
মোনায়েম মন্ডল
গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করে না পাওয়ায় সেই স্ত্রীকে ভাড়াটে বাসায় রেখে অন্যত্র গোপনে আরেক বিয়ে করে দীর্ঘ আট মাস থেকে গা ঢাকা দিয়ে থাকার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবশেষে নিরুপায় হয়ে স্ত্রী স্বপ্না খাতুন চরিত্রহীন লম্পট স্বামী আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে কালিয়াকৈর থানায় অভিযোগ দাখিল করেছে।
প্রকাশ, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের ডাকুয়ার কুঠি গ্রামের রাজু মিয়ার কন্যা স্বপ্না খাতুনের সাথে রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার অনন্তঃনগর গ্রামের চৈতার মোড় এলাকার রফিক মিয়া ওরফে আলম মিয়ার পুত্র আশিকুর রহমানের সাথে ইসলামী শরা শরিয়ত মোতাবেক এক লক্ষ আশি হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে আনুমানিক ৯ বছর পূর্বে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে সংসারের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনই পরিবারের সকলের সাথে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রার জোড়া পাম্প এলাকার রফিক মিয়ার বাসা ভাড়ায় থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করতে থাকেন। নির্ভরশীল সুত্র জানায়, দীর্ঘ ৯ বছর যাবৎ বেতনের টাকা থেকে স্ত্রী স্বপ্না খাতুন স্বামী আশিকুর রহমানের হাতে প্রতি মাসে ১০/১২ হাজার টাকা করে কমপক্ষে ১২ লক্ষাধিক টাকা প্রদান করেছে।
এদিকে, বিয়ের পর সুন্দর ভাবে চলছিল তাদের সুখের সংসার। ২/৩ বছর যেতে না যেতেই তাদের দাম্পত্য জীবনে ঘর আলো করে আসে একটি ছেলে সন্তান। ছেলের নাম রাখা হয় সিনহাত বাবু। বর্তমানে ছেলে সিনহাত বাবুর বয়স ছয় বছর।
কিন্তু ছেলে সিনহাত বাবু জন্মের পর হতে স্বামী আশিকুর রহমানের চলাফেরায় পরিবর্তন হতে থাকে। এমতাবস্থায় আশিকুর রহমান কর্তৃক স্ত্রী স্বপ্না খাতুনের বেতনের টাকা ছাড়াও পিতার বাড়ি থেকে আরো দুই লক্ষ টাকা যৌতুক হিসেবে এনে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। যৌতুকের টাকা উদ্ধারের উদ্দেশ্যে কৌশলে বিভিন্ন ভাবে জ্বালা যন্ত্রণ করে আসতে থাকে। কিন্তু মাস শেষে স্ত্রী স্বপ্না খাতুনের বেতন পাওয়ার সময় হলে জ্বালা যন্ত্রণার মাত্রা কিছুটা কম হলেও উল্লেখিত যৌতুকের টাকা এনে না দেয়ায় আশিকুর রহমান পরবর্তিতে স্ত্রী স্বপ্না খাতুনকে বাসায় ফেলে রেখে রহস্যজনক কারণে চন্দ্রার বাসা ছেড়ে গা ঢাকা দেয়। এভাবে কমপক্ষে আট মাস অতিক্রম হয়ে যায় বটে স্ত্রী স্বপ্না খাতুন খোঁজ নিয়ে জানতে পারে আশিকুর রহমান প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়েই গোপনে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে।
মজার ব্যাপার হলো- আশিকুর রহমান গা ঢাকা দেয়ার পর দীর্ঘ আট মাস যাবত তার সন্তান সিনহাত বাবুসহ তার স্ত্রীকে কোন প্রকার ভরণ পোষণ না দেয়া বা খোঁজ খবরও নিচ্ছে না। কিন্তু একদিন আশিকুর রহমানের কাছে স্ত্রী স্বপ্না খাতুন মোবাইল ফোন করে ভরণ পোষণ দাবী করলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকী ধামকি প্রদান করে।
ফলে স্বপ্না খাতুন বিষয়টি এলাকার গন্যমান্য লোকজনদের জানিয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। পরে গতকাল ১৭ জুন’২০২৫ ইং তার ছোট দুলাভাই মশিউর রহমানের মাধ্যমে মানবাধিকার ও নারী সংগঠন দুর্বার নেটওয়ার্ক ও নারী শক্তির গাইবান্ধা অফিসে উপস্থিত হয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য অভিযোগ করেছে। উক্ত অফিসে উপস্থিত নারী নেত্রী মাজেদা খাতুন কল্পনা জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। উভয় পক্ষকে ডেকে একত্র করে যাতে কোন পক্ষ হয়রানির শিকার না হয় তা সমাধান করে দিবো। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আরেক নারী নেত্রী রাবেয়া বেগম গিনি। তিনিও বলেন, আমার সাথে মোবাইলে আশিকুর রহমানের কথা হয়েছে। সে বিষয়টি সমাধানের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে। আমরা দিনক্ষণ ঠিক করে সমাধান করে দেয়ার ব্যবস্থা করবো।
মুক্তির লড়াই ডেস্ক : 

























