ঢাকা ১১:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo চাঁদপুরে দুই ইটভাটার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা Logo দেশব্যাপী পরিবেশ অধিদপ্তরের ১০টি অভিযানে সাড়ে ৩৮ লক্ষ টাকা জরিমানা Logo তথ্য অধিকার আইনে আবেদনের এক বছরেও মিলেনি প্রকল্পের তথ্য Logo কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন Logo বুড়িচ ৪৬ তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলা ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্বোধন Logo সরাইলে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল Logo কিশোরগঞ্জে অপারেশন থিয়েটারে২ রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ Logo পবায় ‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo ভালুকায় শিশুর গলায় দা ঠেকিয়ে ডাকাতি, টাকা-সোনা লুট Logo বাংলাদেশি সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ

দন্ডপ্রাপ্ত হয়েও বহাল তবিয়তে আমতলীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা

বরগুনার আমতলীতে আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত হয়েও বহাল তবিয়তে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার (চলতি দায়িত্ব) চাকুরী করছেন আমতলী পৌর শহরের বাসিন্দা ফেরদৌসী বেগম।

ফেরদৌসী বেগম উপজেলার হরিমৃতন্জয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার চলতি দায়িত্ব পালন করছেন।
ফেরদৌসি বেগমের ছেলের স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় আর্থিক দণ্ডপ্রাপ্ত।

ঐ মামলার বাদী আদালতের রায়সহ এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমতলী উপজেলা ও বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত আবেদন করেছেন।

ভুক্তভোগী নাজমুন নাহার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার উত্তর টেপুরা গ্রামের মোঃ আবুল হেসেনের মেয়ে নাজমুন নাহারের সাথে আমতলী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈয়দ আফাজ উদ্দিন চুন্নু মিরার ছেলে সৈয়দ ইজাজ উদ্দিন হাদি সজিবের সাথে ২০০৯ সালের ১৭ নভেম্বর বিয়ে হয়।সজিবের মা ফেরদৌসী বেগম হরিমৃতুঞ্জয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার চলতি দায়িত্বে রয়েছেন।

নাজমুন নাহারের বিয়ের সময় মেয়ের বাবা ছেলেকে নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ ঘরের আসবাবপত্র সহ যাবতীয় মালামাল দিয়ে মেয়েকে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর প্রায়ই যৌতুক লোভী ইজাজ মা ভাইয়ের প্ররোচনায় স্ত্রীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক এবং একটি মোটর সাইকেল কিনে দেওয়ার দাবি করেন। যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় স্বামী ইজাজ, শাশুড়ি ফেরদৌসি এবং দেবর শাহরিয়ার ঘরের দরজা বন্ধ করে নাজমুন নাহারকে মারধর করে।

মারধরের সময় স্বামী ইজাজ জ্বলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে নাজমুন নাহারের সারা শরীর ঝলসে দেয় এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করলে নাজমু নাহার মেরুদণ্ডে আঘাত প্রাপ্ত হন। মেয়ের এ খবর পেয়ে নাহারের বাবা মা তাকে বাড়ি নিয়ে যান।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় নাজমুন নাহার বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী শিশু নির্যাতন ও যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর মামলার রায় প্রদান করা হয়।

আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আরিফুর রহমান এর দেওয়া
রায়ে স্বামী সৈয়দ ইজাজ উদ্দিন সজিবকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তার মা প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগমকে আট হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন। শাশুড়ি ফেরদৌসি বেগম আদালতের ওই আদেশ মেনে জরিমানার টাকাও পরিশোধ করেছেন।

বাদী নাজমুন নাহার আদালতের দেওয়া আদেশের পর বাদী নাজমুন নাহার মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত তার শাশুড়ি ফেরদৌসি বেগম সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রাতমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেন।

অভিযোগ এর বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগম বলেন, আমি উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

অভিযোগ কারী নাজমুন নাহার বলেন, আদালতে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি।আমার শাশুড়ি সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছি।

এ বিষয়ে সদ্য বদলী হওয়া আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, যৌতুক মামলায় আদালতের রায়ে ফেরদৌসি নামে এক শিক্ষকের আর্থিক দণ্ড হয়েছে। রায়ের কপিসহ বাদীর একটি আবেদন পেয়েছি। মতামতসহ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদনটি জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আদালতে একজন শিক্ষকের যৌতুক মামলায় আর্থিক দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছে এবং সকল কাগজপত্রও পাওয়া গেছে। সরকারি চাকুরি বিধি অনুযায়ী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদপুরে দুই ইটভাটার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা

SBN

SBN

দন্ডপ্রাপ্ত হয়েও বহাল তবিয়তে আমতলীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা

আপডেট সময় ১২:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বরগুনার আমতলীতে আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত হয়েও বহাল তবিয়তে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার (চলতি দায়িত্ব) চাকুরী করছেন আমতলী পৌর শহরের বাসিন্দা ফেরদৌসী বেগম।

ফেরদৌসী বেগম উপজেলার হরিমৃতন্জয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার চলতি দায়িত্ব পালন করছেন।
ফেরদৌসি বেগমের ছেলের স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় আর্থিক দণ্ডপ্রাপ্ত।

ঐ মামলার বাদী আদালতের রায়সহ এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমতলী উপজেলা ও বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত আবেদন করেছেন।

ভুক্তভোগী নাজমুন নাহার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার উত্তর টেপুরা গ্রামের মোঃ আবুল হেসেনের মেয়ে নাজমুন নাহারের সাথে আমতলী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈয়দ আফাজ উদ্দিন চুন্নু মিরার ছেলে সৈয়দ ইজাজ উদ্দিন হাদি সজিবের সাথে ২০০৯ সালের ১৭ নভেম্বর বিয়ে হয়।সজিবের মা ফেরদৌসী বেগম হরিমৃতুঞ্জয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার চলতি দায়িত্বে রয়েছেন।

নাজমুন নাহারের বিয়ের সময় মেয়ের বাবা ছেলেকে নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ ঘরের আসবাবপত্র সহ যাবতীয় মালামাল দিয়ে মেয়েকে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর প্রায়ই যৌতুক লোভী ইজাজ মা ভাইয়ের প্ররোচনায় স্ত্রীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক এবং একটি মোটর সাইকেল কিনে দেওয়ার দাবি করেন। যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় স্বামী ইজাজ, শাশুড়ি ফেরদৌসি এবং দেবর শাহরিয়ার ঘরের দরজা বন্ধ করে নাজমুন নাহারকে মারধর করে।

মারধরের সময় স্বামী ইজাজ জ্বলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে নাজমুন নাহারের সারা শরীর ঝলসে দেয় এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করলে নাজমু নাহার মেরুদণ্ডে আঘাত প্রাপ্ত হন। মেয়ের এ খবর পেয়ে নাহারের বাবা মা তাকে বাড়ি নিয়ে যান।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় নাজমুন নাহার বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী শিশু নির্যাতন ও যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর মামলার রায় প্রদান করা হয়।

আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আরিফুর রহমান এর দেওয়া
রায়ে স্বামী সৈয়দ ইজাজ উদ্দিন সজিবকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তার মা প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগমকে আট হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন। শাশুড়ি ফেরদৌসি বেগম আদালতের ওই আদেশ মেনে জরিমানার টাকাও পরিশোধ করেছেন।

বাদী নাজমুন নাহার আদালতের দেওয়া আদেশের পর বাদী নাজমুন নাহার মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত তার শাশুড়ি ফেরদৌসি বেগম সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রাতমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেন।

অভিযোগ এর বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগম বলেন, আমি উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

অভিযোগ কারী নাজমুন নাহার বলেন, আদালতে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি।আমার শাশুড়ি সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছি।

এ বিষয়ে সদ্য বদলী হওয়া আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, যৌতুক মামলায় আদালতের রায়ে ফেরদৌসি নামে এক শিক্ষকের আর্থিক দণ্ড হয়েছে। রায়ের কপিসহ বাদীর একটি আবেদন পেয়েছি। মতামতসহ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদনটি জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আদালতে একজন শিক্ষকের যৌতুক মামলায় আর্থিক দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছে এবং সকল কাগজপত্রও পাওয়া গেছে। সরকারি চাকুরি বিধি অনুযায়ী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।