
মোহাম্মদ আজগার আলী, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অবহেলায় হাসপাতালের বেডেই মারা গেলেন দুলাল নামের এক যুবক। এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও নার্সের শাস্তি দাবি।
আজ (০১ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৭ টায় উপজেলার ঘাটপাড়া গ্রামের মোস্তাব এর পূত্র দুলাল (৪০) নামে এক রোগী বুকের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেন। পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার পর রোগীর স্বজনরা ডাক্তার ও নার্স এর খোজ করলে সেখানে থাকা কর্তব্যরত নার্স রোগীর স্ত্রী সাবিনা আক্তারের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। রোগীর নিকট না গিয়ে সেই নার্স ধমক দিয়ে বলেন, আপনারা ডাক্তার খুজে আনেন। আর না পোষালে হাসপাতাল থেকে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই দুলাল চিকিৎসা অভাবে হাসপাতালের বেডেই মারা যান। নার্স ও ডাক্তারের চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রোগীর আত্মীয় স্বজন, এলাকাবাসী ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত লোকজন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন। হাসপাতাল চত্বরে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন।
হাসপাতালে আগত বিভিন্ন ব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মশিউর রহমান নিয়মিত অফিসে আসেননা। তিনি সিআরপিসি পদে থাকা সঞ্জয় কুমার ও মালি মনিকে দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করেন। হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সরা প্রায় রোগীদের সাথে দূর ব্যবহার করেন। রোগীদের ঠিকমতো ঔষধ দেন না। আমরা ডাক্তার মশিউর, সঞ্জয় কুমার ও মালি মনিসহ চিকিৎসায় অবহেলাকারী ডাক্তার ও নার্সের বদলি এবং শাস্তি চাই।
এদিকে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে এসে পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্যানেল মেয়র মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও পৌর মেয়র মাহমুদ আলম বলেন, নার্স ও ডাক্তার ঠিকমতো চিকিৎসা দিলে আজকে দুলাল মারা যেতোনা। আমরা এসে জানতে পারলাম চিকিৎসা অবহেলায় রোগীটি মারা গেছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছে ঘটনার সুষ্টু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে। তবে হাসপাতালে ঔষধ কোম্পানীর লোকজনের উৎপাত, নার্সদের খারাপ ব্যবহার এবং ডাক্তাররা ভালো করে রোগী দেখেনা এ বিষয়গুলো সমাধানের জন্য আমরা ডাক্তারের সাথে কথা বলবো।
হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা ডাঃ সবুজ বলেন, আমরা ইউএইচএন্ডএফপিও ডাক্তার মশিউর রহমান ও সিভিল সার্জন স্যারকে ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছি। তারা বলেন, কর্তব্য অবহেলাকারী ব্যক্তিদের সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে এবং একটি দতন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।