ঢাকা ১০:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বিজয় মেলা নাকি বাণিজ্য মেলা Logo আজ ১৬ ডিসেম্বর: মহাবিজয়ের আলোয় উদ্ভাসিত একাত্তরের রণক্ষেত্রের চূড়ান্ত ইতিহাস Logo নলছিটিতে ৪০টি টিউবওয়েল বিতরণ Logo অবৈধ ড্রেজারে ধ্বংসের মুখে বারেশ্বর বিলের তিন ফসলি জমি Logo কালীগঞ্জে ভাটা উচ্ছেদে এসে শ্রমিকদের বাধায় ফিরে গেলেন পরিবেশ অধিপ্তর Logo সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ৫১ শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তির্ন Logo ১৬ই ডিসেম্বর: মুক্তির লড়াই, গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা Logo চীনের অর্থনীতি: চাপ সামলেও শক্তিশালী অগ্রগতি Logo বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে চীন Logo ইউনিট ৭৩১: সংগঠিত রাষ্ট্রীয় অপরাধের অকাট্য প্রমাণ

প্রযুক্তির যুগেও বেইজিংয়ের হুতোংয়ে বইয়ের গন্ধ

  • আন্তর্জাতিক:
  • আপডেট সময় ১০:৩৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তির বিশ্বে এক নম্বর হলেও চীনারা কিন্তু দিনভর ডিভাইস নিয়ে পড়ে নেই। বিশেষ করে বেইজিংয়ের বইপাড়া কিন্তু এখনও বেশ জমজমাট। বাসিন্দাদের বইপড়ার অভ্যাস দেখলেই এর প্রমাণ মিলবে। অক্টোবরের ১৬ থেকে ১৯ তারিখে বেইজিংয়ের জাতীয় টেনিস সেন্টারটাও রূপ বদলে হয়ে গিয়েছিল বই ও চিন্তার এক প্রাণোচ্ছ্বল উৎসবের ভেনু। এবারের আসরে অংশ নেয় ৩০০-রও বেশি প্রকাশনা, সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান, সম্পাদক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা।

১৯৯৭ সাল থেকে বছরে দুবার করে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে টেম্পল অব দ্য আর্থ অ্যান্ড মি বইমেলা। এ আয়োজনে সেপ্টেম্বরেই ভিড় জমে সাড়ে ৫ লাখ বই পড়ুয়ার। পাশাপাশি শহরের ১৫-মিনিট রিডিং সার্কেল প্রকল্পের আওতায় এখন আছে ৬,০২৬টি পাবলিক লাইব্রেরি ও পাঠকক্ষ। ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে ২২৮টি স্বয়ংক্রিয় বইঘর।

বড় আয়োজন ছাড়াও পুরনো বেইজিংয়ের হুতোংয়ের গলিগুলোয় ছড়িয়ে আছে ছোট ছোট বইয়ের দোকান। শহরের পড়ার আত্মাকে যেন বাঁচিয়ে রাখছে এরা।
ছাওমিয়ান হুতোংয়ের এমনই এক বইঘর ‘পসিবলি বুকস’। প্রতিষ্ঠা করেন চাও ছেন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে ২০২৩ সালে তিনি ফিরে আসেন নিজের শৈশবের মহল্লায় বই ও মানুষের সংস্পর্শে।

চাও বলেন, ‘হুতোং সংস্কৃতি বেশ সূক্ষ্ম ও টেকসই। এখানে পুরনো দেওয়ালের পরতে পরতে আছে বেইজিংয়ের ইতিহাস। মানুষে-মানুষে এক উষ্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এখানে, যা বহুতল ভবনে পাওয়া যায় না।’
তার বইঘরে আছে পাঠকদের জন্য ইন্টারঅ্যাকটিভ কর্নার। বই ও কবিতা নিয়ে ভাবনা লিখে রাখা যায় সেখানে। নিজের কিছু লাইনও রেখে যাওয়া যায় স্মৃতি হিসেবে।

দোকানের বাইরে চাও আয়োজন করেন ‘লাও শে সাহিত্যভ্রমণ’, যেখানে মানুষ ঘুরে দেখে লেখকের গল্পে উঠে আসা হুতোং, চায়ের দোকান ও ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো।
এক স্থানীয় বৃদ্ধাকে চাও জায়গা দিয়েছেন ডাম্পলিং স্টল পরিচালানোর জন্য। ‘খাবার নয়, এই স্টল আসলে উষ্ণতা ও মানবিকতার প্রতীক’ বললেন চাও।

বেইজিংয়ে এখন দুই হাজারেরও বেশি বইয়ের দোকান আছে। ২০১৬ সালে ছিল হাজারেরও কম। প্রতি ১০ হাজার বাসিন্দার জন্য বইঘর আছে প্রায় একটি। যা চীনে সর্বোচ্চ।

দোকানগুলোর বেশিরভাগই হুতোংয়ে। এর মধ্যে ওয়ানশেং বুকস্টোর বিশেষভাবে প্রিয় ওয়াং হেচেন নামের এক অর্থনীতিবিদের। ১৯৯৩ সালে সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রতিষ্ঠিত দোকানটি এখনও বই বিক্রি করে চলেছে।

সিআইটিআইসি প্রেসের সম্পাদক কং শিনশিন মনে করেন, ডিজিটাল যুগেও কাগজের বইয়ের মূল্য অমলিন।
তিনি বলেন, ‘একটি বই এমনভাবে জ্ঞান দেয়, যা অন্য মাধ্যম পারে না। এটি চিন্তাকে শাণিত করে, ধৈর্য শেখায়, গভীরভাবে ভাবতে উৎসাহ দেয়।’

সূত্র: ফয়সল-নাহার,চায়না ডেইলি।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বিজয় মেলা নাকি বাণিজ্য মেলা

SBN

SBN

প্রযুক্তির যুগেও বেইজিংয়ের হুতোংয়ে বইয়ের গন্ধ

আপডেট সময় ১০:৩৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

প্রযুক্তির বিশ্বে এক নম্বর হলেও চীনারা কিন্তু দিনভর ডিভাইস নিয়ে পড়ে নেই। বিশেষ করে বেইজিংয়ের বইপাড়া কিন্তু এখনও বেশ জমজমাট। বাসিন্দাদের বইপড়ার অভ্যাস দেখলেই এর প্রমাণ মিলবে। অক্টোবরের ১৬ থেকে ১৯ তারিখে বেইজিংয়ের জাতীয় টেনিস সেন্টারটাও রূপ বদলে হয়ে গিয়েছিল বই ও চিন্তার এক প্রাণোচ্ছ্বল উৎসবের ভেনু। এবারের আসরে অংশ নেয় ৩০০-রও বেশি প্রকাশনা, সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান, সম্পাদক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা।

১৯৯৭ সাল থেকে বছরে দুবার করে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে টেম্পল অব দ্য আর্থ অ্যান্ড মি বইমেলা। এ আয়োজনে সেপ্টেম্বরেই ভিড় জমে সাড়ে ৫ লাখ বই পড়ুয়ার। পাশাপাশি শহরের ১৫-মিনিট রিডিং সার্কেল প্রকল্পের আওতায় এখন আছে ৬,০২৬টি পাবলিক লাইব্রেরি ও পাঠকক্ষ। ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে ২২৮টি স্বয়ংক্রিয় বইঘর।

বড় আয়োজন ছাড়াও পুরনো বেইজিংয়ের হুতোংয়ের গলিগুলোয় ছড়িয়ে আছে ছোট ছোট বইয়ের দোকান। শহরের পড়ার আত্মাকে যেন বাঁচিয়ে রাখছে এরা।
ছাওমিয়ান হুতোংয়ের এমনই এক বইঘর ‘পসিবলি বুকস’। প্রতিষ্ঠা করেন চাও ছেন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে ২০২৩ সালে তিনি ফিরে আসেন নিজের শৈশবের মহল্লায় বই ও মানুষের সংস্পর্শে।

চাও বলেন, ‘হুতোং সংস্কৃতি বেশ সূক্ষ্ম ও টেকসই। এখানে পুরনো দেওয়ালের পরতে পরতে আছে বেইজিংয়ের ইতিহাস। মানুষে-মানুষে এক উষ্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এখানে, যা বহুতল ভবনে পাওয়া যায় না।’
তার বইঘরে আছে পাঠকদের জন্য ইন্টারঅ্যাকটিভ কর্নার। বই ও কবিতা নিয়ে ভাবনা লিখে রাখা যায় সেখানে। নিজের কিছু লাইনও রেখে যাওয়া যায় স্মৃতি হিসেবে।

দোকানের বাইরে চাও আয়োজন করেন ‘লাও শে সাহিত্যভ্রমণ’, যেখানে মানুষ ঘুরে দেখে লেখকের গল্পে উঠে আসা হুতোং, চায়ের দোকান ও ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো।
এক স্থানীয় বৃদ্ধাকে চাও জায়গা দিয়েছেন ডাম্পলিং স্টল পরিচালানোর জন্য। ‘খাবার নয়, এই স্টল আসলে উষ্ণতা ও মানবিকতার প্রতীক’ বললেন চাও।

বেইজিংয়ে এখন দুই হাজারেরও বেশি বইয়ের দোকান আছে। ২০১৬ সালে ছিল হাজারেরও কম। প্রতি ১০ হাজার বাসিন্দার জন্য বইঘর আছে প্রায় একটি। যা চীনে সর্বোচ্চ।

দোকানগুলোর বেশিরভাগই হুতোংয়ে। এর মধ্যে ওয়ানশেং বুকস্টোর বিশেষভাবে প্রিয় ওয়াং হেচেন নামের এক অর্থনীতিবিদের। ১৯৯৩ সালে সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রতিষ্ঠিত দোকানটি এখনও বই বিক্রি করে চলেছে।

সিআইটিআইসি প্রেসের সম্পাদক কং শিনশিন মনে করেন, ডিজিটাল যুগেও কাগজের বইয়ের মূল্য অমলিন।
তিনি বলেন, ‘একটি বই এমনভাবে জ্ঞান দেয়, যা অন্য মাধ্যম পারে না। এটি চিন্তাকে শাণিত করে, ধৈর্য শেখায়, গভীরভাবে ভাবতে উৎসাহ দেয়।’

সূত্র: ফয়সল-নাহার,চায়না ডেইলি।