ঢাকা ০৯:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পঞ্চগড়ে নবাগত জেলা প্রশাসক এর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় Logo লাকসামে ট্রাক মোটরসাইকেল সংঘর্ষে যুবকের মৃত্যু Logo গাইবান্ধার নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিলেন মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা Logo পবা-মোহনপুর আসনে জামায়াত প্রার্থীর মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা Logo চট্টগ্রামের বহিঃনোঙ্গরে আর্টিসানাল ট্রলিং বোট ও জালসহ ১৮ জেলে আটক Logo সরাইলে জামি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, আটক ১৫, আহত ২৫ Logo ইনসাফভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়তে চাই -আলহাজ্ব সেলিম মাহমুদ Logo নালিতাবাড়ীতে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo ‎বরুড়ায় ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশনের জেলা সাধারণ সম্পাদককে সংবর্ধনা Logo খিলগাঁও থেকে নিখোঁজ তিনজন শিশু ফিরলো মায়ের কোলে

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণ মোংলা বন্দর

অতনু চৌধুরী(রাজু):
দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণ প্রবাহ মোংলা বন্দর। এ বন্দরে কার্যক্রমের গতিশীলতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বন্দর চ্যানেলে বিদেশি জাহাজ চলাচলে সুবিধার জন্য ৬৯টি নেভিগেশন বয়া স্থাপন  করা হয়েছে। জেটি, মুরিং বয়া এবং এ্যাংকোরেজ-এ একই সঙ্গে ৪৭ টি জাহাজ নোঙ্গরের সুবিধা রয়েছে এ বন্দরে।
এছাড়াও আমদানি-রপ্তানিকারকদের জন্য ট্রানজিট শেড, ওয়্যার হাউজ, কন্টেইনার ইয়ার্ড, হিমায়িত খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ১৬১ টি রিফার প্লাগপয়েন্ট, কার পার্কিং ইয়ার্ড, ১৩৬ টি আধুনিক হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি, টাগবোটসহ ৩২ টি সহায়ক জলযানের সুবিধা বিদ্যমান। মোংলা বন্দরে বর্তমানে ৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। পশুর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে জেটি পর্যন্ত  ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং এর সুবিধা সৃষ্টি হবে।
মোংলা বন্দরের আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা  প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে আগত সমুদ্রগামী জাহাজের বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল দূষণ থেকে বন্দর  চ্যানেল এবং সুন্দরবন রক্ষা পাবে। মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ, নিরাপদ চ্যানেল বিনির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সমুদ্রগামী জাহাজ সুষ্ঠুভাবে হ্যান্ডলিং এবং দুূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জরুরি উদ্ধার কার্য পরিচালনা করা সম্ভব হবে। আপগ্রেডেশন অফ মোংলা পোর্ট প্রকল্পের প্রধান মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য প্রকৌশল ও উন্নয়ন যুগ্ম সচিব ড. এ কে. এম. আনিসুর রহমানের  উদ্দেশ্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক  ১.৫০ কোটি টন কার্গো, ৪.০০ লক্ষ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে।
এতে করে বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডরিং এবং শ্রমিক শ্রেণির জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও মোংলা বন্দরে ২ টি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ২ লক্ষ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।  মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহিত পদক্ষেপের ফলে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছর থেকে মোংলা বন্দরের কার্যক্ষমতা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনের ক্ষেত্রে ২.৩০%, কার্গো ৯.৭২%, কন্টেইনার ১৬.৭৮% এবং গাড়ির ক্ষেত্রে ১৩% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রথমবারের মতো প্রতি ঘন্টায় ২৪ টিরও বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিং এর ফলে নাব্যতা বিরাজমান থাকার কারণে ০৫ টি জেটিতে একই  সঙ্গে ৫ টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল আর ভুটানের ট্রানজিট পণ্য মোংলা বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানির সুসম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। মোংলা বন্দর ব্যবহার করে স্থল, নৌ আর রেলপথের মাধ্যমে রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের পণ্য পরিবহনকে দ্রুততর ও সহজ করবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, মোটর গাড়ী, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল, পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ, চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাকড়া, ক্লে টাইলস, রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান দেশের বাইরে রয়েছেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক, মোঃ মাকরুজ্জামান জানান, “২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে মোংলা বন্দর দিয়ে ৪১৩ টি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করে। ১০,৩৮৬ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়, গাড়ী বহনকারী ১০ টি জাহাজের মাধ্যমে ৫৬৩৭ টি গাড়ি আমদানি হয়। এ সময় বন্দর দিয়ে ৫২,৮৪,৪৭১ মে.টন আমদানি-রপ্তানি হয় এবং ২১০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে সক্ষম হয়েছে।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পঞ্চগড়ে নবাগত জেলা প্রশাসক এর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়

SBN

SBN

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণ মোংলা বন্দর

আপডেট সময় ০৬:০৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
অতনু চৌধুরী(রাজু):
দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণ প্রবাহ মোংলা বন্দর। এ বন্দরে কার্যক্রমের গতিশীলতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বন্দর চ্যানেলে বিদেশি জাহাজ চলাচলে সুবিধার জন্য ৬৯টি নেভিগেশন বয়া স্থাপন  করা হয়েছে। জেটি, মুরিং বয়া এবং এ্যাংকোরেজ-এ একই সঙ্গে ৪৭ টি জাহাজ নোঙ্গরের সুবিধা রয়েছে এ বন্দরে।
এছাড়াও আমদানি-রপ্তানিকারকদের জন্য ট্রানজিট শেড, ওয়্যার হাউজ, কন্টেইনার ইয়ার্ড, হিমায়িত খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ১৬১ টি রিফার প্লাগপয়েন্ট, কার পার্কিং ইয়ার্ড, ১৩৬ টি আধুনিক হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি, টাগবোটসহ ৩২ টি সহায়ক জলযানের সুবিধা বিদ্যমান। মোংলা বন্দরে বর্তমানে ৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। পশুর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে জেটি পর্যন্ত  ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং এর সুবিধা সৃষ্টি হবে।
মোংলা বন্দরের আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা  প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে আগত সমুদ্রগামী জাহাজের বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল দূষণ থেকে বন্দর  চ্যানেল এবং সুন্দরবন রক্ষা পাবে। মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ, নিরাপদ চ্যানেল বিনির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সমুদ্রগামী জাহাজ সুষ্ঠুভাবে হ্যান্ডলিং এবং দুূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জরুরি উদ্ধার কার্য পরিচালনা করা সম্ভব হবে। আপগ্রেডেশন অফ মোংলা পোর্ট প্রকল্পের প্রধান মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য প্রকৌশল ও উন্নয়ন যুগ্ম সচিব ড. এ কে. এম. আনিসুর রহমানের  উদ্দেশ্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক  ১.৫০ কোটি টন কার্গো, ৪.০০ লক্ষ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে।
এতে করে বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডরিং এবং শ্রমিক শ্রেণির জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও মোংলা বন্দরে ২ টি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ২ লক্ষ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।  মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহিত পদক্ষেপের ফলে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছর থেকে মোংলা বন্দরের কার্যক্ষমতা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনের ক্ষেত্রে ২.৩০%, কার্গো ৯.৭২%, কন্টেইনার ১৬.৭৮% এবং গাড়ির ক্ষেত্রে ১৩% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রথমবারের মতো প্রতি ঘন্টায় ২৪ টিরও বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিং এর ফলে নাব্যতা বিরাজমান থাকার কারণে ০৫ টি জেটিতে একই  সঙ্গে ৫ টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল আর ভুটানের ট্রানজিট পণ্য মোংলা বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানির সুসম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। মোংলা বন্দর ব্যবহার করে স্থল, নৌ আর রেলপথের মাধ্যমে রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের পণ্য পরিবহনকে দ্রুততর ও সহজ করবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, মোটর গাড়ী, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল, পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ, চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাকড়া, ক্লে টাইলস, রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান দেশের বাইরে রয়েছেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক, মোঃ মাকরুজ্জামান জানান, “২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে মোংলা বন্দর দিয়ে ৪১৩ টি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করে। ১০,৩৮৬ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়, গাড়ী বহনকারী ১০ টি জাহাজের মাধ্যমে ৫৬৩৭ টি গাড়ি আমদানি হয়। এ সময় বন্দর দিয়ে ৫২,৮৪,৪৭১ মে.টন আমদানি-রপ্তানি হয় এবং ২১০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে সক্ষম হয়েছে।