
মোঃ সোহেল আমান, রাজশাহী ব্যুরো
থানা হেফাজতে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মিন্টু রহমান, চারজন এস আই, দুইজন কনস্টেবলসহ মোট ১১জনকে বিবাদী করে জান্নাতুল ফেরদাউস নামে এক নারী আদালতে মামলার আবেদন করেছেন।
নির্যাতনের শিকার তৌফিকুল ইসলাম বাদীর স্বামী। মামলার নথী সুত্রে ও বাদীর বক্তব্যে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানাধীন রানিহাটী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুরহাট-কাইঠাপাড়া থেকে গ্রেপ্তারের পর মো. তৌফিকুল ইসলামকে বিবাদীরা থানার এক কক্ষে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। এই অভিযোগে জান্নাতুল ফেরদাউস আদালতে মামলার আবেদন করেছেন।
আবেদনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান, উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কবির হোসেন, দারেস আলী, আজিম, সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) আনোয়ারসহ ১১জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক, আবেদনকারী জান্নাতুল ফেরদাউসের আবেদন গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে মামলাটি আদেশের জন্য অপেক্ষমান রেখেছেন আদালত। বাদীর আইনজীবী মো. তোহরুল ইসলাম (পিন্টু) এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ১৩ই এপ্রিল সকালে সাড়ে ১০টার দিকে ভিকটিম তৌফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মূলে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সদর মডেল থানার পুলিশের একটি দল।
গ্রেপ্তার করার সাথে সাথেই এসআই কবিরের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা তৌফিকুল ইসলামকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। নিষেধ করলে তার মা ও বাদী স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভিতর ফেলে দেয়।
এতে দুজনেই জখম হন। পুলিশ তাকে গাড়িতে উঠিয়ে অমানবিক ভাবে লাথি-কিল, ঘুষি মারতে থাকে এবং বলে যে, থানায় চল তোকে জীবনের মত শেষ করে ফেলবো। থানায় নেয়ার পর ওসি মিন্টু রহমান হুকুম দিয়ে বলে তাকে আমাদের গোপন ঘরে নিয়ে যা, অর্থাৎ টর্চার সেলে নিয়ে যা।
হুকুম পাওয়ার পর এসআই কবিরসহ ৫-৬ জন মারতে মারতে থানার ভিতর টর্চার সেল নামক ঘরে নিয়ে যায়। এ সময় ভিকটিমের বাম পায়ের বাশিতে আঘাত করে ভেঙে ফেলে। পরে তাকে আদালতে চালান করে।
ওই দিনই তাকে জামিন দেয় আদালত। জামিন পাওয়ার পর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। চিকিৎসক তার পায়ের এক্স-রে করার পর জানা যায় বাম পায়ের হাড় ভেঙে গেছে।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. তোহরুল ইসলাম (পিন্টু) বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা হেফাজতে মো. তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবককে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন করা হয়।
এ ঘটনায় তৌফিকুল ইসলামের স্ত্রী বাদি হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলার আবেদন করেছেন। বাদী আদালতে বক্তব্য শ্রবণ করেন।
শুনানি শেষে মামলাটি আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন আদালত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মিন্টু রহমান বলেন, যাকে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে তিনি গ্রেপ্তারী পরোয়ানাভুক্ত আসামি ছিলেন।
নিয়ম অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। নির্যাতনের অভিযোগ মিথ্যা। আদালতের মামলার আবেদনের বিষয়টি জানতে পারার পর আমরা বাদির সঙ্গে কথা বলেছি।
বাদি মামলা প্রত্যাহার করে নিবে।উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান সম্প্রতি সিলেট রেঞ্জে বদলী হয়েছে।
এদিকে আর একজন ভুক্তভোগী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার মোছাঃ রিজিয়া আমনের বাড়িতে পরপর দুইবার বোমা হামলার পরও গোমস্তাপুর থানার ওসি চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ মামলা না নিয়ে রিজিয়া আমান ও তার ছেলেকে মীমাংসার কথা বলে মীমাংসায় রাজি না হওয়ার কারণে বিভিন্নভাবে গোমস্তাপুর থানার ওসি জুবায়ের আহমেদ ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে এবং নাচোল থানার ওসির সাথে হাত মিলিয়ে রিজিয়া আমানের বারো বিঘা জমির ধান রাতের আঁধারে কেটে নিয়ে যাওয়ার পরও পুলিশকে বলার পরও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেই নি নাচোল থানার ওসি তারিকুর সরকার মীমাংসার কথা বলে কত টাকা ঘুষ খেলে বাদিকে এই ধরনের কথা বলে তারপরও কোর্টে মামলা চলছে গোমস্তাপুর থানার ওসি চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ ও নাচোল থানার ওসি তারেকুর সরকারের ভয়ে রিজিয়া মানের পরিবার বাড়িতে থাকতে পায় না। রিজিয়া আমানের বক্তব্য অনুযায়ী গোমস্তাপুর থানার ওসি ও নাচোল থানার ওসির প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।
মুক্তির লড়াই ডেস্ক : 


























