসপাতালে শিশু, নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা আলাদা ইউনিট করে মোট ৭০ জনকে চিকিৎসা দেওয়ার মতো ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন, আক্রান্ত রোগীরা হয়তো অন্য এলাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লায় এসেছেন ধীরে ধীরে তার লক্ষ্মণ পরিলক্ষিত হয়েছে। কুমিল্লা শহরতলীর একজনও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। সুতরাং কুমিল্লা এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু থেকে নিরাপদ রয়েছে বলা যায়, তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ইতোমধ্যে সারা জেলা জুড়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে। এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে গ্রাম এবং শহরের সবাইকেই সচেতন হতে হবে।
এডিস বাসাবাড়ি বা নির্মাণাধীন ভবনে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে জন্ম নেয়। মেঝেতে জমে থাকা পানিতে এটি বেশি পাওয়া যায়। সিটি করপোরেশনের যেমন এডিস মশা দমনের দায় আছে, তেমনই বাসাবাড়িতে যেন মশা না হয়, সেটির দায় নাগরিকদের নিতে হবে।