ঢাকা ০৯:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বরুড়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে মহিলা দলের আলোচনা সভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত Logo সুবিধাবঞ্চিত ও ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে সিড ফাউন্ডেশনের বিজয় দিবস উদযাপন Logo ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট এন্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিজয় দিবস পালিত Logo রাঙ্গামাটিতে মহান বিজয় দিবস উদযাপন Logo মুরাদনগরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন Logo বরুড়ায় মহান বিজয় দিবস পালিত Logo মুন্সিগঞ্জে ৩২ কোটি টাকা মূল্যের নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও সুতা জব্দ Logo ঝিনাইদহে দুই সন্তানের জননীকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা Logo বুড়িচংয়ে অটোরিকশা চালক হত্যাকাণ্ডে মূল আসামি গ্রেফতার Logo কুমিল্লায় বিজয় দিবসে রেলী আলোচনা করেছেন এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন

ট্রাফিক পুলিশের হাত-পা ধরেও মামলা থেকে রেহাই পায়নি মোটরসাইকেল আরোহী

মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও

মা অসুস্থ, যাচ্ছেন মায়ের জন্য ঔষুধ কিনতে মোটরসাইকেল নিয়ে দোকানে। যাওয়ার পথে ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্টের মুখে পড়েন এক মোটরসাইকেল আরোহী। এসময় হাত-পা ধরে মাফ চাইলেও জরিমানা থেকে রক্ষা পায়নি। আর এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেটিজেনরা।

রবিবার (৩১ মার্চ) ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ী এলাকার জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সামনে ঘটনাটি ঘটে।

ইতোমধ্যে ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বস্তরে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভিডিওতে ভাইরাল হওয়া মোটরসাইকেল আরোহীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের গেটের পাশে মোটরসাইকেল আরোহী যুবক ট্রাফিক পুলিশের এক সসদ্যকে দুই হাত জোড় করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনুরোধ করছে জরিমানা ও মামলা না দিতে।

এ সময় পুলিশ সদস্য পাশে থাকা ট্রাফিকের শহর ও যানবাহন পুলিশের ইনচার্জ আমজাদ হোসেনকে দেখিয়ে দেয়। এরপর ভুক্তভোগী হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বলতে থাকেন স্যার আমার ভুল হয়েছে, আমার মা অসুস্থ্য, ওষুধ কেনার জন্য এসেছি, আমার মা মরে যাবে, এবারের মতো মাফ করে দেন। এক পর্যায়ে যুবক ওই পুলিশ কর্মকর্তার দুই পা ধরে ক্ষমা চান।

তবে এঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা এবারের মতো ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাকে। কিন্তু তবুও যেন তাঁর শেষ রক্ষা হয়নি।

মোটরসাইকেল আরোহীর কান্নার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় এরই মধ্যে সুষ্ঠু বিচার ও আইন প্রয়োগের বিভিন্ন মন্তব্য করেন নেটিজেনেরা। আর যাতে ভবিষ্যতে আর কোন গাড়ি চালকের উপর এমন অমানবিক আচরণ করতে না পারেন সেদিকে খেয়াল রাখার আহব্বান জানান পুলিশ সুপারকে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক আওলাদ হোসাইন পাপন ফেইসবুকে লিখেছেন, আইন মানুষের কল্যাণে তৈরি হয়েছে। সেই আইনকে পুজি করে যদি কেও মানুষের অকল্যানে ব্যবহার করে তাহলে সেটা কখনই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এই শুশাসনে মেনে নেওয়া যায় না। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের চোখ কখনোই এ ব্যাপারটি এড়িয়ে যাবে না।

উর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে একজন মন্তব্য করেন এখন সময়ের দাবী ট্রাফিক ও পুলিশের গাড়ির কাগজপত্র দেখার নামে হয়রানি বন্ধ করা উচিৎ। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের শুভ দৃষ্টি কামনা করেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে আরোএকজন লিখেছেন, শক্তের ভক্ত নরমের যম। হাজার হাজার বাস-ট্রাক আছে, যাদের কোন ফিটনেস রেজিস্ট্রেশন নাই, গাড়ি ভাঙ্গা চুরা রাস্তায় চলছে, ট্রাফিক সার্জেন দেখেও না দেখার ভান করে। কারণ বাসের মালিক অনেক প্রতাপশালী। একটা মানুষ কতটুকু অসহায়বোধ করলে সার্জেনের পা ধরে।

উল্লেখ্য, বুধবার (২৭ মার্চ) ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক তার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত ৮ মাসে জেলায় সড়ক পরিবহন আইনে ৫১৫২টি মামলা হয়েছে। এ সব মামলায় জরিমানা আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৫০ টাকা।

আর মোটরসাইকেল আরোহীর বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) এর দায়িত্বরত কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, আইন সবার জন্য সমান হাত পা ধরে মাফ চাইলে কি সমাধান পাওয়া যায়। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় ৫০০০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বরুড়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে মহিলা দলের আলোচনা সভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত

SBN

SBN

ট্রাফিক পুলিশের হাত-পা ধরেও মামলা থেকে রেহাই পায়নি মোটরসাইকেল আরোহী

আপডেট সময় ০৪:১৯:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও

মা অসুস্থ, যাচ্ছেন মায়ের জন্য ঔষুধ কিনতে মোটরসাইকেল নিয়ে দোকানে। যাওয়ার পথে ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্টের মুখে পড়েন এক মোটরসাইকেল আরোহী। এসময় হাত-পা ধরে মাফ চাইলেও জরিমানা থেকে রক্ষা পায়নি। আর এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেটিজেনরা।

রবিবার (৩১ মার্চ) ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ী এলাকার জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সামনে ঘটনাটি ঘটে।

ইতোমধ্যে ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বস্তরে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভিডিওতে ভাইরাল হওয়া মোটরসাইকেল আরোহীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের গেটের পাশে মোটরসাইকেল আরোহী যুবক ট্রাফিক পুলিশের এক সসদ্যকে দুই হাত জোড় করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনুরোধ করছে জরিমানা ও মামলা না দিতে।

এ সময় পুলিশ সদস্য পাশে থাকা ট্রাফিকের শহর ও যানবাহন পুলিশের ইনচার্জ আমজাদ হোসেনকে দেখিয়ে দেয়। এরপর ভুক্তভোগী হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বলতে থাকেন স্যার আমার ভুল হয়েছে, আমার মা অসুস্থ্য, ওষুধ কেনার জন্য এসেছি, আমার মা মরে যাবে, এবারের মতো মাফ করে দেন। এক পর্যায়ে যুবক ওই পুলিশ কর্মকর্তার দুই পা ধরে ক্ষমা চান।

তবে এঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা এবারের মতো ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাকে। কিন্তু তবুও যেন তাঁর শেষ রক্ষা হয়নি।

মোটরসাইকেল আরোহীর কান্নার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় এরই মধ্যে সুষ্ঠু বিচার ও আইন প্রয়োগের বিভিন্ন মন্তব্য করেন নেটিজেনেরা। আর যাতে ভবিষ্যতে আর কোন গাড়ি চালকের উপর এমন অমানবিক আচরণ করতে না পারেন সেদিকে খেয়াল রাখার আহব্বান জানান পুলিশ সুপারকে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক আওলাদ হোসাইন পাপন ফেইসবুকে লিখেছেন, আইন মানুষের কল্যাণে তৈরি হয়েছে। সেই আইনকে পুজি করে যদি কেও মানুষের অকল্যানে ব্যবহার করে তাহলে সেটা কখনই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এই শুশাসনে মেনে নেওয়া যায় না। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের চোখ কখনোই এ ব্যাপারটি এড়িয়ে যাবে না।

উর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে একজন মন্তব্য করেন এখন সময়ের দাবী ট্রাফিক ও পুলিশের গাড়ির কাগজপত্র দেখার নামে হয়রানি বন্ধ করা উচিৎ। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের শুভ দৃষ্টি কামনা করেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে আরোএকজন লিখেছেন, শক্তের ভক্ত নরমের যম। হাজার হাজার বাস-ট্রাক আছে, যাদের কোন ফিটনেস রেজিস্ট্রেশন নাই, গাড়ি ভাঙ্গা চুরা রাস্তায় চলছে, ট্রাফিক সার্জেন দেখেও না দেখার ভান করে। কারণ বাসের মালিক অনেক প্রতাপশালী। একটা মানুষ কতটুকু অসহায়বোধ করলে সার্জেনের পা ধরে।

উল্লেখ্য, বুধবার (২৭ মার্চ) ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক তার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত ৮ মাসে জেলায় সড়ক পরিবহন আইনে ৫১৫২টি মামলা হয়েছে। এ সব মামলায় জরিমানা আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৫০ টাকা।

আর মোটরসাইকেল আরোহীর বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) এর দায়িত্বরত কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, আইন সবার জন্য সমান হাত পা ধরে মাফ চাইলে কি সমাধান পাওয়া যায়। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় ৫০০০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে নিশ্চিত করেন তিনি।