ঢাকা ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লাকসাম প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo পবায় জামায়াতে ইসলামীর ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo বাঘাইছড়ি জামায়াত ইসলামির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo রূপসার তৈয়েবিয়া দারুচ্ছুন্নাত এতিম খানায় ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসার ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo গোদাগাড়ীতে হেরোইনসহ দুই নারী গ্রেফতার (ভিডিও) Logo কুমিল্লা ৩০ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকার ভারতীয় অবৈধ বাসমতি চাল আটক Logo দেশব্যাপী নারীর প্রতি সহিংসা ও যৌন নির্যাতন রোধে রাণীনগরে আলোচনা সভা ও মানববন্ধন Logo ঠাকুরগাঁওয়ে ভূট্টা ক্ষেত থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার; পলাতক স্বামী Logo সাতক্ষীরায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা পণ্যস’হ ৩ ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী নারী আটক

ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমানের মৃত্যু

মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও বিএনপি রাজনীতির এক প্রদীপকে হারিয়ে কাঁদছে নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন নিজেকে। কর্মগুণে সবার আপন হয়ে উঠেছিলেন। প্রিয় তৈমুর ভাইকে আর দেখা হবে না প্রিয় শহর ঠাকুরগাঁওয়ে। প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে ডাক পড়বে না। থেমে গেল তার অবিরাম পথচলা।

রোববার (৩মার্চ) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভারতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি ও সদর উপজেলার (সাবেক) চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান। (ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিব। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। গণমানুষের এই নেতার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশিদ তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরিবারে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে ও তিন ছেলে সন্তান আছেন। একজন সন্তান আগে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তার মৃত্যুর খবর নিজ জন্ম ভূমিতে এসে পৌঁছলে কেঁদে উঠে মানুষ। এমন মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউ। তাঁর মৃত্যুতে জেলা বিএনপি তিন দিনব্যাপী শোক প্রকাশ এবং এ সময় কালো ব্যাজ ধারণসহ দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত আকারে উত্তোলনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

তৈমুর রহমানের আকস্মিক মৃত্যুতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট সৈয়দ আলম, সাধারণ সম্পাদক ড. টিএম মাহবুবর রহমান, জেলা ছাত্রদল, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ছাত্রদল বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

কেউ বলে-জনতার তৈমুর ভাই, কেউ বলে- গণমানুষের নেতা। আবার কেউ বলে- রাজনীতির অভিভাবক। সবকিছু উপেক্ষা করে পরপারে পাড়ি জমালেন এই বীরমুক্তিযদ্ধা। তার মৃত্যুতে শোকে কাতর ঠাকুরগাঁও। তার অকাল মৃত্যুতে জেলার সব মতের, সব পথের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিষিক্ত হলেন ভালোবাসার অকৃত্রিম বন্ধনে। দীর্ঘ চার দশকে জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের সেবা করেছেন।

বিএনপির নেতারা বলেন, অভিভাবককে হারালাম। ঠাকুরগাঁওয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনের একজন অভিভাবক ছিলেন তৈমুর রহমান। তার মৃত্যু শূন্যতা তৈরি করলো। তৈমুর রহমান দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ একজন নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন খুবই শান্তিপ্রিয়। সকল দলের নেতাদের প্রতি তিনি খুবই শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।

গেল বছরের ১৫ ডিসেম্বর ফুসফুসে টিউমার অপারেশনের জন্য ভারতে চিকিৎসার জন্য যান। ভর্তি হন দেশটির মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে। সম্প্রতি সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের পরে তিনি সুস্থ্য ছিলেন। হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছাড়প্রত্র দিয়েছিল। তার একটি রক্তের পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য তিনি সেখানে লজে ছিলেন। আগামী ৮-৯ মার্চের মধ্যে তাঁর বাংলাদেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু রোববার বিকেলে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালিন তিনি মারা যান।

তিনি ২০১৪ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি তিনবার ১নং রুহিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এবং পরবর্তীতে সিপিবির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যোগদান করেন। সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সর্বশেষ জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লাকসাম প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

SBN

SBN

ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমানের মৃত্যু

আপডেট সময় ১২:০৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ মার্চ ২০২৪

মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও বিএনপি রাজনীতির এক প্রদীপকে হারিয়ে কাঁদছে নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন নিজেকে। কর্মগুণে সবার আপন হয়ে উঠেছিলেন। প্রিয় তৈমুর ভাইকে আর দেখা হবে না প্রিয় শহর ঠাকুরগাঁওয়ে। প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে ডাক পড়বে না। থেমে গেল তার অবিরাম পথচলা।

রোববার (৩মার্চ) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভারতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি ও সদর উপজেলার (সাবেক) চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান। (ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিব। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। গণমানুষের এই নেতার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশিদ তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরিবারে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে ও তিন ছেলে সন্তান আছেন। একজন সন্তান আগে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তার মৃত্যুর খবর নিজ জন্ম ভূমিতে এসে পৌঁছলে কেঁদে উঠে মানুষ। এমন মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউ। তাঁর মৃত্যুতে জেলা বিএনপি তিন দিনব্যাপী শোক প্রকাশ এবং এ সময় কালো ব্যাজ ধারণসহ দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত আকারে উত্তোলনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

তৈমুর রহমানের আকস্মিক মৃত্যুতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট সৈয়দ আলম, সাধারণ সম্পাদক ড. টিএম মাহবুবর রহমান, জেলা ছাত্রদল, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ছাত্রদল বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

কেউ বলে-জনতার তৈমুর ভাই, কেউ বলে- গণমানুষের নেতা। আবার কেউ বলে- রাজনীতির অভিভাবক। সবকিছু উপেক্ষা করে পরপারে পাড়ি জমালেন এই বীরমুক্তিযদ্ধা। তার মৃত্যুতে শোকে কাতর ঠাকুরগাঁও। তার অকাল মৃত্যুতে জেলার সব মতের, সব পথের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিষিক্ত হলেন ভালোবাসার অকৃত্রিম বন্ধনে। দীর্ঘ চার দশকে জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের সেবা করেছেন।

বিএনপির নেতারা বলেন, অভিভাবককে হারালাম। ঠাকুরগাঁওয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনের একজন অভিভাবক ছিলেন তৈমুর রহমান। তার মৃত্যু শূন্যতা তৈরি করলো। তৈমুর রহমান দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ একজন নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন খুবই শান্তিপ্রিয়। সকল দলের নেতাদের প্রতি তিনি খুবই শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।

গেল বছরের ১৫ ডিসেম্বর ফুসফুসে টিউমার অপারেশনের জন্য ভারতে চিকিৎসার জন্য যান। ভর্তি হন দেশটির মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে। সম্প্রতি সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের পরে তিনি সুস্থ্য ছিলেন। হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছাড়প্রত্র দিয়েছিল। তার একটি রক্তের পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য তিনি সেখানে লজে ছিলেন। আগামী ৮-৯ মার্চের মধ্যে তাঁর বাংলাদেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু রোববার বিকেলে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালিন তিনি মারা যান।

তিনি ২০১৪ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি তিনবার ১নং রুহিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এবং পরবর্তীতে সিপিবির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যোগদান করেন। সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সর্বশেষ জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।