ঢাকা ০৯:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরাইলী গণহত্যার প্রতিবাদে সরাইলে বিক্ষোভ মিছিল Logo রূপসায় মাদক সহ ১১ জুয়াড়ী আটক : ভ্রাম্যমান আদালতের সাজা Logo বরুড়ায় ইজরায়েলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের পক্ষে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ Logo ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল মুরাদনগর Logo শেরপুরে বিএনপি নেতা বাদল হত্যার খুনিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি Logo ৮ থেকে ১৪ এপ্রিল জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করবে সরকার Logo কটিয়াদী উপজেলা প্রেসক্লাবের ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে অনুষ্ঠিত Logo মানচিত্র বদলাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে Logo মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে পাচার হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য Logo ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে আইএসইউ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

এলাকাবাসী ও পরিবেশ কর্মীদের ক্ষোভ

পটিয়ায় ফুলকলির বর্জ্য পরিবেশ দূষণ ও সংকটে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

গত কয়েক মাস ধরে চট্টগ্রামের পটিয়ায় ফুলকলি কারখানা সংলগ্ন খাল ও আশপাশের কৃষি জমির এলাকা থেকে ভীষণ দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা শহরের পথে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছালে স্হানীয়দের সহযোগিতায় পরিবেশ অধিদপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ৬ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনের একটি টিম এই এলাকায় পরিদর্শনে আসেন। তারা খাল, ড্রেন ও কৃষি জমি বিভিন্ন জায়গা থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করেন। এরপর ফুলকলি কারখানার ম্যানেজার/তত্ত্বাবধায়ককে সামনে রেখে কিছু তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেগুলো লিখিতভাবে গ্রহণ করা হয়:
১. আগামীকালকের মধ্যে খালে জমে থাকা বর্জ্য পরিষ্কার করতে হবে।

২. ড্রেনেজে পরিষ্কার পানি সরবরাহ করে জমে থাকা দুর্গন্ধযুক্ত পানি ধুয়ে দিতে হবে।
স্যাম্পল পরীক্ষার ফলাফল আসতে প্রায় ৭ কর্মদিবস লাগবে। এরমধ্যেই একটি শুনানি অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও প্রয়োজনীয় শর্ত আরোপ করবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারখানায় একটি বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট থাকলেও এর কার্যক্রম সম্পর্কে দায়িত্বপ্রাপ্তরা অস্পষ্ট। কোনো ইঞ্জিনিয়ার নেই এবং প্ল্যান্টে শুধুমাত্র প্রোডাকশন থেকে আসা পানি পরিশোধিত হয়—যার ধারণক্ষমতা ১৫০০ লিটার। মূল সমস্যা হচ্ছে ওয়েস্টেজ পানি, যা কোনো পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি খালে ফেলা হচ্ছে।

কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, পাশে কালভার্ট নির্মাণের কারণে খাল বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলার কারণেই দুর্গন্ধ এবং পরিবেশ দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

প্রশ্ন ওঠে, ইউনিয়ন কৃষি স্কুল এন্ড কলেজের পাশে এমন একটি বড় কারখানা অনুমোদন পাওয়াটা কতটুকু যৌক্তিক, শুরুতেই এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রতিবাদ প্রয়োজন ছিল, যা না থাকায় এখন সবাইকে এর মাশুল গুণতে হচ্ছে।

এর আগেও এই ফুলকলি কারখানার বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ গিয়েছিল পরিবেশ অধিদপ্তরে। কিছু শর্ত আরোপ করা হলেও দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। আইন প্রয়োগের সীমাবদ্ধতার কারণে এসব প্রতিষ্ঠান বারবার নিয়ম ভেঙে চলে যাচ্ছে।

এদিকে চট্টগ্রামের পরিবেশ সংগঠন এ্যাড ভিশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, পটিয়া উপজেলার ফুলকলি কারখানার বিরুদ্ধে পরিবেশ বিধ্বংসী অনেক অভিযোগ রয়েছে। গত ২৪ মার্চ আমরা এই কারখানা পরিদর্শন করতে যাই। পরিদর্শনকালে আমরা অনেক কিছু দেখতে পাই, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আমরা দাবি জানাচ্ছি পরিবেশের স্বার্থে ফুলকলি কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়ার জন্য। এখানে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পরিবেশ হুমকির মুখে পরবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের টিম আসার পর যখন সংবাদকর্মীরা তাদের সঙ্গে কারখানায় প্রবেশ করতে চাইলে, তখন বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। পরবর্তীতে সকলে মিলে প্রতিবাদ করায় ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয় এবং লিখিতভাবে প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরাইলী গণহত্যার প্রতিবাদে সরাইলে বিক্ষোভ মিছিল

SBN

SBN

এলাকাবাসী ও পরিবেশ কর্মীদের ক্ষোভ

পটিয়ায় ফুলকলির বর্জ্য পরিবেশ দূষণ ও সংকটে

আপডেট সময় ১০:৩৯:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

গত কয়েক মাস ধরে চট্টগ্রামের পটিয়ায় ফুলকলি কারখানা সংলগ্ন খাল ও আশপাশের কৃষি জমির এলাকা থেকে ভীষণ দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা শহরের পথে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছালে স্হানীয়দের সহযোগিতায় পরিবেশ অধিদপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ৬ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনের একটি টিম এই এলাকায় পরিদর্শনে আসেন। তারা খাল, ড্রেন ও কৃষি জমি বিভিন্ন জায়গা থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করেন। এরপর ফুলকলি কারখানার ম্যানেজার/তত্ত্বাবধায়ককে সামনে রেখে কিছু তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেগুলো লিখিতভাবে গ্রহণ করা হয়:
১. আগামীকালকের মধ্যে খালে জমে থাকা বর্জ্য পরিষ্কার করতে হবে।

২. ড্রেনেজে পরিষ্কার পানি সরবরাহ করে জমে থাকা দুর্গন্ধযুক্ত পানি ধুয়ে দিতে হবে।
স্যাম্পল পরীক্ষার ফলাফল আসতে প্রায় ৭ কর্মদিবস লাগবে। এরমধ্যেই একটি শুনানি অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও প্রয়োজনীয় শর্ত আরোপ করবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারখানায় একটি বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট থাকলেও এর কার্যক্রম সম্পর্কে দায়িত্বপ্রাপ্তরা অস্পষ্ট। কোনো ইঞ্জিনিয়ার নেই এবং প্ল্যান্টে শুধুমাত্র প্রোডাকশন থেকে আসা পানি পরিশোধিত হয়—যার ধারণক্ষমতা ১৫০০ লিটার। মূল সমস্যা হচ্ছে ওয়েস্টেজ পানি, যা কোনো পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি খালে ফেলা হচ্ছে।

কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, পাশে কালভার্ট নির্মাণের কারণে খাল বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলার কারণেই দুর্গন্ধ এবং পরিবেশ দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

প্রশ্ন ওঠে, ইউনিয়ন কৃষি স্কুল এন্ড কলেজের পাশে এমন একটি বড় কারখানা অনুমোদন পাওয়াটা কতটুকু যৌক্তিক, শুরুতেই এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রতিবাদ প্রয়োজন ছিল, যা না থাকায় এখন সবাইকে এর মাশুল গুণতে হচ্ছে।

এর আগেও এই ফুলকলি কারখানার বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ গিয়েছিল পরিবেশ অধিদপ্তরে। কিছু শর্ত আরোপ করা হলেও দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। আইন প্রয়োগের সীমাবদ্ধতার কারণে এসব প্রতিষ্ঠান বারবার নিয়ম ভেঙে চলে যাচ্ছে।

এদিকে চট্টগ্রামের পরিবেশ সংগঠন এ্যাড ভিশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, পটিয়া উপজেলার ফুলকলি কারখানার বিরুদ্ধে পরিবেশ বিধ্বংসী অনেক অভিযোগ রয়েছে। গত ২৪ মার্চ আমরা এই কারখানা পরিদর্শন করতে যাই। পরিদর্শনকালে আমরা অনেক কিছু দেখতে পাই, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আমরা দাবি জানাচ্ছি পরিবেশের স্বার্থে ফুলকলি কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়ার জন্য। এখানে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পরিবেশ হুমকির মুখে পরবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের টিম আসার পর যখন সংবাদকর্মীরা তাদের সঙ্গে কারখানায় প্রবেশ করতে চাইলে, তখন বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। পরবর্তীতে সকলে মিলে প্রতিবাদ করায় ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয় এবং লিখিতভাবে প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।