ঢাকা ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সাহরী ও ইফতার গ্রহণ কুরআনের নিয়মের পরিপন্থী।

রোজা রাখার পূর্ব শর্ত রাতের শেষ প্রান্তে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ এবং দিনের বেলায় সকল প্রকার পানাহার থেকে বিরত থাকার মধ্য দিয়ে সিয়াম সম্পন্ন করা হয়। দিনের পরিসমাপ্তি ও রাতের সুচনলগ্নে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করতে হয়। পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৮৭ নং আয়াতে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট বিধান দেয়া হয়েছে। আল কুরআন যেখানে সেহরি ও ইফতারের সময়সীমা সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে, সেই ক্ষেত্রে হাদিস কিংবা অন্য কোন মতামত গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
আল কোরআন এর আলোকে সেহেরি খাওয়ার শেষ সময়-
“কালো সুতা থেকে সাদা সুতায় প্রকাশিত হওয়া” এখানে “কালো সুতা ও সাদা সুতা” উপমা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, রাতের শেষ প্রান্তে আকাশের অন্ধকার আভা ক্রমান্বয়ে শুভ্রতায় পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত সেহেরি খাওয়া অব্যাহত থাকবে। রাতের আঁধার সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার হওয়া বা যে কোন বস্তু দৃষ্টি গোচরীভূত হওয়া মাত্রই খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে উপোবাস শুরু করতে হবে।
আল কোরআন এর আলোকে রোজা ভঙ্গের প্রান্তীয় সীমা-
“অতঃপর রাত সমাগম পর্যন্ত তোমরা সিয়াম পূর্ণ কর ইহা আল্লাহ বেঁধে দেয়া সীমা”।
সূর্যাস্তের পর রাতের সমাগম বা চারিদিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত রোজা ভঙ্গ করা যাবে না।
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সেহেরি গ্রহণের ক্ষেত্রে আকাশের শুভ্রতা পরিদৃষ্ট হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয় না। একইভাবে রোজা ভঙ্গের ক্ষেত্রে রাত সমাগম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে তার পূর্বেই রোজা ভঙ্গ করার প্রচলন রয়েছে। এতে সুস্পষ্ট ভাবে আল কুরআনের নিয়ম বা বিধান লংঘিত হচ্ছে বলে প্রতীয়মান।
রাত বলতে কি বুঝায়?
রাত বা রাত্রি সময়ের একটি অংশ যা দিগন্তের সমান্তরাল থেকে সূর্য ডুবে যাবার পর থেকে শুরু হয়। গোধূলী লগ্ন বা ঈষৎ অন্ধকার হবার মাধ্যমে রাত তার আবির্ভাবের কথা বিশ্ববাসীকে জানান দেয়। রাতের বিপরীত হচ্ছে দিন। রাত শুরু এবং রাত শেষ হবার ক্ষেত্রে কিছু কিছু উপাদান নির্ভরশীল। তন্মধ্যে – ঋতু, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, সময়রেখা অন্যতম।
সন্ধ্যা হচ্ছে সূর্যাস্তের ঠিক কয়েক মুহূর্ত পরে গোধূলির সময়ে রাতের ঠিক আগের অবস্থান। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় সন্ধ্যা হচ্ছে সেই সময়টি যা ঠিক সূর্যাস্তের পর ও রাতের ঠিক আগে ঘটে। সন্ধ্যার মধ্যবর্তী পর্যায়ে আকাশ বেশ পরিষ্কার থাকে যখন কৃত্রিম আলোকসজ্জা ছাড়াই বাইরে পড়ার জন্য পর্যাপ্ত আলো থাকতে পারে। সন্ধ্যার শেষদিকে যখন পৃথিবী এমন একটি বিন্দুতে অবস্থান করে যখন তার কেন্দ্র স্থানীয় দিগন্তের ৬ ডিগ্রি অবস্থান থাকে, সেই সময় বাইরে সাধারণভাবে কোন কিছু পড়া যাবে না, কৃত্রিম আলোকসজ্জা প্রয়োজন হয়। গোধূলি বা সন্ধ্যা শব্দটি সাধারণত জ্যোতির্বিজ্ঞানকেন্দ্রিক সন্ধ্যা বা রাত শুরু হওয়ার আগের গোধূলির অন্ধকার অবস্থানকে বোঝায়।
সন্ধ্যা হচ্ছে সময়ে জ্যোতির্বিজ্ঞান গোধূলির একেবারে শেষ মুহূর্ত। রাতের আকাশের নূন্যতম উজ্জ্বলতা খেয়াল করার আগের সময়গত অবস্থানকে গোধূলি বলে। তবে সন্ধ্যাকে তিনটি স্তরে ভাগ করা যায়।
প্রাথমিক বা সিভিল সন্ধ্যা: এই সময় সূর্য দিগন্তের নীচে ৬ ডিগ্রিতে অবস্থান করে। সূর্যাস্তের সময় থেকেই এই অবস্থান শুরু হয়। এই সময়ে আকাশের বিভিন্ন বস্তু (যেমন তারা) আলাদা ও আবহাওয়ার অবস্থার উপর নির্ভর করে খালি চোখে দৃশ্যমান হতে শুরু হয়। আকাশে এই সময় বিভিন্ন রঙ যেমন কমলা ও লাল দেখা যায়।
নটিক্যাল সন্ধ্যা: এমন অবস্থায় সূর্য দৃশ্যত সন্ধ্যায় দিগন্তের নীচে ১২ ডিগ্রি অবস্থানে চলে যায়। এই মুহুর্তে আকাশের তারা ও গ্রহগুলি উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
জ্যোতির্বিজ্ঞান সন্ধ্যা, যা সরল ভাবে সন্ধ্যা নামে পরিচিত: এ সময় দিগন্তের নীচে সূর্য ১৮ ডিগ্রিতে অবস্থান করে। এ সময় থেকেই সন্ধ্যা শুরু হয়। এই সময়ের পরে সূর্য আর আকাশকে আলোকিত করে না। তারপর শুরু হয় রাত। এমতাবস্থায় সিয়াম ভঙ্গ করতে হবে, এটি আল্লাহ তাআলার বেঁধে দেয়া সীমারেখা। সূর্য দিগন্তের নীচে ৬ ডিগ্রিতে অবস্থান করা অবস্থায় অথ্যৎ সিভিল টুলাইট সময়ে সিয়াম ভঙ্গ করা সমীচিন নহে।
(জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় সন্ধ্যা, উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত)

লেখক
মো: ওবায়েদ উল্লাহ
সহকারী ফিচার সম্পাদক
দৈনিক মুক্তির লড়াই।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সাহরী ও ইফতার গ্রহণ কুরআনের নিয়মের পরিপন্থী।

আপডেট সময় ০৬:৪১:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩

রোজা রাখার পূর্ব শর্ত রাতের শেষ প্রান্তে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ এবং দিনের বেলায় সকল প্রকার পানাহার থেকে বিরত থাকার মধ্য দিয়ে সিয়াম সম্পন্ন করা হয়। দিনের পরিসমাপ্তি ও রাতের সুচনলগ্নে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করতে হয়। পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৮৭ নং আয়াতে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট বিধান দেয়া হয়েছে। আল কুরআন যেখানে সেহরি ও ইফতারের সময়সীমা সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে, সেই ক্ষেত্রে হাদিস কিংবা অন্য কোন মতামত গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
আল কোরআন এর আলোকে সেহেরি খাওয়ার শেষ সময়-
“কালো সুতা থেকে সাদা সুতায় প্রকাশিত হওয়া” এখানে “কালো সুতা ও সাদা সুতা” উপমা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, রাতের শেষ প্রান্তে আকাশের অন্ধকার আভা ক্রমান্বয়ে শুভ্রতায় পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত সেহেরি খাওয়া অব্যাহত থাকবে। রাতের আঁধার সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার হওয়া বা যে কোন বস্তু দৃষ্টি গোচরীভূত হওয়া মাত্রই খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে উপোবাস শুরু করতে হবে।
আল কোরআন এর আলোকে রোজা ভঙ্গের প্রান্তীয় সীমা-
“অতঃপর রাত সমাগম পর্যন্ত তোমরা সিয়াম পূর্ণ কর ইহা আল্লাহ বেঁধে দেয়া সীমা”।
সূর্যাস্তের পর রাতের সমাগম বা চারিদিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত রোজা ভঙ্গ করা যাবে না।
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সেহেরি গ্রহণের ক্ষেত্রে আকাশের শুভ্রতা পরিদৃষ্ট হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয় না। একইভাবে রোজা ভঙ্গের ক্ষেত্রে রাত সমাগম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে তার পূর্বেই রোজা ভঙ্গ করার প্রচলন রয়েছে। এতে সুস্পষ্ট ভাবে আল কুরআনের নিয়ম বা বিধান লংঘিত হচ্ছে বলে প্রতীয়মান।
রাত বলতে কি বুঝায়?
রাত বা রাত্রি সময়ের একটি অংশ যা দিগন্তের সমান্তরাল থেকে সূর্য ডুবে যাবার পর থেকে শুরু হয়। গোধূলী লগ্ন বা ঈষৎ অন্ধকার হবার মাধ্যমে রাত তার আবির্ভাবের কথা বিশ্ববাসীকে জানান দেয়। রাতের বিপরীত হচ্ছে দিন। রাত শুরু এবং রাত শেষ হবার ক্ষেত্রে কিছু কিছু উপাদান নির্ভরশীল। তন্মধ্যে – ঋতু, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, সময়রেখা অন্যতম।
সন্ধ্যা হচ্ছে সূর্যাস্তের ঠিক কয়েক মুহূর্ত পরে গোধূলির সময়ে রাতের ঠিক আগের অবস্থান। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় সন্ধ্যা হচ্ছে সেই সময়টি যা ঠিক সূর্যাস্তের পর ও রাতের ঠিক আগে ঘটে। সন্ধ্যার মধ্যবর্তী পর্যায়ে আকাশ বেশ পরিষ্কার থাকে যখন কৃত্রিম আলোকসজ্জা ছাড়াই বাইরে পড়ার জন্য পর্যাপ্ত আলো থাকতে পারে। সন্ধ্যার শেষদিকে যখন পৃথিবী এমন একটি বিন্দুতে অবস্থান করে যখন তার কেন্দ্র স্থানীয় দিগন্তের ৬ ডিগ্রি অবস্থান থাকে, সেই সময় বাইরে সাধারণভাবে কোন কিছু পড়া যাবে না, কৃত্রিম আলোকসজ্জা প্রয়োজন হয়। গোধূলি বা সন্ধ্যা শব্দটি সাধারণত জ্যোতির্বিজ্ঞানকেন্দ্রিক সন্ধ্যা বা রাত শুরু হওয়ার আগের গোধূলির অন্ধকার অবস্থানকে বোঝায়।
সন্ধ্যা হচ্ছে সময়ে জ্যোতির্বিজ্ঞান গোধূলির একেবারে শেষ মুহূর্ত। রাতের আকাশের নূন্যতম উজ্জ্বলতা খেয়াল করার আগের সময়গত অবস্থানকে গোধূলি বলে। তবে সন্ধ্যাকে তিনটি স্তরে ভাগ করা যায়।
প্রাথমিক বা সিভিল সন্ধ্যা: এই সময় সূর্য দিগন্তের নীচে ৬ ডিগ্রিতে অবস্থান করে। সূর্যাস্তের সময় থেকেই এই অবস্থান শুরু হয়। এই সময়ে আকাশের বিভিন্ন বস্তু (যেমন তারা) আলাদা ও আবহাওয়ার অবস্থার উপর নির্ভর করে খালি চোখে দৃশ্যমান হতে শুরু হয়। আকাশে এই সময় বিভিন্ন রঙ যেমন কমলা ও লাল দেখা যায়।
নটিক্যাল সন্ধ্যা: এমন অবস্থায় সূর্য দৃশ্যত সন্ধ্যায় দিগন্তের নীচে ১২ ডিগ্রি অবস্থানে চলে যায়। এই মুহুর্তে আকাশের তারা ও গ্রহগুলি উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
জ্যোতির্বিজ্ঞান সন্ধ্যা, যা সরল ভাবে সন্ধ্যা নামে পরিচিত: এ সময় দিগন্তের নীচে সূর্য ১৮ ডিগ্রিতে অবস্থান করে। এ সময় থেকেই সন্ধ্যা শুরু হয়। এই সময়ের পরে সূর্য আর আকাশকে আলোকিত করে না। তারপর শুরু হয় রাত। এমতাবস্থায় সিয়াম ভঙ্গ করতে হবে, এটি আল্লাহ তাআলার বেঁধে দেয়া সীমারেখা। সূর্য দিগন্তের নীচে ৬ ডিগ্রিতে অবস্থান করা অবস্থায় অথ্যৎ সিভিল টুলাইট সময়ে সিয়াম ভঙ্গ করা সমীচিন নহে।
(জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় সন্ধ্যা, উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত)

লেখক
মো: ওবায়েদ উল্লাহ
সহকারী ফিচার সম্পাদক
দৈনিক মুক্তির লড়াই।