
সম্প্রতি কুক দ্বীপপুঞ্জের প্রধানমন্ত্রী মার্ক ব্রাউন নবম এশিয়ান শীতকালীন গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চীন সফর করেন। চায়না মিডিয়া গ্রুপ-সিএমজিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তাঁর দেশ চীনের সাথে সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দশ বছরে, মার্ক ব্রাউন এই প্রথমবারের মত চীন সফর করেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কুক-চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রায় ৩০ বছরে, তিনি হলেন কুক দ্বীপপুঞ্জের চীন সফর করা চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী। এটি তাঁর দেশ এবং চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দু’দেশের সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কের চুক্তি দু’দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতার একটি কাঠামো নির্ধারণ করেছে, এতে দু’দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় এবং যৌথ উন্নয়নের অগ্রাধিকার বিষয় রয়েছে।
চীন সফরকালে দু’দেশ বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী মার্ক ব্রাউন বলেন, এ সব চুক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। প্রথমত, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্র। আজ, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রযুক্তির অনেক ক্ষেত্রে চীন বিশ্বে শীর্ষস্থানীয়। তাঁর দেশ আশা করে যে, এই অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতার মাধ্যমে , চীনের সমমনা প্রতিষ্ঠান এবং গবেষণা সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করে কুক দ্বীপপুঞ্জের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা যাবে। এটি তাদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান গভীর সমুদ্র খাতে, যা কুক দ্বীপপুঞ্জের অর্থনীতিতে একটি উদীয়মান শিল্প। তিনি এটা নিয়ে খুবই আশাবাদী।
মার্ক ব্রাউন বলেন, এবার সফরে চীনের যে শহর তিনি সফর করেছেন, তা কুক দ্বীপপুঞ্জের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, বিশেষ করে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, প্রযুক্তিগত স্থানান্তর ক্ষেত্রে। শাংহাই চিয়াও থুং বিশ্ববিদ্যালয়ে, তিনি গভীর জলের সমুদ্র পরীক্ষা পুল পরিদর্শন করেছেন। বিশ্বে এই ধরণের মাত্র তিনটি পরীক্ষা পুল রয়েছে এবং এটিই সবচেয়ে বড়। এটি প্রকৃত সমুদ্র পরিবেশের অনুকরণ করতে পারে এবং জাহাজের কর্মক্ষমতা পরীক্ষা, সামুদ্রিক জলজ বা মৎস্য পালন পরীক্ষা ইত্যাদির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। জীবিকা নির্বাহে সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল কুক দ্বীপপুঞ্জের মতো একটি দেশের জন্য, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অতএব, তিনি যেখানেই যান, হারবিন শহরসহ, ভবিষ্যতের সহযোগিতার জন্য ভিত্তি স্থাপন এবং বীজ বপন করছেন এবং আগামী কয়েক মাস বা বছরগুলোতে তাদের সহযোগিতার ফল কাটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, একটি ছোট দেশ হিসেবে, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে কুক দ্বীপপুঞ্জের প্রতি চীনের শ্রদ্ধা তারা সবসময় লালন করে আসছেন। তাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি চীনের পূর্ণ শ্রদ্ধার কারণেই অন্যান্য দেশও তাদের অনুসরণ করেছে এবং কুক দ্বীপপুঞ্জের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। অতএব, চীনের শ্রদ্ধার জন্য তারা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ এবং তারা সর্বদা চীনকে একই সম্মান দেয়। দেশগুলোর আকার যাই হোক না কেন, তাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা সর্বদা সুসম্পর্ক গড়ে তোলার মূল ভিত্তি।
সূত্র: শুয়েই- হাশিম-আকাশ,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।