ঢাকা ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পবায় প্রসবের পর মায়ের মৃত্যু, সন্তানের দায়িত্ব নিলেন চেয়ারম্যান Logo গাইবান্ধায় অনলাইন ক্যাসিনোর বিষাক্ত থাবা: ঋণে ডুবে পরিবার ছাড়ছে মানুষ Logo শিক্ষিকাকে শ্লীলতাহানি ও দাঁত ভাঙার ঘটনায় মানববন্ধন Logo ময়মনসিংহ -শেরপুর সীমান্তে ৫ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় চোরাচালানী মালামাল ও মাদক জব্দ Logo গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড Logo চান্দিনায় গরুবাহী ট্রাক ছিনতাই; দুই থানায় ধাক্কা-ধাক্কি Logo প্রতিহিংসা নয় প্রতিযোগিতা, রাজনীতি হোক ঐক্য ভিত্তিক Logo ডানপন্থী উসকানির বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি বেইজিংয়ের Logo তাইওয়ান নিয়ে জাপান সরকারের নীতি প্রশ্নবিদ্ধ Logo রাজশাহীর জজ পরিবারের ওপর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে গাইবান্ধায় আইনজীবীদের মানববন্ধন

নিকলীর ছেলে হিমেলের ইংলিশ চ্যানেল জয়

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের নিকলীর কৃতি সন্তান সারা বাংলাদেশের গর্ব নাজমুল হক হিমেলের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে।

দীর্ঘ ৩৭ বছর পর আবারো ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।হিমেল এর সপ্ন ছিলেন বাংলাদেশের হয়ে ইংলিশ চ্যানেল সাঁতার পাড়ি দিয়ে বিজয় নিয়ে আসবেন। অবশেষে গত
(২৯,৭,২০২৫ ইং) সকাল ৭:৩০ মিনিটে শুরু হয়ে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় শেষ হয়, আর ইংল্যান্ডের সময় অনুযায়ী রাত ২:৩০ মিনিটে শুরু হয়েছিলো অনুষ্ঠানটি।

যেটা কি না আটলান্টিক মহাসাগরে প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্স যেতে হয়।
১৯৯৭ সালে বাবা আবুল হাসেমের মাধ্যমে সাঁতারে হাতেখড়ি। আবুল হাসেম ছিলেন আশির দশকের জাতীয় সাঁতারু। জাতীয় সুইমিং ফেডারেশনের সাবেক সদস্য ও নিকলী সুইমিং ক্লাবের কোচ।

চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় হিমেল। কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার গোয়ালহাটি গ্রামের কৃতি সাঁতারুর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সাঁতারে হাতেখড়ি সাবেক সাঁতারু মোঃ সোলায়মানের মাধ্যমে ১৯৯৮ সালে। তারপর জাপানি কোচের অধীনে ছিলেন তিন বছর। পরের সময়টুকু চীনা কোচের অধীনে। সাঁতারের পথচলায় সব মিলে ১০ বছর এই তিনজনের অধীনেই ছিলেন হিমেল।

এ সময়ের মধ্যে ১৯৯৮ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে ২০টি স্বর্ণ, ১৫টি রৌপ্য পদক অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন এই সাঁতারু। ২০০৬ সালে বয়স গ্রুপে নির্বাচিত হয়েছেন সেরা সাঁতারু। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অর্জন পাঁচটি স্বর্ণ ও চারটি রৌপ্যপদক। এই সময়কালে বয়সভিত্তিক সাঁতারে গড়েছেন ছয়টি জাতীয় রেকর্ড। ২০০৮ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় ইন্দো-বাংলা গেমসে এক স্বর্ণ ও দুই রৌপ্য জয় করেন।

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপি থেকে ২০০৬ সালে এসএসসি ও ২০০৮ সালে এইচএসসি পাস করার পর হিমেল উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান চীনে। সেখানে বেইজিং স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৯-২০১৩ সেশনে শারীরিক শিক্ষায় স্নাতক ডিগ্রি লাভকরেন। একই বিষয়ে ২০১৩-২০১৬ মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এই সময়ের মধ্যে অল বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল ফরেন স্টুডেন্টস সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১২-তে চ্যাম্পিয়ন, ২০১২ ও ১৩ সালে ৮০০ মিটার ওপেন ওয়াটার চ্যাম্পিয়নশিপ কুনমিং, চীনে এক স্বর্ণ এক রৌপ্য জয় করেন।

চীনে হিমেল সাঁতারে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানে দীর্ঘদিন কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তার লক্ষ্য ইংলিশ চ্যানেল জয়ের স্বপ্ন, যেটি বিশ্বব্যাপী একজন সাঁতারুর জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত।

হিমেল গত কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এক ঐতিহাসিক অভিযান ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার লক্ষ্যে। যদিও বাংলাদেশ গরম প্রধান দেশ, আর ইংলিশ চ্যানেল হচ্ছে বরফের সাগর। প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে, তবে শুধু ঠান্ডা পানিতে প্রস্তুতি নেওয়ার বড়ই অভাব রয়েছে। সে সমস্যা নিরসনে নিকলীর বরফ তৈরির ফ্যাক্টরীতে আইসবাতথে নিয়মিত অনুশীলন করছে।

এর মধ্যে নিয়মিত চলছে সুইমিং, রানিংসহ শারীরিক প্রস্তুতি । তিনি সোয়াইজনী নদীতে সাঁতার কেটে নিয়মিত ৫-৭ কিলোমিটার পথ অনুশীলন করছেন। আর বরফ জমা ড্রামের ভেতরে ডুবে থেকে শরীরের সহ্যক্ষমতা বাড়ানোর কঠোর ট্রেনিং চালিয়ে ছিলেন বলেও জানান।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পবায় প্রসবের পর মায়ের মৃত্যু, সন্তানের দায়িত্ব নিলেন চেয়ারম্যান

SBN

SBN

নিকলীর ছেলে হিমেলের ইংলিশ চ্যানেল জয়

আপডেট সময় ০৬:১২:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের নিকলীর কৃতি সন্তান সারা বাংলাদেশের গর্ব নাজমুল হক হিমেলের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে।

দীর্ঘ ৩৭ বছর পর আবারো ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।হিমেল এর সপ্ন ছিলেন বাংলাদেশের হয়ে ইংলিশ চ্যানেল সাঁতার পাড়ি দিয়ে বিজয় নিয়ে আসবেন। অবশেষে গত
(২৯,৭,২০২৫ ইং) সকাল ৭:৩০ মিনিটে শুরু হয়ে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় শেষ হয়, আর ইংল্যান্ডের সময় অনুযায়ী রাত ২:৩০ মিনিটে শুরু হয়েছিলো অনুষ্ঠানটি।

যেটা কি না আটলান্টিক মহাসাগরে প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্স যেতে হয়।
১৯৯৭ সালে বাবা আবুল হাসেমের মাধ্যমে সাঁতারে হাতেখড়ি। আবুল হাসেম ছিলেন আশির দশকের জাতীয় সাঁতারু। জাতীয় সুইমিং ফেডারেশনের সাবেক সদস্য ও নিকলী সুইমিং ক্লাবের কোচ।

চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় হিমেল। কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার গোয়ালহাটি গ্রামের কৃতি সাঁতারুর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সাঁতারে হাতেখড়ি সাবেক সাঁতারু মোঃ সোলায়মানের মাধ্যমে ১৯৯৮ সালে। তারপর জাপানি কোচের অধীনে ছিলেন তিন বছর। পরের সময়টুকু চীনা কোচের অধীনে। সাঁতারের পথচলায় সব মিলে ১০ বছর এই তিনজনের অধীনেই ছিলেন হিমেল।

এ সময়ের মধ্যে ১৯৯৮ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে ২০টি স্বর্ণ, ১৫টি রৌপ্য পদক অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন এই সাঁতারু। ২০০৬ সালে বয়স গ্রুপে নির্বাচিত হয়েছেন সেরা সাঁতারু। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অর্জন পাঁচটি স্বর্ণ ও চারটি রৌপ্যপদক। এই সময়কালে বয়সভিত্তিক সাঁতারে গড়েছেন ছয়টি জাতীয় রেকর্ড। ২০০৮ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় ইন্দো-বাংলা গেমসে এক স্বর্ণ ও দুই রৌপ্য জয় করেন।

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপি থেকে ২০০৬ সালে এসএসসি ও ২০০৮ সালে এইচএসসি পাস করার পর হিমেল উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান চীনে। সেখানে বেইজিং স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৯-২০১৩ সেশনে শারীরিক শিক্ষায় স্নাতক ডিগ্রি লাভকরেন। একই বিষয়ে ২০১৩-২০১৬ মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এই সময়ের মধ্যে অল বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল ফরেন স্টুডেন্টস সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১২-তে চ্যাম্পিয়ন, ২০১২ ও ১৩ সালে ৮০০ মিটার ওপেন ওয়াটার চ্যাম্পিয়নশিপ কুনমিং, চীনে এক স্বর্ণ এক রৌপ্য জয় করেন।

চীনে হিমেল সাঁতারে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানে দীর্ঘদিন কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তার লক্ষ্য ইংলিশ চ্যানেল জয়ের স্বপ্ন, যেটি বিশ্বব্যাপী একজন সাঁতারুর জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত।

হিমেল গত কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এক ঐতিহাসিক অভিযান ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার লক্ষ্যে। যদিও বাংলাদেশ গরম প্রধান দেশ, আর ইংলিশ চ্যানেল হচ্ছে বরফের সাগর। প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে, তবে শুধু ঠান্ডা পানিতে প্রস্তুতি নেওয়ার বড়ই অভাব রয়েছে। সে সমস্যা নিরসনে নিকলীর বরফ তৈরির ফ্যাক্টরীতে আইসবাতথে নিয়মিত অনুশীলন করছে।

এর মধ্যে নিয়মিত চলছে সুইমিং, রানিংসহ শারীরিক প্রস্তুতি । তিনি সোয়াইজনী নদীতে সাঁতার কেটে নিয়মিত ৫-৭ কিলোমিটার পথ অনুশীলন করছেন। আর বরফ জমা ড্রামের ভেতরে ডুবে থেকে শরীরের সহ্যক্ষমতা বাড়ানোর কঠোর ট্রেনিং চালিয়ে ছিলেন বলেও জানান।