ঢাকা ০৬:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo গজনী বিটে বালু পাচারের অভিযোগ Logo বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালিত Logo কুমিল্লায় ধ্রুবতারার রজতজয়ন্তী উদযাপন Logo রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইলের হাতে আলাদিনের চেরাগ Logo বরুড়ায় রেজভীয়া দরবার শরীফের উদ্যোগে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত Logo বুড়িচংয়ে পাহারাদার নির্যাতন মামলা আসামি যুবদল নেতাকে গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ Logo ছাত্র সংসদ নির্বাচন আর মাঠের রাজনীতি এক কথা নয় : রেদোয়ান আহমেদ Logo কমনওয়েলথ ছাত্র সংসদের ভিপি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির রিফাদ Logo বালিয়াডাঙ্গীতে দুসীরাতুন্নবী (সা) সেমিনার অনুষ্ঠিত Logo নালিতাবাড়ীতে ধর্ষণ মামলা ধামাচাপা দিতে ধর্ষিতার বিরুদ্ধে চারটি চুরির মামলা

গজনী বিটে বালু পাচারের অভিযোগ

মোঃ বেলায়েত হোসেন, শেরপুর

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী বিটের হালচাটি, মালিটিলা, গজারীচালা, মাগুনঝুড়া, দরবেশতলা ও ৫নম্বর এলাকায় প্রতিরাতে হাজার হাজার টাকার বালু পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজের প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়ে মাহিন্দ্র গাড়ি ব্যবহার করে নিয়মিত বালু পাচার করছে। চক্রটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮–১০ জন। নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে তারা কখনো রাজনৈতিক পরিচয় আবার কখনো প্রভাবশালী নেতাদের নাম ব্যবহার করে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল রাতভর মাঠে থেকে পাচার ঠেকাতে অভিযান চালাচ্ছেন। তবে প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীরা দৃঢ় অবস্থান নিলে কিছু প্রভাবশালী নেতার চাপ, হুমকি ও তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে সাংবাদিকদেরও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অবাধ বালু পাচার চলতে থাকলে গারো পাহাড় অচিরেই “নেড়া পাহাড়ে” পরিণত হবে। এর ফলে শুধু পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই ধ্বংস হবে না, সরকারও হারাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

গজনী বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দায়িত্বে থেকেও দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন। সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার নিজের মতো ছুটি কাটান, আর ওই সুযোগে বালুখেকোরা অবাধে বালু লুটে নিচ্ছে।

শিক্ষানবিশ ফরেস্ট রেঞ্জার তহিদুল ইসলাম বলেন,“আমি এই বিটে যোগদানের পর দিনরাত স্বল্পসংখ্যক স্টাফ নিয়ে লড়াই করছি। ইতিমধ্যে একটি মাহিন্দ্র জব্দ করে মামলা করেছি। মালিটিলা এলাকায় বালুভর্তি গাড়ি আটকাতে গিয়ে জীবন নিয়ে ঝুঁকি নিতে হয়েছে। তারা আমাকে অবরোধের চেষ্টা করেছিল। এরপরেও প্রতিনিয়ত পাচারকারীদের প্রতিরোধ করে যাচ্ছি। ফলে চক্রটি আমাকে টার্গেট করে মিথ্যা অভিযোগ ও হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু কোনো হুমকিতেই আমি দমে যাব না।”

রাংটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম বলেন,“গজনীতে প্রতিনিয়ত বালু পাচারের সত্যতা পাওয়া গেছে। সেইকারণে আমি নিজে রাতভর মাঠে থেকে তা প্রতিরোধে কাজ করছি। বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজ খানের বিরুদ্ধে একাধিক মৌখিক অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন,
“গত কয়েক মাসে আমি ব্যক্তিগতভাবে অভিযান চালিয়ে একাধিক গাড়ি জব্দ করেছি, পাচারকারীদের কারাদণ্ড ও জরিমানা দিয়েছি। প্রয়োজনে আরো কঠোর হবো। পাহাড় ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারী বালুখেকোদের কোনো ছাড় নেই। এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রশাসন শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।”

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও বালুখেকোদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে বালু পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। তারা অভিযোগ করেছেন, গজনী বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজ খান এর সঙ্গে জড়িত। তাই তারা উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে তাঁকে দ্রুত বদলির দাবি জানিয়েছেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গজনী বিটে বালু পাচারের অভিযোগ

SBN

SBN

গজনী বিটে বালু পাচারের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৪:২৪:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মোঃ বেলায়েত হোসেন, শেরপুর

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী বিটের হালচাটি, মালিটিলা, গজারীচালা, মাগুনঝুড়া, দরবেশতলা ও ৫নম্বর এলাকায় প্রতিরাতে হাজার হাজার টাকার বালু পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজের প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়ে মাহিন্দ্র গাড়ি ব্যবহার করে নিয়মিত বালু পাচার করছে। চক্রটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮–১০ জন। নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে তারা কখনো রাজনৈতিক পরিচয় আবার কখনো প্রভাবশালী নেতাদের নাম ব্যবহার করে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল রাতভর মাঠে থেকে পাচার ঠেকাতে অভিযান চালাচ্ছেন। তবে প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীরা দৃঢ় অবস্থান নিলে কিছু প্রভাবশালী নেতার চাপ, হুমকি ও তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে সাংবাদিকদেরও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অবাধ বালু পাচার চলতে থাকলে গারো পাহাড় অচিরেই “নেড়া পাহাড়ে” পরিণত হবে। এর ফলে শুধু পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই ধ্বংস হবে না, সরকারও হারাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

গজনী বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দায়িত্বে থেকেও দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন। সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার নিজের মতো ছুটি কাটান, আর ওই সুযোগে বালুখেকোরা অবাধে বালু লুটে নিচ্ছে।

শিক্ষানবিশ ফরেস্ট রেঞ্জার তহিদুল ইসলাম বলেন,“আমি এই বিটে যোগদানের পর দিনরাত স্বল্পসংখ্যক স্টাফ নিয়ে লড়াই করছি। ইতিমধ্যে একটি মাহিন্দ্র জব্দ করে মামলা করেছি। মালিটিলা এলাকায় বালুভর্তি গাড়ি আটকাতে গিয়ে জীবন নিয়ে ঝুঁকি নিতে হয়েছে। তারা আমাকে অবরোধের চেষ্টা করেছিল। এরপরেও প্রতিনিয়ত পাচারকারীদের প্রতিরোধ করে যাচ্ছি। ফলে চক্রটি আমাকে টার্গেট করে মিথ্যা অভিযোগ ও হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু কোনো হুমকিতেই আমি দমে যাব না।”

রাংটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম বলেন,“গজনীতে প্রতিনিয়ত বালু পাচারের সত্যতা পাওয়া গেছে। সেইকারণে আমি নিজে রাতভর মাঠে থেকে তা প্রতিরোধে কাজ করছি। বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজ খানের বিরুদ্ধে একাধিক মৌখিক অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন,
“গত কয়েক মাসে আমি ব্যক্তিগতভাবে অভিযান চালিয়ে একাধিক গাড়ি জব্দ করেছি, পাচারকারীদের কারাদণ্ড ও জরিমানা দিয়েছি। প্রয়োজনে আরো কঠোর হবো। পাহাড় ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারী বালুখেকোদের কোনো ছাড় নেই। এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রশাসন শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।”

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও বালুখেকোদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে বালু পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। তারা অভিযোগ করেছেন, গজনী বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজ খান এর সঙ্গে জড়িত। তাই তারা উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে তাঁকে দ্রুত বদলির দাবি জানিয়েছেন।