খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়িতে পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে নেকাব না খোলায় এক ছাত্রীকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাটিরাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কামাল হোসেন মজুমদারের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ওই ছাত্রী বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) স্ট্যাটাস দিলে মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।
জানা গেছ, শুক্রবার মাটিরাঙ্গা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি সমাজতত্ত্ব পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। যথারীতি পরীক্ষা শুরুর একপর্যায়ে উত্তরপত্রে হল পরিদর্শক স্বাক্ষর করতে আসেন। এ সময় নেকাবে মুখ আবৃত দেখে তিনি চেহারা দেখাতে বলেন। নারী শিক্ষক অথবা অন্য কোনো নারী পরিক্ষার্থীকে মুখমণ্ডল দেখাবেন জানালে বাদে বিপত্তি। একপর্যায়ে কলেজের অধ্যক্ষ কামাল হোসেন মজুমদার আসেন। তিনিও নেকাব সরিয়ে চেহারা দেখাতে বলেন। চেহারা না দেখানোয় একপর্যায়ে হেনস্তা করে হল থেকে বের করে দেন অধ্যক্ষ। হল থেকে বের হয়ে ৯৯৯ কল দিয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হন। পরে নারী পুলিশ এসে শনাক্ত করলে তাকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হয়। ততক্ষণে পরীক্ষার সময় শেষ হয়ে যায়।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য নারী সংহতি। শনিবার দুপুরে সংগঠনের আহ্বায়ক শাহেনা আক্তার ও সদস্য সচিব তানজিলা সুলতানা রুমা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিক্ষার্থীর প্রতি অমানবিক ও বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পুনরায় পরীক্ষার দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি সুবিচার করতে হবে।
মাটিরাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কামাল হোসেন মজুমদার বলেন, পরীক্ষার বিধি অনুযায়ী প্রবেশপত্রে যে ছবি থাকে তা দেখে পরীক্ষা নিতে হবে। শিক্ষকেরা তাকে অনুরোধ করেন নেকাব খোলার জন্য। আমি পুলিশকে মহিলা পুলিশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি, কিন্তু সেভাবে রেসপন্স পাইনি। পরে ওই শিক্ষার্থী ৯৯৯ ফোন করায় মহিলা পুলিশ আসে। শেষ মুহূর্তে মহিলা পুলিশ এসে ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় নিশ্চিত করে।
মাটিরাঙা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌফিকুল ইসলাম তৌফিক বলেন, শুক্রবার বিকেল ৩টা ৪৭ মিনিটের দিকে ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়েছি যে একটা মেয়েকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে দিচ্ছে না। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ কলেজে যায়। অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান ওই শিক্ষার্থীকে অসদাচরণের অভিযোগে পরীক্ষার হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।