ঢাকা ০৩:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান; ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি Logo চট্টগ্রামে বিপুল পরিমান দেশি-বিদেশী মাদক ও ২ টি দেশীয় অস্ত্র জব্দ Logo আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চাঁদপুরে এক আইনজীবীর সনদ স্থগিত Logo জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ পেলেন মুহাম্মদ আবু আবিদ Logo লবণচরা প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন Logo মুরাদনগরে এসএসসি পরীক্ষায় নকল সরবরাহে যুবকের কারাদণ্ড Logo কর্ণফুলী শিল্প বিল্ডার্স থেকে অধিকমূল্যে জাহাজ ক্রয় ও ড্রেজার নির্মাণে অভিযোগে Logo ১৫ বছর পর ঢাকায় বৈঠকে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবরা Logo সিলেটে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েই শঙ্কা Logo কক্সবাজারে আধুনিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নির্মাণ সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

পোশাক খাতের মজুরী বোর্ড পুনঃগঠন করা সহ বিভিন্ন দাবী

স্টাফ রিপোর্টারঃ পোশাক খাতের মজুরী বোর্ড পুনঃগঠন করা সহ বিভিন্ন দাবীতে রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ-ইএডটঈ দেশের সর্ব প্রথম গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনের জোট যাহা ১৬ জুলাই, ১৯৯৭ সালে গঠিত হয়। অত্র পরিষদ বিগত ১৯৯৭, ১৯৯৮ এবং ২০০০ইং সালে পর পর তিনবার ইএগঊঅ এর সাথে একমাত্র দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করে। দেশের প্রথম সারির গার্মেণ্টস শ্রমিক সংগঠন সমূহ অত্র পরিষদের বিভিন্ন সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
করোনা মহামারীর কঠিন ছোবলে বিশে^র বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি আমাদের দেশে গার্মেন্টস খাতের প্রায় তিনলক্ষ শ্রমিককে চাকুরীচ্যুত, মজুরী না পাওয়া সহ নানাবিধ সংকটে নিপতিত করেছিল। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে দেশের সকল মানুষ সরকার ঘোষিত সাধারন ছুটির মাঝে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করছিল, ঠিক তখন পোশাক শিল্পের সোনার ছেলে-মেয়েরা করোনা মহামারীর ভয়াবহতা মাথায় নিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে কর্মরত থেকে অর্থনীতির চাঁকা কে সচল রেখেছিলেন। অথচ দেশ যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলো তখন গার্মেন্টস শ্রমিকদের চলমান দুঃখ-কষ্ট থেকে পরিত্রানের জন্য সরকার এবং মালিকদের কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। পোশাকখাতের শ্রমিকদের জন্য বিগত ২০১৮ সালে ন্যুনতম মজুরী ৮০০০ টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, ইতিমধ্যে চারবছরে মুল্যস্ফীতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতি সহ বিদ্যূৎ, গ্যাস এবং পানির দাম বৃদ্ধিতে গার্মেন্টস সহ অন্যান্য খাতের শ্রমিকদের জীবন আজ সীমাহীন দূর্দশার মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে। আমরা মনে করেছিলাম সরকার শ্রমিকদের মজুরীকে পুনঃমূল্যায়ন করে ৩/৪ বছরের মধ্যে একটি নতুন মজুরীর ঘোষণা দিবেন, কিন্তু সেটা শ্রমিক সমাজ পেল না।

জীবন ধারণের জন্য একজন শ্রমিককের প্রতিদিন ন্যুনতম ২১৮৮ কিলোক্যালোরী খাদ্য দরকার (ডাব্লিউএইচও (এফএও/ডাব্লিউএইচও/ইউএনইউ,২০০৪)। অধ্যাপক রিচার্ড এ্যাংকর এবং তাহার দল-২০১৮ সালে উপরে উল্লেখিত খাদ্য সংক্রান্ত তথ্য পোশাক খাতের শ্রমিকদের উপর গবেষনা করে উক্ত প্রতিবেদন প্রদান করেন।
সে হিসাবে একজন শ্রমিক কে মাসিক জনপ্রতি ৪০০০ টাকা খাদ্য বাবদ প্রয়োজন এবং ৪ জনের খাদ্য বাবদ ১৬০০০ টাকা দরকার, বাড়ীভাড়া বাবদ ১০০০০ টাকা এবং ২ সন্তান এর পড়ালেখার ন্যুনতম খরচ ২০০০ টাকা প্রয়োজন, চিকিৎসা খরচ ন্যূনতম ২০০০ টাকা, যাতায়াত বাবদ ১০০০ টাকা, বিনোদন-২০০০ টাকা, খাদ্য বহির্ভুত খরচ ১০০০ টাকা সহ ন্যূনতম সঞ্চয়-১০০০ টাকা যাহা সর্বমোট ৩৫০০০ টাকা প্রয়োজন।
আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পাচ্ছি যে সরকারী ২৪ গ্রেডের অদক্ষ কর্মচারী ক্লিনারের ন্যুনতম মজুরী ১৫৮৫০ টাকা এবং ব্যাংকিং খাতে-২০২২ইং সালে ২৪০০০ টাকা ঘোষণা করে কার্যকর করেন। গ্লোবাল লিভিং ওয়েজ কোয়ালিশন পোশাক খাতের জন্য ন্যুনতম মজুরী অনুমান করছে ২১৬৪৮ টাকা হওয়া দরকার। শ্রমিকদের ২০১৮ সালের পূর্বের মজুরী ছিলো ৮০০০ টাকা, বিগত ২০১৮ সালে ১ ডলার = ৮২ টাকা ছিল, সে হিসাবে তখন ৯৮ ডলার বেতন ছিল। ডলার অবমূল্যায়নের কারণে বর্তমান সরকারী রেট অনুযায়ী ১ ডলার= ১০৬ টাকা হিসাবে বর্তমানে ৭৫.৪৭ ডলার পায়। গার্মেন্টস মালিকরা টাকা অবমূল্যায়নের কারণে ২৯% শতাংশ টাকা বেশী আয় করছেন। কিন্তু দ্রব্য মুল্যের চাপে যে শ্রমিকরা দিশেহারা হয়ে কোন রকমে জীবন যাপন করেছেন গার্মেন্টস মালিকরা ২৯% শতাংশ আয় বেশি করার পরও শ্রমিকদেরকে ন্যুনতম কোন মহার্ঘ্য ভাতা বৃদ্ধি করেননি যাহা অমানবিক।
২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করবেন। মধ্যম আয়ের দেশের শ্রমিকদের জীবন-যাপন উপযোগী মজুরী প্রদানে নিশ্চয় মালিক এবং সরকার নীতিগত একমত হবেন। দেশের পোশাক শ্রমিকরা আশা করেছিলেন, সরকার বিগত ২০২২ইং সালে মজুরী বোর্ড পুনঃগঠন করে ত্রি-পক্ষীয় আলোচনা শুরু করবেন বা গার্মেন্টস মালিকবৃন্দ আগ বাড়িয়ে সরকার কে অনুরোধ করতে পারতো সেটা ও দেখা গেলো না। শ্রমিক বাঁচলো কি মরলো তাতে সরকার বা মালিকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। বর্তমানে লিভিং ওয়েজ, এশিয়ান ফ্লোর ওয়েজসহ বিভিন্ন নামে মজুরীর ক্যাম্পেইন চলমান আছে, যাহা ক্যালকুলেশন করলে আমাদের দাবীকৃত মজুরীর দ্বিগুন হবে। পরিষদ ইএডটঈ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি, শিল্পের সামথ্য সহ পারিপাশির্^ক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নি¤েœাক্ত দাবী সমূহ জানাচ্ছে যথাঃ-

১। ৭ম গ্রেডের শ্রমিকদের জন্য ৬৫ ভাগ মূল মজুরী সহ ২২০০০ টাকা ন্যুনতম মজুরী
নির্দ্ধারনের জন্য সরকার ও মালিকদের নিকট দাবী জানাচ্ছি।

২। জানুয়ারী-২০২৩ এর মধ্যে মজুরী বোর্ড পুনঃগঠনের জোর দাবী জানাচ্ছি।

৩। সাম্প্রতিক বাংলাদেশ শ্রমবিধিমালায় সন্নিবেসিত শ্রমিক স্বার্থ-বিরোধী বিধি সমূহ বাতিল পূর্বক
নতুন বিধিমালা প্রণয়নের জোর দাবী জানাচ্ছি।

৪। বাংলাদেশ শ্রম আইন চলমান সংশোধনী প্রক্রিয়ায় শ্রমিক সংগঠন সমুুহের প্রস্তাবনা গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে একটি শ্রমিকবান্ধব শ্রম আইন প্রণয়নের জোর দাবী জানাচ্ছি।
৫। ট্রেড ইউনিয়ন রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় শ্রম অধিদপ্তরের বে-আইনী হস্তক্ষেপ বন্ধ করা সহ ইউনিয়ন গঠনে ২০ ভাগ শ্রমিকের অংশগ্রহনের বাধ্যবাধকতা বাতিল করে যে কোন শিল্পে বা প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম ১০ জন শ্রমিক দ্বারা ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের আইন প্রণোয়নের জোর দাবী জানাচ্ছি। (পাশ^বর্তী দেশ ভারতে এই প্রথা বিদ্যমান)।

৬। ভতুর্কিমুল্যে শ্রমিক পরিবার কে চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি, শিশূখাদ্য রেশন হিসেবে প্রদানের দাবী
জানাচ্ছি।

৭। বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য-সেবা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সরকারী স্বান্ধ্যকালীন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপনের দাবী জানাচ্ছি।

৮। সরকারী চাকুরীজীবি মায়েদের মত বেসরকারী শিল্পের মা’ কে ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি সহ সুবিধাদী শ্রম আইনে শন্নিবেশি করার দাবী জানাচ্ছি।

উপরে উল্লেখিত দাবী সমুহ আদায়ের লক্ষ্যে পরিষদ আগামী ২০ জানুয়ারী থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত প্রত্যেক শিল্প এলাকায়, আঞ্চলিক শ্রমিক সমাবেশ আয়োজন করবে। ২৪ ফেব্রুয়ারী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠানের কর্মসূচী ঘোষণা করছি। উপরে উল্লেখিত কর্মসুচী পালনের পরেও যদি দাবীসমুহ মেনে নেয়া না হয়, তবে পরিশোধ ২৪ ফেব্রুয়ারীর ঢাকায় কেন্দ্রীয় শ্রমিক সমাবেশ থেকে শিল্পে ধর্মঘট আহবানসহ বৃহত্তর কর্মসুচী ঘোষণা করবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সংগ্রামী চেয়ারম্যান জনাব মোঃ তৌহিদুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান এম, দেলোয়ার হোসেন, মোঃ মাহতাব উদ্দিন সহিদ, যুগ্ন মহাসচিব বজলুর রহমান বাবলু, আব্দুল আজিজ, ফিরোজা বেগম, অর্থ সম্পাদক তাহমিনা রহমান, অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সর্বজনাব, মোবারোক খাঁন, মোঃ নজুরুল ইসলাম, রিমা আক্তার, ফজলু মিয়া, মোঃ এনায়েত হোসেন খান প্রমুখ।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান; ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি

SBN

SBN

পোশাক খাতের মজুরী বোর্ড পুনঃগঠন করা সহ বিভিন্ন দাবী

আপডেট সময় ০১:৪৩:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টারঃ পোশাক খাতের মজুরী বোর্ড পুনঃগঠন করা সহ বিভিন্ন দাবীতে রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ-ইএডটঈ দেশের সর্ব প্রথম গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনের জোট যাহা ১৬ জুলাই, ১৯৯৭ সালে গঠিত হয়। অত্র পরিষদ বিগত ১৯৯৭, ১৯৯৮ এবং ২০০০ইং সালে পর পর তিনবার ইএগঊঅ এর সাথে একমাত্র দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করে। দেশের প্রথম সারির গার্মেণ্টস শ্রমিক সংগঠন সমূহ অত্র পরিষদের বিভিন্ন সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
করোনা মহামারীর কঠিন ছোবলে বিশে^র বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি আমাদের দেশে গার্মেন্টস খাতের প্রায় তিনলক্ষ শ্রমিককে চাকুরীচ্যুত, মজুরী না পাওয়া সহ নানাবিধ সংকটে নিপতিত করেছিল। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে দেশের সকল মানুষ সরকার ঘোষিত সাধারন ছুটির মাঝে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করছিল, ঠিক তখন পোশাক শিল্পের সোনার ছেলে-মেয়েরা করোনা মহামারীর ভয়াবহতা মাথায় নিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে কর্মরত থেকে অর্থনীতির চাঁকা কে সচল রেখেছিলেন। অথচ দেশ যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলো তখন গার্মেন্টস শ্রমিকদের চলমান দুঃখ-কষ্ট থেকে পরিত্রানের জন্য সরকার এবং মালিকদের কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। পোশাকখাতের শ্রমিকদের জন্য বিগত ২০১৮ সালে ন্যুনতম মজুরী ৮০০০ টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, ইতিমধ্যে চারবছরে মুল্যস্ফীতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতি সহ বিদ্যূৎ, গ্যাস এবং পানির দাম বৃদ্ধিতে গার্মেন্টস সহ অন্যান্য খাতের শ্রমিকদের জীবন আজ সীমাহীন দূর্দশার মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে। আমরা মনে করেছিলাম সরকার শ্রমিকদের মজুরীকে পুনঃমূল্যায়ন করে ৩/৪ বছরের মধ্যে একটি নতুন মজুরীর ঘোষণা দিবেন, কিন্তু সেটা শ্রমিক সমাজ পেল না।

জীবন ধারণের জন্য একজন শ্রমিককের প্রতিদিন ন্যুনতম ২১৮৮ কিলোক্যালোরী খাদ্য দরকার (ডাব্লিউএইচও (এফএও/ডাব্লিউএইচও/ইউএনইউ,২০০৪)। অধ্যাপক রিচার্ড এ্যাংকর এবং তাহার দল-২০১৮ সালে উপরে উল্লেখিত খাদ্য সংক্রান্ত তথ্য পোশাক খাতের শ্রমিকদের উপর গবেষনা করে উক্ত প্রতিবেদন প্রদান করেন।
সে হিসাবে একজন শ্রমিক কে মাসিক জনপ্রতি ৪০০০ টাকা খাদ্য বাবদ প্রয়োজন এবং ৪ জনের খাদ্য বাবদ ১৬০০০ টাকা দরকার, বাড়ীভাড়া বাবদ ১০০০০ টাকা এবং ২ সন্তান এর পড়ালেখার ন্যুনতম খরচ ২০০০ টাকা প্রয়োজন, চিকিৎসা খরচ ন্যূনতম ২০০০ টাকা, যাতায়াত বাবদ ১০০০ টাকা, বিনোদন-২০০০ টাকা, খাদ্য বহির্ভুত খরচ ১০০০ টাকা সহ ন্যূনতম সঞ্চয়-১০০০ টাকা যাহা সর্বমোট ৩৫০০০ টাকা প্রয়োজন।
আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পাচ্ছি যে সরকারী ২৪ গ্রেডের অদক্ষ কর্মচারী ক্লিনারের ন্যুনতম মজুরী ১৫৮৫০ টাকা এবং ব্যাংকিং খাতে-২০২২ইং সালে ২৪০০০ টাকা ঘোষণা করে কার্যকর করেন। গ্লোবাল লিভিং ওয়েজ কোয়ালিশন পোশাক খাতের জন্য ন্যুনতম মজুরী অনুমান করছে ২১৬৪৮ টাকা হওয়া দরকার। শ্রমিকদের ২০১৮ সালের পূর্বের মজুরী ছিলো ৮০০০ টাকা, বিগত ২০১৮ সালে ১ ডলার = ৮২ টাকা ছিল, সে হিসাবে তখন ৯৮ ডলার বেতন ছিল। ডলার অবমূল্যায়নের কারণে বর্তমান সরকারী রেট অনুযায়ী ১ ডলার= ১০৬ টাকা হিসাবে বর্তমানে ৭৫.৪৭ ডলার পায়। গার্মেন্টস মালিকরা টাকা অবমূল্যায়নের কারণে ২৯% শতাংশ টাকা বেশী আয় করছেন। কিন্তু দ্রব্য মুল্যের চাপে যে শ্রমিকরা দিশেহারা হয়ে কোন রকমে জীবন যাপন করেছেন গার্মেন্টস মালিকরা ২৯% শতাংশ আয় বেশি করার পরও শ্রমিকদেরকে ন্যুনতম কোন মহার্ঘ্য ভাতা বৃদ্ধি করেননি যাহা অমানবিক।
২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করবেন। মধ্যম আয়ের দেশের শ্রমিকদের জীবন-যাপন উপযোগী মজুরী প্রদানে নিশ্চয় মালিক এবং সরকার নীতিগত একমত হবেন। দেশের পোশাক শ্রমিকরা আশা করেছিলেন, সরকার বিগত ২০২২ইং সালে মজুরী বোর্ড পুনঃগঠন করে ত্রি-পক্ষীয় আলোচনা শুরু করবেন বা গার্মেন্টস মালিকবৃন্দ আগ বাড়িয়ে সরকার কে অনুরোধ করতে পারতো সেটা ও দেখা গেলো না। শ্রমিক বাঁচলো কি মরলো তাতে সরকার বা মালিকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। বর্তমানে লিভিং ওয়েজ, এশিয়ান ফ্লোর ওয়েজসহ বিভিন্ন নামে মজুরীর ক্যাম্পেইন চলমান আছে, যাহা ক্যালকুলেশন করলে আমাদের দাবীকৃত মজুরীর দ্বিগুন হবে। পরিষদ ইএডটঈ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি, শিল্পের সামথ্য সহ পারিপাশির্^ক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নি¤েœাক্ত দাবী সমূহ জানাচ্ছে যথাঃ-

১। ৭ম গ্রেডের শ্রমিকদের জন্য ৬৫ ভাগ মূল মজুরী সহ ২২০০০ টাকা ন্যুনতম মজুরী
নির্দ্ধারনের জন্য সরকার ও মালিকদের নিকট দাবী জানাচ্ছি।

২। জানুয়ারী-২০২৩ এর মধ্যে মজুরী বোর্ড পুনঃগঠনের জোর দাবী জানাচ্ছি।

৩। সাম্প্রতিক বাংলাদেশ শ্রমবিধিমালায় সন্নিবেসিত শ্রমিক স্বার্থ-বিরোধী বিধি সমূহ বাতিল পূর্বক
নতুন বিধিমালা প্রণয়নের জোর দাবী জানাচ্ছি।

৪। বাংলাদেশ শ্রম আইন চলমান সংশোধনী প্রক্রিয়ায় শ্রমিক সংগঠন সমুুহের প্রস্তাবনা গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে একটি শ্রমিকবান্ধব শ্রম আইন প্রণয়নের জোর দাবী জানাচ্ছি।
৫। ট্রেড ইউনিয়ন রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় শ্রম অধিদপ্তরের বে-আইনী হস্তক্ষেপ বন্ধ করা সহ ইউনিয়ন গঠনে ২০ ভাগ শ্রমিকের অংশগ্রহনের বাধ্যবাধকতা বাতিল করে যে কোন শিল্পে বা প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম ১০ জন শ্রমিক দ্বারা ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের আইন প্রণোয়নের জোর দাবী জানাচ্ছি। (পাশ^বর্তী দেশ ভারতে এই প্রথা বিদ্যমান)।

৬। ভতুর্কিমুল্যে শ্রমিক পরিবার কে চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি, শিশূখাদ্য রেশন হিসেবে প্রদানের দাবী
জানাচ্ছি।

৭। বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য-সেবা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সরকারী স্বান্ধ্যকালীন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপনের দাবী জানাচ্ছি।

৮। সরকারী চাকুরীজীবি মায়েদের মত বেসরকারী শিল্পের মা’ কে ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি সহ সুবিধাদী শ্রম আইনে শন্নিবেশি করার দাবী জানাচ্ছি।

উপরে উল্লেখিত দাবী সমুহ আদায়ের লক্ষ্যে পরিষদ আগামী ২০ জানুয়ারী থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত প্রত্যেক শিল্প এলাকায়, আঞ্চলিক শ্রমিক সমাবেশ আয়োজন করবে। ২৪ ফেব্রুয়ারী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠানের কর্মসূচী ঘোষণা করছি। উপরে উল্লেখিত কর্মসুচী পালনের পরেও যদি দাবীসমুহ মেনে নেয়া না হয়, তবে পরিশোধ ২৪ ফেব্রুয়ারীর ঢাকায় কেন্দ্রীয় শ্রমিক সমাবেশ থেকে শিল্পে ধর্মঘট আহবানসহ বৃহত্তর কর্মসুচী ঘোষণা করবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সংগ্রামী চেয়ারম্যান জনাব মোঃ তৌহিদুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান এম, দেলোয়ার হোসেন, মোঃ মাহতাব উদ্দিন সহিদ, যুগ্ন মহাসচিব বজলুর রহমান বাবলু, আব্দুল আজিজ, ফিরোজা বেগম, অর্থ সম্পাদক তাহমিনা রহমান, অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সর্বজনাব, মোবারোক খাঁন, মোঃ নজুরুল ইসলাম, রিমা আক্তার, ফজলু মিয়া, মোঃ এনায়েত হোসেন খান প্রমুখ।