‘উন্মুক্ত সুযোগগুলো ভাগ করা ও একসাথে একটি ভালো জীবন তৈরি করা’ শীর্ষক থিমকে কেন্দ্র করে, চতুর্থ চীন আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা ১৩ এপ্রিল শুরু হয়েছে। চীনের হাইনান প্রদেশে আয়োজিত এই মেলা চলবে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত।
এবারের মেলার একটি বিশেষ অংশ হলো ‘বিশ্বের নতুন পণ্য পরিকল্পনা’। ২৮টি সুপরিচিত আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সংস্থা এবং ৩৮টি ব্রান্ডের ১১৫টি নতুন পণ্য এবারের মেলায় স্থান পায়। এতে ফ্যাশনাবল পারফিউম, প্রসাধনী, গয়না, বিশ্ব-বিখ্যাত ওয়াইন, হাই-এন্ড ফুড, ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি, বায়োটেকনোলজি ও ট্রেন্ডি খেলনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নতুন পণ্য নিয়ে এসেছে। ল্যুদি বাণিজ্যিক বন্দর গোষ্ঠী ৩০টি দেশের প্রায় একশত ব্রান্ডের ২ হাজারেরও বেশি পণ্য নিয়ে ল্যুদি গ্লোবাল প্যাভিলিয়ন দিয়েছে। এর মধ্যে সিরিয়ার প্রস্ফুটিত কাচ পণ্য, কানাডিয়ান দাগযুক্ত শামুকের জীবাশ্ম, মঙ্গোলিয়ান ভেড়ার সসেজ, পাকিস্তানি উটের চামড়ার বাতি, দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে তৈরি পুঁতির স্ট্রিং এবং উজবেকিস্তানের হাতে তৈরি ক্রোশেট কোট আছে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও এশিয়ার বৃহত্তম ভোগ্যপণ্য মেলা হিসেবে এবারের মেলাস্থলের আয়তন ১.২৮ লাখ বর্গমিটার। সমুদ্র এলাকাসহ প্রদর্শনীর আয়তন পূর্ববর্তী মেলার আয়তনকে ছাড়িয়ে গেছে।
৭১টি দেশ ও অঞ্চলের ৪ হাজারেরও বেশি ব্রান্ড এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করছে। ব্রিটেন, মঙ্গোলিয়া ও মালয়েশিয়া প্রথমবারের মতো এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করছে। বিশ্বের ৫০০টি শীর্ষ কোম্পানির মধ্যে ৫৭টি এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করছে। চিকিত্সা সরঞ্জাম, পার্ফিউমেন্ট ও মেকআপ এবং বৈদ্যুতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ ৮০টিরও বেশি বিদেশী ও দেশীয় ব্রান্ড এবারের মেলায় স্থান পেয়েছে।
এবারের মেলার অতিথিদেশ আয়ারল্যান্ডের ২৯টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার ৫০টি ব্রান্ডের ২ শতাশিক পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে। তাদের প্রদর্শনী হলের ঐতিহ্যবাহী দুর্গ আকৃতি, হুইস্কি ওয়াইনারি, শস্যাগার বাজার, প্রযুক্তি বিনিয়োগ ও শিক্ষা প্রদর্শনী এলাকা, গল্ফ অভিজ্ঞতা এলাকা এবং ফ্যাশন ও সাংস্কৃতিক করিডোরসহ বিভিন্ন দিক আয়ারল্যান্ডের ঐতিহ্যগত বৈশিষ্ট্যময়। প্রদর্শনী হলের কেন্দ্রীয় মঞ্চে আইরিশ স্টেপ নৃত্য পরিবেশন করা হয় নিয়মিত।
হাইনান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর ছেন হুয়াই ইউ বলেন, এবারের মেলায় ৫৫ হাজারেরও বেশি ক্রেতা ও দর্শককে আকৃষ্ট করবে। হাইনানের ৫৯টি দেশের জন্য ভিসামুক্ত নীতিতে ব্রিটেন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানসহ ১০টিও বেশি দেশ ও অঞ্চলের ক্রেতা ও বিশ্বের শতাধিক শীর্ষ স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবারের মেলায় আলোচনা করবেন ও চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
হাইনান আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যুরোর পরিচালক থাং হুয়া বলেন, এবারের মেলায় প্রধান প্রদর্শনী ক্ষেত্র ছাড়াও তিনটি শাখা প্রদর্শনী ক্ষেত্র আছে। এবারের মেলা অনলাইন ও অফলাইনের স্থায়ী প্রদর্শনী প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। হাইনানের অবাধ বাণিজ্যিক বন্দরের কর সুবিধা ও সুবিধাজনক শুল্ক ছাড়পত্রের নীতিতে বন্ডেড ‘পণ্য প্রদর্শনী ও অন্তঃদেশীয় ই-কমার্স’ মডেলের মধ্য দিয়ে, একটি স্থায়ী বাজারায়নের মেলা গড়ে তোলা হবে।
অংশগ্রহণকারী ভক্সওয়াগেন গ্রুপের চীনা অংশের ভাইস প্রেসিডেন্ট চাং লান বলেন, গ্রুপটি চীনা বাজারের জন্য ২০৩০ সালের উন্নয়ন-পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। আগামী তিন বছরে গ্রুপটি চীনা বাজারে ৪০ ধরনেরও বেশি গাড়ি নিয়ে আসবে। এর মধ্যে অর্ধেক হবে নতুন জ্বালানিচালিত। ২০৩০ সালে গ্রুপটি ৩০টিরও বেশি বৈদ্যুতিক মডেল বাজারে আনবে। বস্তুত, আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা বিদেশী কোম্পানিগুলোর কাছে ক্রমশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
সূত্র: চায়না মিডিয়া গ্রুপ।