ঢাকা ১১:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশে নড়েচড়ে উঠলেন ডিস : চৌদ্দগ্রামে ভেকু জব্দ করলেন ইউএনও Logo গোবিন্দগঞ্জে ২৪ কেজি গাঁজাসহ পাথরবোঝাই ট্রাক জব্দ : চালক ও হেলপার গ্রেপ্তার Logo অপহরণের ৫ বছর পর বাবা–মায়ের কাছে ফিরলেন সামাউন Logo একই অঙ্গে বহুরূপি ছাগল চোর যুবলীগ নেতা হৃদয় কি আইনের উর্ধ্বে Logo মুরাদনগরে একই রশিতে মা ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা Logo পাথরঘাটায় ৯০ কেজি হরিণের মাংস সহ ১ টি বোট জব্দ Logo কোটালিপাড়া থেকে ফরিদগঞ্জে সমকামিতার টানে ‘বিয়ে’র দাবিতে কিশোরীর (ভিডিও) Logo ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে’র ‘হাল ছেড়ে না-দেওয়ার’ ক্রীড়া চেতনা Logo মহাকাশকেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন শেনচৌ-২০ মিশনের তিন নভোচারী

ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে’র ‘হাল ছেড়ে না-দেওয়ার’ ক্রীড়া চেতনা

  • আন্তর্জাতিক:
  • আপডেট সময় ০৪:১৯:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে ছিলেন অলিম্পিক গেমসে চীনের চাং জাতির প্রথম স্বর্ণপদক জয়ী খেলোয়াড়। তৃণভূমি মেষপালক মেয়ে থেকে অলিম্পিক স্বর্ণপদক পাওয়া পর্যন্ত, তাঁর প্রতিটি ধাপ ছিল অসাধারণ। তিনি চারবার অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করেছেন। নিজের দৃঢ়তা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মঞ্চে, যদি মনে স্বপ্ন থাকে এবং সবসময় হাল ছেড়ে না-দেওয়ার মানসিকতা থাকে, তাহলে অবশেষে অবশ্যই একটি দারুণ উচ্চতায় পোঁছানো যাবে। তার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় দেশের নানা জাতির তরুণতরুণীরা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং স্বপ্নের পিছনে ছুটে চলেছেন।

১৯৯০ সালের নভেম্বরে, চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় ছিংহাই প্রদেশের একটি সাধারণ চাং জাতি পশুপালক বা রাখাল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে। চাং ভাষায় তার নামের অর্থ- ‘সৌভাগ্যবান ও সুখী’। ছোটবেলায় ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে মাঝে মাঝে তৃণভূমিতে বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়তেন। নীল আকাশ, অসীম বিস্তৃত তৃণভূমি ও স্বাধীনতা হচ্ছে ছোটবেলায় তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

১৪ বছর বয়সে হাইলেই চাং স্বায়ত্তশাসিত প্রিফেকচারের চতুর্থ মিডল স্কুলের গেমসে, ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে নারীদের দীর্ঘ দূরত্বে দৌড় প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। এরপর তিনি ক্রীড়া স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।

ক্রীড়া স্কুলে তিনি রেস ওয়াকিং-এ প্রথম অংশগ্রহণের সময় সেই খেলার কৌশল জানতেন না। প্রতিদিন প্রশিক্ষণের পর সাড়া শরীরে ব্যথা হত। প্রচণ্ড ব্যথায় বিছানায় শুয়ে থাকতেন, নড়তেও পারতেন না। তবে, তিনি কখনও অভিযোগ করেননি, বরং অন্যদের চেয়ে তিনি আরও কঠোরভাবে প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। তাঁর অধ্যাবসায় ও অব্যাহত প্রয়াস অবশেষে সাফল্যমণ্ডিত হয়। ২০০৯ সালে তিনি চীনের রেস ওয়াকিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অসাধারণ ফলাফল অর্জন করেন। এ কারণে, তিনি জাতীয় রেস ওয়াকিং দলে প্রবেশের সুযোগ লাভ করেন।

২০২১ সালের লন্ডন অলিম্পিক গেমসে, প্রথম অলিম্পিক গেমসে অংশ নেওয়া ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে নারীদের ২০ কিলোমিটার প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদক পান এবং এশিয়ার রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। তিনি চীনা রেস ওয়াকিং দলের জন্য সম্মান বয়ে আনেন।

তবে, একটি বিশেষ ঘটনা ঘটেছে। দশ বছর পর, তখনকার চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপের ডোপিং ইস্যুর কারণে, তাদের ফলাফল বাতিল হয়ে যায়। এজন্য তৃতীয় স্থান অর্জনকারী ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে লন্ডন অলিম্পিক গেমসে নারীদের ২০ কিলোমিটারের প্রতিযোগিতার স্বর্ণপদক লাভ করেন।

২০২১ সালের লন্ডন অলিম্পিক গেমসের পর, ইনজুরি-সহ একাধিক সমস্যা থাকলেও, ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে রিও অলিম্পিক গেমস, টোকিও অলিম্পিক গেমস এবং ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করেছেন। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি নিজস্ব কর্মকাণ্ডে ‘হাল ছেড়ে না-দেওয়ার’ ক্রীড়া চেতনা ব্যাখ্যা করে আসছেন।

রেস ওয়াকিং ক্রীড়ার সঙ্গে থাকার ২০ বছরে ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে অধ্যবসায়ের চেতনায় আন্তর্জাতিক ও দেশীয় অঙ্গনে ২০ বারেও বেশি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় নানা জাতির আরও তরুণ-যুবক ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ করছেন এবং তাদের স্বপ্ন পূরণ করছেন। গত বছর ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে ‘জাতিগত একতা ও অগ্রগতির জাতীয় মডেল’ সম্মানসূচক টাইটেল অর্জন করেছেন। তিনি বলেন, তিনি অবশ্যই অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে যাবেন। জাতিগত ঐক্য রক্ষা ও ক্রীড়ার উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়ার জন্য আরও বেশি কাজ করবেন।

সূত্র : আকাশ-তৌহিদ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।

ট্যাগস

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

SBN

SBN

ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে’র ‘হাল ছেড়ে না-দেওয়ার’ ক্রীড়া চেতনা

আপডেট সময় ০৪:১৯:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে ছিলেন অলিম্পিক গেমসে চীনের চাং জাতির প্রথম স্বর্ণপদক জয়ী খেলোয়াড়। তৃণভূমি মেষপালক মেয়ে থেকে অলিম্পিক স্বর্ণপদক পাওয়া পর্যন্ত, তাঁর প্রতিটি ধাপ ছিল অসাধারণ। তিনি চারবার অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করেছেন। নিজের দৃঢ়তা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মঞ্চে, যদি মনে স্বপ্ন থাকে এবং সবসময় হাল ছেড়ে না-দেওয়ার মানসিকতা থাকে, তাহলে অবশেষে অবশ্যই একটি দারুণ উচ্চতায় পোঁছানো যাবে। তার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় দেশের নানা জাতির তরুণতরুণীরা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং স্বপ্নের পিছনে ছুটে চলেছেন।

১৯৯০ সালের নভেম্বরে, চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় ছিংহাই প্রদেশের একটি সাধারণ চাং জাতি পশুপালক বা রাখাল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে। চাং ভাষায় তার নামের অর্থ- ‘সৌভাগ্যবান ও সুখী’। ছোটবেলায় ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে মাঝে মাঝে তৃণভূমিতে বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়তেন। নীল আকাশ, অসীম বিস্তৃত তৃণভূমি ও স্বাধীনতা হচ্ছে ছোটবেলায় তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

১৪ বছর বয়সে হাইলেই চাং স্বায়ত্তশাসিত প্রিফেকচারের চতুর্থ মিডল স্কুলের গেমসে, ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে নারীদের দীর্ঘ দূরত্বে দৌড় প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। এরপর তিনি ক্রীড়া স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।

ক্রীড়া স্কুলে তিনি রেস ওয়াকিং-এ প্রথম অংশগ্রহণের সময় সেই খেলার কৌশল জানতেন না। প্রতিদিন প্রশিক্ষণের পর সাড়া শরীরে ব্যথা হত। প্রচণ্ড ব্যথায় বিছানায় শুয়ে থাকতেন, নড়তেও পারতেন না। তবে, তিনি কখনও অভিযোগ করেননি, বরং অন্যদের চেয়ে তিনি আরও কঠোরভাবে প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। তাঁর অধ্যাবসায় ও অব্যাহত প্রয়াস অবশেষে সাফল্যমণ্ডিত হয়। ২০০৯ সালে তিনি চীনের রেস ওয়াকিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অসাধারণ ফলাফল অর্জন করেন। এ কারণে, তিনি জাতীয় রেস ওয়াকিং দলে প্রবেশের সুযোগ লাভ করেন।

২০২১ সালের লন্ডন অলিম্পিক গেমসে, প্রথম অলিম্পিক গেমসে অংশ নেওয়া ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে নারীদের ২০ কিলোমিটার প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদক পান এবং এশিয়ার রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। তিনি চীনা রেস ওয়াকিং দলের জন্য সম্মান বয়ে আনেন।

তবে, একটি বিশেষ ঘটনা ঘটেছে। দশ বছর পর, তখনকার চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপের ডোপিং ইস্যুর কারণে, তাদের ফলাফল বাতিল হয়ে যায়। এজন্য তৃতীয় স্থান অর্জনকারী ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে লন্ডন অলিম্পিক গেমসে নারীদের ২০ কিলোমিটারের প্রতিযোগিতার স্বর্ণপদক লাভ করেন।

২০২১ সালের লন্ডন অলিম্পিক গেমসের পর, ইনজুরি-সহ একাধিক সমস্যা থাকলেও, ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে রিও অলিম্পিক গেমস, টোকিও অলিম্পিক গেমস এবং ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করেছেন। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি নিজস্ব কর্মকাণ্ডে ‘হাল ছেড়ে না-দেওয়ার’ ক্রীড়া চেতনা ব্যাখ্যা করে আসছেন।

রেস ওয়াকিং ক্রীড়ার সঙ্গে থাকার ২০ বছরে ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে অধ্যবসায়ের চেতনায় আন্তর্জাতিক ও দেশীয় অঙ্গনে ২০ বারেও বেশি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় নানা জাতির আরও তরুণ-যুবক ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ করছেন এবং তাদের স্বপ্ন পূরণ করছেন। গত বছর ছিয়ে ইয়াং সেন চিয়ে ‘জাতিগত একতা ও অগ্রগতির জাতীয় মডেল’ সম্মানসূচক টাইটেল অর্জন করেছেন। তিনি বলেন, তিনি অবশ্যই অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে যাবেন। জাতিগত ঐক্য রক্ষা ও ক্রীড়ার উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়ার জন্য আরও বেশি কাজ করবেন।

সূত্র : আকাশ-তৌহিদ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।