চীনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং ১৬ জানুয়ারি বিকেলে বেইজিংয়ের গণ-মহাভবন সফররত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
লি ছিয়াং বলেছেন, চীন ও শ্রীলঙ্কার ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব হাজার বছরের পুরানো। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬৮ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের পরীক্ষায় টিকে আছে এবং সর্বদা সুস্থ ও স্থিতিশীলভাবে বিকশিত হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকের সঙ্গে সি চিন পিং আলোচনা করেছেন এবং আলোচনায় চীন-শ্রীলঙ্কা সম্পর্কের উন্নয়ন ও সহযোগিতা আরও গভীর করার জন্য নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। প্রেসিডেন্টদ্বয়ের সম্পাদিত কৌশলগত ঐকমত্য বাস্তবায়ন, ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব অব্যাহত রাখা, রাজনৈতিক পারস্পরিক আস্থা গভীর করা, বাস্তব সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা, আন্তরিক পারস্পরিক সহযোগিতামূলক চীন-শ্রীলঙ্কা কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের ধারাবাহিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করার জন্য চীন শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।
লি ছিয়াং আরো বলেন, চীন শ্রীলঙ্কার সাথে সারিবদ্ধ উন্নয়ন কৌশল জোরদার করতে, যৌথভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের’ উচ্চমানের নির্মাণ করতে, কলম্বো বন্দর শহর এবং হাম্বানটোটার ব্যাপক উন্নয়নসহ নানা সহযোগিতা প্রকল্প উন্নীত করতে এবং সবুজ উন্নয়ন, ডিজিটাল অর্থনীতি, কৃষি ও সমুদ্রসহ নানা খাতের সহযোগিতা সম্প্রসারণ করতে চায়। চীন শ্রীলঙ্কা থেকে আরও উচ্চমানের পণ্য আমদানি করতে এবং সক্ষম চীনা কোম্পানিগুলিকে শ্রীলঙ্কায় বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবে। চীন আশা করে যে, শ্রীলঙ্কা ব্যবসায়িক পরিবেশকে সর্বোত্তম করে তুলবে এবং চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য আরও সুবিধা ও নিরাপত্তার দেবে। উভয় পক্ষের সংস্কৃতি, পর্যটন, যুব, ক্রীড়া, গণমাধ্যম এবং স্থানীয় বিনিময় ও সহযোগিতা আরও গভীর করা উচিত। চীন সত্যিকারের বহুপাক্ষিকতা অনুশীলন এবং অভিন্ন স্বার্থ রক্ষার জন্য শ্রীলঙ্কাসহ এশীয় দেশগুলোর সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক।
দিশানায়েকে বলেন যে, চীন সরকার জনকল্যাণে অনেক গুরুত্ব দিয়েছে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতার নীতির ভিত্তিতে নানা দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে, যা বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। শ্রীলঙ্কা এর প্রশংসা করে। শ্রীলঙ্কা ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্ব স্থায়ী ও শক্তিশালী। শ্রীলঙ্কার জাতীয় স্বাধীনতা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন অর্জনে মূল্যবান সহায়তার জন্য শ্রীলঙ্কা চীনকে ধন্যবাদ জানায়। শ্রীলঙ্কা সরকার চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে অনেক গুরুত্ব দেয়, সর্বদা এক-চীন নীতি মেনে চলে এবং প্রেসিডেন্ট সি’র প্রস্তাবিত তিনটি প্রধান বৈশ্বিক উদ্যোগের প্রশংসা ও সমর্থন করে। শ্রীলঙ্কা দারিদ্র্য বিমোচন এবং শিল্প উন্নয়নে চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অবকাঠামো নির্মাণসহ নানা খাতের বাস্তব সহযোগিতায় ভালো ফলাফল প্রচার করতে, আন্তর্জাতিক বহুপাক্ষিক বিষয়ে যোগাযোগ ও সহযোগিতা জোরদার করতে এবং শ্রীলঙ্কা-চীন সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় লিখতে চায়।
সূত্র:লিলি-তৌহিদ-তুহিনা,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।