সম্প্রতি ফিজির প্রধানমন্ত্রী সিতিভেনি রাবুকা চায়না মিডিয়া গ্রুপ সিএমজিকে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি জানান, এবারের বৈঠক তাঁর জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বের অন্যতম মহান নেতার সঙ্গে সংলাপ করার সুযোগ পেয়ে তিনি আনন্দিত। পাশাপাশি, বৈঠকের পরিবেশও অনেক আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সিতিভেনি রাবুকা জানান, তিনি প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বই ‘দারিদ্র্য মোকাবিলা’ পড়েছেন। যাতে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের তরুণ বয়সে সিপিসি ক্যাডারে দায়িত্ব গ্রহণের সময় চীনের কিছু দরিদ্র গ্রাম ও অঞ্চলে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা লেখা রয়েছে। তিনি চীন সফরের প্রথমে ইউননান প্রদেশের গ্রামের দারিদ্র্যবিমোচনের সুফল দেখেছেন। স্থানীয় মানুষদের সুখী জীবন যাপন প্রত্যক্ষ করছেন। তারা সুষ্ঠুভাবে দারিদ্র্য বিমোচন বাস্তবায়ন করেছে।
উল্লেখ্য, সিতিভেনি রাবুকা ১৯৯৪ সালে প্রথম চীন সফর করেন। ৩০ বছর পর আবারও চীন সফরে তিনি প্রথম ইউননান প্রদেশের মা লি ফো কাউন্টিতে যান। মা লি ফো আগে চীনের অন্যতম দরিদ্র অঞ্চল ছিল। বিশেষ নীতির সমর্থন ও ধারাবাহিক শিল্প উন্নয়নের কারণে ওই কাউন্টি ২০২০ সালে চরম দারিদ্র্য দূর করেছে।
তিনি মা লি ফো’র গ্রামগুলো পরিদর্শন করেছেন, চীনের গ্রামীণ পুনরুত্থান কৌশল বোঝার চেষ্টা করেছেন এবং স্থানীয় বৈশিষ্ট্যময় কৃষি ও জাতিগত সংস্কৃতি রক্ষার বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছেন।
চীন-ফিজি সম্পর্ক অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা একই অঞ্চল থেকে এসেছি। আমরা পরস্পরকে সম্মান করি, পারস্পরিক পার্থক্যকেও সম্মান করি। দু’পক্ষ সহযোগিতার খাত সম্প্রসারণ করে অভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়ন করছে।”
ফিজির প্রধানমন্ত্রী চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ার উচ্চ মানের মূল্যায়ন করেছেন। তিনি বলেন, একটি দেশের ইচ্ছাশক্তি শক্তিশালী হলে নিজের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারে।
ফিজির প্রধানমন্ত্রী আগে আরেকটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘তাকে পক্ষ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছিল। হয় চীনের সাথে, অথবা অন্য দেশের পক্ষে দাঁড়াতে হবে।’ এ বিষয়ে তিনি জানান, ফিজি চীনের বন্ধু হিসেবে তাতে জড়াতে চায় না। ফিজি অন্য দেশেরও বন্ধু। কিছু দেশ হয়তো চীনের বন্ধু নয়। সেসব দেশ তাঁর অভিমত পছন্দ নাও করতে পারে এবং এ কারণে তারা ফিজিকে একঘরে করতে পারে! তবে তাতে ফিজির মানুষ জীবনধারণ করতে পারবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ প্রতিষ্ঠা, বিশেষ করে চীন-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশের অভিন্ন কল্যাণের সমাজ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। এ ধারণাকে ফিজি প্রধানমন্ত্রী অনেক সমর্থন করেন। গ্রামাঞ্চলে বড় হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য তিনি প্রকৃতির সঙ্গে অনেক ঘনিষ্ঠ। প্রকৃতি শান্তির কথা বলে। এ ধরনের পরিবেশে বড় হলে, অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গঠনের ধারণা গভীর হয়।
চলতি বছর গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী। সাক্ষাৎকারে তিনি চীনকে শুভকামনা জানান। তিনি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ৭৫ বছরের উজ্জ্বল পথে এগিয়েছে। তিনি এজন্য অভিনন্দন জানান। আগামী বছর ফিজি-চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী। ২০ অগাস্ট বিকালে ফিজির প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে, চীনের প্রেসিডেন্টকে আগামী বছর ফিজি সফর করার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি যৌথভাবে ফিজি-চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উৎযাপনের আশা করেন।
সূত্র: আকাশ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।