
স্টাফ রিপোর্টার
টিএসসিতে কোটাসহ ৭ দফা দাবিতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের উদ্যোগে বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের চেয়ারম্যান মোঃ সোলাইমান মিয়ার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার রাজধানীর টিএসসিতে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় তিনি বলেন, কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে বিভ্রান্ত করে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার হীন চক্রান্তে লিপ্ত হওয়া জামাত, বিএনপি ও রাজাকারের সন্তানদের কোন অবস্থায় ছাড় দেয়া হবে না।
প্রশাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের শূন্য করার লক্ষ্যে কোটা বাতিল এর ষড়যন্ত্র চলছে। কারন তারা জানে যে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা অফিস-আদালতে থাকলে দুর্নীতি করা খুবই কঠিন হবে। রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীদের কৌশলের কাছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল ছিল সরকারের চরম ভুল সিদ্ধান্ত, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার নিজের ঘাড়ে, নিজেই কুড়াল মেরেছে, সরকারের হার মানা ছিল দুঃখজনক আত্মঘাতী! মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের জন্য কোন আন্দোলন হয়নি, তবে কেন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা হলো? সকল কোটা ঠিক রইলো বাস্তবে শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল হলো, যা খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। অন্য কোন কোটা নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে জামাত, বিএনপি ও রাজাকারের সন্তানদের মাথা ব্যথা, যাহা কোন অবস্থায় আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মেনে নেব না।
প্রয়োজনে সরকার ইচ্ছে করলে সকল পদে ২০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ করে কোটা জটিলতা নিরসন করতে পারতো, তাতে দুই কুলই ঠিক থাকতো, স্বাধীনতা বিরোধীরা মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার সুযোগ পেতনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মোঃ সোলায়মান মিয়া আরও বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার হাত দিয়ে এত বড় ক্ষতি আমরা কিছুতেই মানতে পারছিনা, আপনাকেই এর সুষ্ঠ সমাধান দিতে হবে”।
(খ) সকল মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি, সচিব সহ সকল কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব সরকারকেই নিতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্থ রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউরের সাথে গভীর সম্পর্ক সেইসব কর্মকর্তাদেরকে দ্রæত সময়েরর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরাতে হবে। সাংবাদিক বন্ধুগণ, আমরা বলতে চাই দেশে এই যে, একের পর এক দুর্নীতিবাজ ধরা পড়ছে তারা কারা? রাষ্ট্রের টাকায় লেখাপড়া করে এখন বড় বড় আমলা হয়ে দুর্নীতি করছে, জনগণের টাকা মেরে বিদেশে পাচার করছে, দেশে বিদেশে সম্পদের পাহাড় বানাচ্ছে। আমরা আর আমাদের জনগণের টাকায় এমন বিসিএস ক্যাডার বানাতে চাইনা, যারা জনগণের টাকায় লেখাপড়া করে, পরে জনগণকেই শোষণ করবে? প্রয়োজনে এই সকল ভূর্তিকি বাতিল করে সরকারকে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে হবে।
উক্ত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে আরও বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের মহাসচিব মোঃ শফিকুল ইসলাম বাবু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আলম পাঠান, শামসুদ্দোহা প্রিন্স, এম টিপু সুলতান, মোঃ জুয়েল মিয়া সহ বিভিন্ন জেলা, মহানগর ও থানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
৭ দফা দাবি সমূহ:
(১) মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ করণসহ দেশের সকল চাকুরীর নিয়োগে, সকল পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনঃ বহাল করতে হবে এবং স্বয়ংক্রিয় ভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মকে এই প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে।
(২) বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের চাকুরীর অবসরের বয়স ৬১ বছর করতে হবে যা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৬১ বৎসর পর্যন্ত বলবৎ আছে।
(৩) বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর হামলা, মামলা, নির্যাতন, জমি দখল বন্ধে সুরক্ষা আইন পাশ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রেণী ও মর্যাদা নির্ধারণসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের স্বল্প সুদে ঋণ, বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী- সন্তানদের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে, সম্মানীভাতা বৃদ্ধিসহ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
(৪) মানবসেবায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য জাতীয় সংসদে ৫০ (পঞ্চাশ) টি আসন ও জেলা পরিষদ সহ সকল পরিষদে, গভর্ণিং কমিটি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিতে ০২ (দুই) জন করে সদস্য নীতি নির্ধারক ফোরামে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক ভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
(৫) দুর্নীতি বন্ধে জিরো (০) টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা সহ দুর্নীতিবাজ আমলা ও নেতাদের চিহ্নিত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে প্রকৃত পক্ষে শক্তিশালী করতে হবে এবং বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করা ও পাচার কৃত টাকা দেশে ফেরত আনতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
(৬) বাজারে হঠাৎ মূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট, ঘুষ, দূর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বাজার তদারকি ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
(৭) বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তাদের মৃত্যুর পর তার ভাতার অংশ তার স্ত্রী অথবা সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনীদের নামে ভাতা চালু রাখতে হবে।
(বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের চেয়ে অন্য কাহারো দেশ ও দেশের মানুষকে বেশী ভালোবাসার অর্থ হলো ”মা” এর চেয়ে মাসীর দরদ বেশী)
মুক্তির লড়াই ডেস্ক : 

























