এম.ডি.এন.মাইকেল, ঢাকা
গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান চুন্নুর অনিয়ম দুর্নীতি দেখার কেউ নাই শিরোনামে ১৪ই মে -২৪ইং তারিখে দৈনিক মুক্তির লড়াই পত্রিকার অন-লাইন ভার্সনে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান চুন্ন বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়ে এই প্রতিবেদকের মুঠোফোন ফোন করান এবং প্রতিবেদকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা ব্যক্তিরা আগামীতে গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইজ্জামান চুন্নু’র অনিয়ম দুর্নীতি সংবাদ প্রকাশিত না করার জন্য অনুরোধ জানান। অনুসন্ধানে জানা যায় চলতি অর্থ বছরে সরকারি স্থাপনা মেরামত ফান্ডে প্রায় ৪০ কোটি টাকা খরচ কমিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।গণপূর্ত অধিদপ্তরে ঢাকাসহ সারাদেশের ডিভিশনগুলোতে আনুপাতিক হারে এই টাকা কমানোর কথা থাকলেও গণপূর্ত ঢাকা-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান চুন্নুর বরাদ্দে কোন প্রকার কাটছাঁট করা হয়নি এমনকি রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের ফান্ড থেকে নিজের বরাদ্দকৃত অর্থ ঠিক রাখার পাশাপাশি প্রধান প্রকৌশলীর থোক বরাদ্দ থেকেও তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ বাগিয়ে নেওয়ার আয়োজন শেষ করেছেন বলে জানা যায়।উল্লেখ্য সাইফুজ্জামান চুন্নু ৩৩৬টি কাজের জন্য ৩১ কোটি টাকা চাহিদা দিয়েছিলেন এবং তিনি তার অদৃশ্য ক্ষমতা বলে ৩১কোটি টাকায় বরাদ্দ পেয়েছেন যাহা নিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন শতভাগ ন্যয় নিষ্ঠা ও সততার সাথে আমরা যারা নিজেদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে আসছি তারা রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত কাজে চাহিদা পত্র দিয়েও চাহিদা পত্র অনুপাতে বরাদ্দ পাইনি,কিন্তু যারা অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছে বা করছে তাদের চাহিদা পত্রে কোন প্রকার কাটছাট করা হয়নি ! গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান চুন্নু অনিয়ম দুর্নীতি বদলি বাণিজ্য ও টেন্ডার বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা গণপূর্ত অধিদপ্তরে এ যেন আর এক নব্য জিকে শামীমের আবির্ভাব যাহা দেখার কেউ নাই!
গণপূর্ত অধিদফতরে সিন্ডিকেট চক্র গড়ে তুলে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ আছে নির্বাহী প্রকোশলী সাইফুজ্জামান চুন্নুর বিরুদ্ধে। মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে আইভি বাংলো তৈরির সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চুন্নুর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও সেটি ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। গত বছরের আগস্ট মাসে এই তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করলেও এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি যাহা নিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সৎ ও দেশ প্রেমিক কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দুর্নীতি, নিয়োগ, বদলি,টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, কমিশনের বিনিময়ে কাজ ভাগিয়ে নেয়া,কাজ না করে বিল উত্তোলন করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ গণপূর্তের নির্বাহী প্রকোশলী সাইফুজ্জামান চুন্নুর বিরুদ্ধে।
বিভিন্ন অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে অল্প সময়ে গড়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ। গণপূর্তের কর্মকর্তাদের অভিযোগ গণপূর্ত অধিদফতরে সাইফুজ্জামান চুন্নুর নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠেছে। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গণপূর্ত অধিদফতর নিয়ন্ত্রণ করেন চুন্নু তার এই সকল অনিয়ম দুর্নীতির কারণে গণপূর্ত অধিদপ্তরের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের টাকায় গড়ে তুলেছেন একাধিক বাড়ি,দামী গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। চুন্নু নিজ এলাকা পটুয়াখালীতে গড়ে তুলেছেন নাহিয়ান ব্রিকস ফিল্ড, পটুয়াখালী কলেজ রোডে দুইতলা বাড়ি,পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধারান্দি গ্রামে পাঁচ একর জমি, পটুয়াখালীতে নেক্সাস নামে একটি গার্মেন্টের শোরুম, সাভারে ১০ কাঠার একটি প্লট, ঢাকার ধানমণ্ডিতে সেন্ট্রাল রোডে ও বেইলী রোডে দু’টি ফ্ল্যাট
এ ছাড়াও রয়েছে নামে বেনামে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।
অভিযোগ আছে গণপূর্ত অধিদফতর মিরপুর বিভাগে থাকাকালে সবচেয়ে বেশি কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন চুন্নু। পরবর্তীতে ঢাকা গণপূর্ত বিভাগ-৪ এসেও বড় বড় কাজ ভাগিয়ে নিচ্ছেন তিনি। এর মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। সাইফুজ্জামান চুন্নু সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর শরীফ আহমেদের কাছের লোক বলে পরিচয় দিতেন। বর্তমানে তিনি গণপূর্ত প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন হয়ে ওঠার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে। গণপূর্তের ঢাকা মেট্রো জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগসাযসে টাকার বিনিময় বিভিন্ন কাজ ভাগিয়ে নিয়ে নিজের সিন্ডিকেটের ঠিকাদারদের মাঝে ভাগ বাটোয়ারা করে দিয়ে মোটা অংকের কমিশন নিয়ে থাকেন।
অভিযোগ আছে,আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় আওয়ামীলীগ বিরোধী রাজনীতি করতেন চুন্নু কিন্তু নিজের অনিয়ম দুর্নীতিকে বাস্তবায়ন করার জন্য রাতারাতি বোল পাল্টিয়ে নিজেকে খাঁটি আওয়ামী লীগার বনে যান তিনি।এবং পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়া নিয়োগ বদলি, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ সবই করেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায় মিরপুর পাইকপাড়াস্থ পিডব্লিউডি ট্রেনিং সেন্টারের (পুরাতন) দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির পূর্ব পাশের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত কক্ষ ৭ ও ৮ দুটি কক্ষকে আইভি বাংলোতে উপান্তরের লক্ষ্যে সংস্কার/ মেরামত ও আধুনিকায়ন কাজের জন্য ২০২২-২০২৪ অর্থবছরে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কাজ সম্পন্ন না করে বরাদ্দকৃত অর্থ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে দেয়া হয়। এ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সাইফুজ্জামান চুন্নু কমিশন নেন বলে বিভিন্ন ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন,নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন ঠিকাদার বলেন সাইফুজ্জামান চুন্নু স্যারকে কমিশন না দিলে কাজ পাওয়া আর অন্ধের দেশে চশমা বিক্রি করার সমান।গণপূর্ত অধিদফতরের মিরপুর ডিভিশনের পূর্ব সার্কেলে আইভি বাংলো তৈরির সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। গত বছরের আগস্ট মাসে এই তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করে। মুহাম্মদ সোহেল হাসান গণপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে আইভি বাংলোতে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দেন।
অভিযোগ রয়েছে, কাজ না করে অর্থ উত্তোলন করার অভিযোগ তদন্ত শুরু হলে প্রভাব খাটিয়ে রাতের আঁধারে তড়িঘড়ি করে কাজ করেন সাইফুজ্জামান চুন্নু। গণপূর্ত অধিদপ্তর মিরপুর ডিভিশনের পূর্ব সার্কেলে থাকাকালীন বদলি হওয়ার আগ পর্যন্ত অর্থ উত্তোলন করেন তিনি।
গণপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকোশলী মো: সাইফুজ্জামান চুন্নুর কাছে উল্লেখিত বিষয়ে জানতে তাহার ব্যবহৃত মুঠোফোন নাম্বারে খুদেবার্তা পাঠানো হলে উত্তরে তিনি খুঁদে বার্তার মাধ্যমে এই প্রতিবেদককে জানান মিটিংয়ে আছেন।পরবর্তীতে আবারও সাইফুজ্জামান চুন্নুর মুঠো ফোনে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আপনি আমার অফিসে আসেন সামনা সামনি কথা বলব,তিনি আরও বলেন দায়িত্ব দিলেই কি নিউজ করতে হবে নাকি?নিউজ করার দরকার নাই,আমি আপনাকে একটা নাম্বার দিচ্ছি আপনি ওই নাম্বারে কথা বলেন এই বলে মুঠোফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে আরিফ নামে জনৈক এক ব্যক্তির মুঠো ফোন নাম্বার প্রতিবেদকে এসএমএস করেন।পরবর্তীতে জনৈক আরিফের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন সাইফুজ্জামান চুন্নু স্যারের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা, আগামীকাল স্যারের সাথে কথা বলে আপনাকে বিস্তারিত জানাবো এই বলে জনৈক আরিফ মুঠো ফোন সংযোগ কেটে দেন।
অনুসন্ধান চলমান,,,,