
শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ
➡️ সামান্য বৃষ্টিতেই নিচু এলাকার ঘরবাড়িতে ওঠে ময়লা পানি।
➡️ বিভিন্ন এলাকায় ড্রেন ও প:নিষ্কাশনের অভাব।
➡️ অপরিষ্কার ড্রেনেজ ব্যবস্থা।
➡️ পৌরসভায় দেওয়া অভিযোগের প্রতিকার মেলে
না।
➡️ দায়িত্বশীলরা কেউ আসে না মাঠ পর্যায়ে।
নানা সমস্যায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কালীগঞ্জ পৌরসভার হাজার হাজার মানুষকে। বিশেষ করে বর্ষার সময় অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাল ভরাট,নিয়মবহির্ভূত যত্রতত্র বাড়িঘর নির্মাণে স্বাভাবিক পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তা আরও প্রকট আকার ধারণ করে । স্থানীয়রা জানায়, বছরের বেশির ভাগ সময়ই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় কালীগঞ্জ পৌরসভার নাগরিকদের। সামান্য বৃষ্টিতেই অধিকাংশ এলাকায় তৈরি হয় জলাবদ্ধতা।
ফলে স্কুলগামী শিশু কিশোর, বয়োবৃদ্ধ নারী-পুরুষ, অসুস্থ রোগীদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাদের।
নিচু এলাকার ঘরবাড়িতে ওঠে ময়লা পানি। পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দিনের পর দিন দুর্গন্ধযুক্ত নোংরা ও ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত পানির মধ্যে বসবাস করতে হয় তাদের। ফলে পানিবাহিত রোগ ও মশার উপদ্রবে চলাফেরায় চরম বিপাকে পড়েন পৌর বাসিন্দারা। সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর এলাকায় বিভিন্ন মহল্লার ভিতরে অনেক সড়কে জমেছে একহাঁটু পানি। একটু নিচু এলাকায় ঘরের মধ্যে ঢুকে গেছে পানি। এসব এলাকায় ঘর থেকে বের হতে অনেকে বিকল্প উপায় বের করে পারাপার হচ্ছে। স্কুলগামী শিশু কিশোরদের পানি ভেঙে সড়কে এসে জুতা পায়ে দেওয়ার দৃশ্যও চোখে পড়ে। এসব এলাকায় অনেকে ঘরের মেঝেতে বা বারান্দায় অস্থায়ী চুলায় রান্নার কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন অনেকেই।
সবচেয়ে বিপাকে পড়তে হয় কেউ অসুস্থ হলে বা কারও মৃত্যু হলে।পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কলেজ পাড়া, ৩ নং ওয়ার্ড ফয়লা মাস্টারপাড়া,৪ নং ওয়ার্ড হেলাই মোল্লাপাড়া, ৬ নং ওয়ার্ড বলিদাপাড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়া মসজিদের পাশে, ৭ নং ওয়ার্ড আড়পাড়া দর্গাপাড়া এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ এলাকাগুলোতে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পানি জমে থাকছে দিনের পর দিন। ৭ নং ওয়ার্ডের বিহারী মোড় মধুভাজা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শরিফুজ্জামান ক্ষোভের স্বরে বলেন, পৌর নাগরিক সেবা আমরা পায় না।
আমার বাড়ি ও আশপাশের এলাকা দীর্ঘদিন ধরে পানিতে ডুবে আছে। রান্না ঘরে পানি ঢোকায় চুলাও পানির নিচে। এই এলাকায় পৌরসভার একটি ড্রেনও রয়েছে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ কখনোই এই ড্রেনটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে না। বারবার বিষয়টি জানিও কোন লাভ হয়নি। পূর্বে জনপ্রতিনিধিরা থাকতেও আমরা যথাপযুক্ত নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ১ বছর হয়ে গেলো প্রশাসনের লোকজন চালাচ্ছে পৌরসভা। দায়িত্বশীলদের কাউকেই জনগণের দুঃখ কষ্ট দেখতে মাঠ পর্যায়ে এখনো দেখা যায়নি। বর্তমানে পৌরবাসীর সুযোগ সুবিধার কথা দায়িত্বশীলদের মাথায় না থাকলেও পৌরসভা কার্যালয় চাকচিক্য করাসহ নিজেদের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা । আর আমাদের মত পৌরবাসীদেরকে আশার বাণী শোনাচ্ছে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এবং পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা কবীর হাচান বলেন, ‘অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ এবং ড্রেনের জন্য জায়গা না রেখে ঘরবাড়ি নির্মাণের ফলে বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু হচ্ছে শিঘ্রই। পৌরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। সবাই এগিয়ে এলে আশা করি অচিরেই জলাবদ্ধতার সমাধান করা যাবে।