
শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৮ নং গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে করছে লেখাপড়া। দুই বছরের অধিক সময় ধরে স্কুল ভবনের দক্ষিণ পাশে বেগবতী নদীর তীর ঘেঁষে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হওয়ায় তৈরি হয়েছে বিশালাকৃতির গর্ত।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবনের সন্নিকটে এত বড় গর্ত থাকাই বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় শিকার হতে পারে। এ গর্তটির কারণে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। গর্তটি ভরাটের জন্য প্রধান শিক্ষক বারবার তাগিদ দিলেও এর কোন সমাধান হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ গর্তের বিষয়টি ক্লাস্টার ভিত্তিক প্রাথমিক এ বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হাসানেরও দৃষ্টিগোচর হয়নি।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে সৃষ্ট সমস্যাকে গুরুত্ব না দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দুই তলা বিশিষ্ট দুইটি পৃথক ভবনের ছয়টি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ২২০ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠ গ্রহণ করছে এবং সেখানে আটজন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন। বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির তানিয়া ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী জানায়,স্কুল প্রাঙ্গণে এত বড় গর্ত থাকায় আমরা স্বাভাবিকভাবে খেলাধুলা করতে পারি না।
আমাদের খুব ভয় হয় পড়ে যাওয়ার। আমজাদ হোসেন নামের একজন অভিভাবক ক্ষুব্ধ হয়ে এই প্রতিবেদকে জানান, উপজেলা পর্যায়ে এত উন্নয়নমূলক কাজ হয়, বিভিন্ন জায়গায় টিআর, কাবিটা, কাবিখা, জিআর এর বরাদ্দ আসে। নদীর পাড়ে প্যালা সাইডিং দিয়ে গর্তটি ভরাট করার জন্য কোনো বরাদ্দ কি দেওয়া যায় না ? আসলে এগুলোর ব্যাপারে কারো কোন গুরুত্ব নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি দ্রুত গর্তটি ভরাট করে শিক্ষার্থীদেরকে ঝুঁকিমুক্ত লেখাপড়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য।
গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামিরুল ইসলাম বলেন, রাস্তা এবং স্কুল মাঠের বৃষ্টির পানি নদীতে যাওয়ার সুব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যালয় ভবনের পাশে এত বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা এবং সৃষ্ট গর্তটি ভরাট করা অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে। আমি লিখিতভাবে ব্যাপারটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ হবে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে স্কুল প্রাঙ্গণে সৃষ্ট গর্ত ভরাটের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।